মহামারীকালে ইইউর বাণিজ্যিক পরিবেশের ক্ষতি
2021-04-29 17:08:04

এপ্রিল ২৯: চীনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ পরিষদ তথা সিসিপিআইটির গবেষণা ইনস্টিটিউট গতকাল (বুধবার) ‘ইইউ বাণিজ্যিক পরিবেশ বিষয়ক প্রতিবেদন ২০২০/২০২১’ প্রকাশ করেছে।এতে বলা হয়, চীন ও ইইউ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৪৫তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে হাতে হাত রেখে মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মাধ্যমে দু’পক্ষের পারস্পরিক আস্থা জোরদার হচ্ছে। ফলে দু’পক্ষের সম্পর্কের অগ্রগতিতে অনেক সুফল অর্জিত হয়েছে এবং বিশ্বকে একটি ইতিবাচক বার্তা প্রদান করেছে। কিন্তু প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মহামারীকালে ইইউয়ের সংরক্ষণবাদ অনেক উন্নত হয়েছে। এটি চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ইইউর বাজারে অবাধ প্রবেশে একটি বাধা। এবং ইইউতে পুজিঁ বিনিয়োগকারী চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসে আঘাত হেনেছে। আজকে আমরা এ বিষয়ে কিছু খুজঁ-খবর নেব, কেমন?

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, সংরক্ষণবাদ মাথাচাড়া দেওয়ায় গত বছর ইইউর বাণিজ্যিক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মোট ২১.৩৪ শতাংশ গবেষণায় অংশগ্রহণকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান মনে করে, কোভিড-১৯ মহামারী দেখা দেওয়ার পর ইইউ সদস্য দেশসমূহের অর্থনৈতিক নীতি বিদেশি পুঁজির জন্য আরো বেশি বৈরি হয়েছে। ইইউয়ের বাণিজ্যিক পরিবেশ সামগ্রিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ইইউতে চীনা পুঁজি শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহ ভবিষ্যতের ইইউয়ের বাণিজ্যিক পরিবেশ নিয়ে আশাহত হয়েছে। 

সিসিপিআইটির গবেষণা ইনস্টিটিউটের উপপ্রধান চাও পিং জানান, সংরক্ষণবাদ ও মহামারীর কারণে ইইউ ও তার কতিপয় সদস্যদেশ বিদেশি পুঁজির প্রতি আরো বেশি পর্যালোচনা নীতি ও ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ফলে বিদেশি পুঁজির ইইউতে প্রবেশ আগের চেয়ে কঠিন হয়ে যায়। 

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০২০ সালে ইইউয়ের বিধিমালা প্রয়োগ করার সময় বিদেশি পুজিঁর প্রতি বৈষম্য আরো গুরুতর হয়। বিশেষ করে ৫জি খাতে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ মনে করে যে, নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা পর্যালোচনা খাতে চীনের ৫জি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রতি ইইউয়ের বৈরি মনোভাব রয়েছে।

ইইউতে সুষ্ঠু বাণিজ্যিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য প্রতিবেদনটিতে তিনটি প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে। 

চাও পিং বলেন, “প্রথমত, বিদেশি পুঁজি ইইউয়ের বাজারে প্রবেশের সংশ্লিষ্ট নীতি আরো শিথীল করা। যদি ইইউ এটা করে তাহলে ৪৮ আটচল্লিশ.৫৭ শতাংশের বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ইইউতে পুঁজি বিনিয়োগের পরিমান আরো বাড়াবে। দ্বিতীয়ত, ইইউ নতুন করে আর কোনো বাণিজ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা নেবে না। তৃতীয়ত, বিদেশি পুঁজি শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে ইইউ সত্যিকারের অর্থে ‘জাতীয় প্রতিষ্ঠানের’ মতো আচরণ করবে।” 

মহামারীর আঘাত সত্ত্বেও ২০২০ সালে চীন ও ইউরোপের বাণিজ্য উন্নত হয়েছে। ইইউর পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যে দেখা যায়, ২০২০ সালে প্রথমবারের মত চীন যুক্তরাষ্ট্রকে অতিক্রম করে ইইউয়ের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয়েছে। 

চাও পিং জানান, ভবিষ্যতে চীন ও ইউরোপের বাণিজ্যিক সহযোগিতার খাত অনেক ব্যাপক। তিনি বলেন, “প্রথমত, চীন ও ইউরোপ ডিজিটাল অর্থনীতির খাতে ভবিষ্যত সহযোগিতার জায়গা অনেক বড়। দ্বিতীয়ত, সবুজ অর্থনীতি খাতের সহযোগিতার উপর গুরুত্ব দেয়া উচিত। তৃতীয়ত, চীন ও ইউরোপ মালামাল পরিবহনে ট্রেনের খাতে সহযোগিতার ভবিষ্যত অনেক উজ্জ্বল।” 

 (আকাশ/এনাম/রুবি)