আজকের টপিক : বিশ্ব বই দিবস
2021-04-22 15:14:31

এপ্রিল ২২: ২৩ এপ্রিল বিশ্ব বই দিবস। এই দিবসের পুরো নাম হল ‘ওয়ার্ল্ড বুক অ্যান্ড কপিরাইট ডে’, এটি ‘বিশ্ব বই দিবস’ নামেও পরিচিত। বই দিবসের মূল ধারণাটি আন্তর্জাতিক প্রকাশক সমিতি প্রথম প্রকাশ করে। পরে স্পেন ইউনেস্কোতে বই দিবস পালনের প্রস্তাব করে। ১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর প্রতিবছরের ২৩ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিশ্ব বই দিবস’  হিসাবে মনোনীত হয়।

 

এই দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল আরও বেশি লোককে পড়তে এবং লিখতে উত্সাহিত করা। সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও চিন্তার ক্ষেত্রে যারা বড় অবদান রেখেছেন, তাদের জ্ঞানকে ধরে রাখার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে বই। প্রতিবছরের এই দিনে, বিশ্বের শতাধিক দেশে বিভিন্ন উদযাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই দিবস পালিত হয়।

 

চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি) প্রতিষ্ঠার ১০০তম বার্ষিকীর উদযাপন এবং ‘২৩ এপ্রিল ওয়ার্ল্ড বুক ডে’-কে স্বাগত জানাতে  ২৩ এপ্রিল চীনের জাতীয় গ্রন্থাগারে ধারাবাহিক উদযাপনী অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।

 

১৯৭২ সালে  ইউনেস্কো বিশ্বের কাছে ‘একটি পাঠকসমাজ গড়ে তোলার’ আহ্বান জানায়। আহ্বানে সমাজের সকল সদস্যের বই পড়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়। পাঠকে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ করে তোলার আহ্বান জানায় ইউনেস্কো।

১৯৯৫ সালে, আন্তর্জাতিক প্রকাশক সমিতির ‘বিশ্ব বই দিবস’ ধারণাটি সামনে রেখে, স্প্যানিশ সরকার ইউনেস্কোর কাছে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব জমা দেয়। পরে, রাশিয়া মনে করে যে, ‘বিশ্ব বই দিবস’-এর সাথে কপিরাইটের ধারণাটিও যুক্ত করা উচিত। স্পেন কাতালোনিয়ায় ‘সেন্ট জর্জ ডে’ দ্বারাও অনুপ্রাণিত হয়েছিল। লাইব্রেরি ম্যাগাজিন অনুসারে, ওয়ার্ল্ড বুক ডে-র সূচনা স্পেনের কাতালোনিয়ায় এক কিংবদন্তি থেকে হয়েছিল। কিংবদন্তিটি এমন: এক সুন্দর রাজকন্যা ড্রাগনের দ্বারা পাহাড়ে বন্দি ছিল। যোদ্ধা জর্জ একাই ড্রাগনকে পরাস্ত করে রাজকন্যাকে বাঁচিয়েছিলেন; রাজকন্যা জর্জকে উপহার দিয়েছিলেন  একটি বই। তখন থেকে বই সাহস এবং শক্তির প্রতীক হয়ে ওঠে। একসময় স্পেনে ২৩ এপ্রিল ‘সেন্ট জর্জ ডে’ হিসেবে পালন শুরু হয়। উত্সব চলাকালীন কাতালোনিয়ার বাসিন্দারা নিজেদের মধ্যে বই ও গোলাপ বিনিময় করে।

 

১৯৯৫ সালে ইউনেস্কো ২৩ এপ্রিলকে ‘বিশ্ব বই দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করে। ১৬১৬ সালের ২৩ এপ্রিল হচ্ছে  স্পেনের বিখ্যাত লেখক সার্ভেন্টেস, বিখ্যাত ব্রিটিশ লেখক শেক্সপিয়র এবং পেরুভিয়ান লেখক ইনকা গার্সাজারো দে লা ভেগার মৃত্যুবার্ষিকী। বিশ্ব বই দিবস ঘোষণার সঙ্গে এর যোগসূত্র আছে বলেও বলা হয়।     

‘বিশ্ব বই দিবস’ পালনের উদ্দেশ্য, বই পড়তে সবাইকে উত্সাহ দেওয়া। আবার পাশাপাশি, মেধাস্বত্ব রক্ষার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া।

প্রতিবছর বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি পালন করে। তবে চীনে এই দিনটি তেমনভাবে পালিত হয় না। গত দুই বছর ধরে কিছু কিছু প্রকাশনা সংস্থা এবং বইয়ের দোকান কিছু কার্যক্রমের মাধ্যমে দিবসটি পালন শুরু করেছে।

চীন ছাড়া, বিশ্বের অনেক দেশে এই দিবসটি পালিত হয়। ব্রিটেন, স্পেন, জাপান , দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, জ্যামাইকা, ফ্রান্স, কাতালোনিয়া, ইসরাইল প্রভৃতি।

প্রিয় শ্রোতা, বিশ্ব বই দিবসে আপনি কি ধরণের বই পড়তে চান? (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)