উৎপাদন করেও টিকা সংকটে ভারত, অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশ
2021-04-29 19:56:16

উৎপাদন করেও টিকা সংকটে ভারত, অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশ

ঢাকা, এপ্রিল ২৯

ভারতে করোনা পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করায় সেখানে বেড়েছে অভ্যন্তরীণ টিকার চাহিদা। চুক্তি থাকার পরও বাংলাদেশকে টিকা রপ্তানি করতে না পারায় তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশার। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারকে সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা নেয়ার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের। হাবিবুর রহমান অভির প্রতিবেদন।

কথা ছিলো চুক্তি অনুযায়ী ভারত থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ টিকা পাবে বাংলাদেশ। চলতি বছরের এপ্রিল মাস নাগাদ এ টিকার সবগুলো বুঝে পাওয়ার কথা। কিন্তু ফেব্রুয়ারির পর আর কোন টিকা সরবরাহ করতে পারেনি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। 

চুক্তির পর সিরাম ইন্সটিটিউট থেকে দু'টি চালানে এ পর্যন্ত ৭০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশ পেয়েছে গত জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে। আর ৩২ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে এসেছে। সব মিলিয়ে ১ কোটি ২ লাখ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ।

সরকারের কাছে ২২ লাখ ডোজ করোনা টিকা মজুদ আছে। প্রতিদিন এক লাখ করে দেয়া হলে, আর মাত্র তিন সপ্তাহ চলবে গণ টিকাদান কার্যক্রম।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মাশফি বিনতে শামস জানিয়েছেন, ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন বাংলাদেশকে টিকা রপ্তানিতে তাদের অপারগতার কথা জানিয়ে দিয়েছে। ব্যাপক সংক্রমণে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়ে যাওয়ার অজুহাতে ভারত জানায়, তাদের পক্ষে বাইরের কোন দেশকে আপাতত সেরামের তৈরি টিকা দেয়া সম্ভব না।

 

উৎপাদন করেও টিকা সংকটে ভারত, অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশ।_fororder_31

মাশফি বিনতে শামস, সচিব (পূর্ব) , পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ

 

পরিসংখ্যান বলছে, গেল কয়েক সপ্তাহে ভারতে নতুন করে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন তিন লাখ মানুষ। প্রতি ২৪ঘণ্টায় সেখানে মৃত্যু তিন হাজারের কাছাকাছি। অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করায়,  বাংলাদেশসহ যেসব দেশে টিকা রপ্তানির কথা ছিল সেরাম ইনস্টিটিউটের তা রক্ষা করতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। সংকট দেখা দিয়েছে টিকা' তৈরির কাঁচামালের।

উৎপাদন করেও টিকা সংকটে ভারত, অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশ।_fororder_32

ছবি: অধ্যাপক ডাঃ মোশতাক আহমেদ, ভাইরাস বিশেষজ্ঞ

 

ভাইরাস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ মোশতাক আহমেদ বিজ্ঞান-বিষয়ক সাময়িকী নেচারের গবেষণা তুলে ধরে জানান, যেসব দেশে করোনা মহামারি আকার ধারণ করেছে,  সেসব জায়গা থেকে এ ভাইরাস সহজে নির্মূল করা সম্ভব নয়। তাই নাগরিক সুরক্ষায় আরো সুদুরপ্রসারি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ তার।

এদিকে, আইইডিসিআরের উপদেষ্টা অধ্যাপক মুশতাক হোসেন বলেন বাংলাদেশ থেকে ভারতে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও জরুরী স্বাস্থ্য সেবাসহ আনঅফিসিয়াল যাতায়াত এখনো চলছে। তাই ভারতে করোনার যে নতুন ধরন তা বাংলাদেশে ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েই গেছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি কেন এত খারাপ হলো তা বিশ্লেষণ করেছেন অধ্যাপক মুশতাক হোসেন।

 

 

উৎপাদন করেও টিকা সংকটে ভারত, অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশ।_fororder_33

ছবি : অধ্যাপক মুশতাক হোসেন, উপদেষ্টা, আইইডিসিআর

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন , গেল কিছুদিন ধরে বাংলাদেশে শনাক্তের হার নিম্নমুখী হলেও মৃত্যু এখনো কমেনি। তাই পর্যাপ্ত টিকা মজুদ রাখতে সরকারকে তৎপর থাকার আহ্বান জানান তারা।