ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং
2021-04-20 14:50:45

 

এপ্রিল ২০: চীনের ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১১০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, চীনের প্রেসিডেন্ট ও কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান সি চিন পিং গতকাল (সোমবার) বিশ্ববিদ্যালয়টি  পরিদর্শন করেন। পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষে, তিনি ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানান।

প্রেসিডেন্ট সি জোর দিয়ে বলেন, শিক্ষাই একটি শতাব্দী পুরানো পরিকল্পনার ভিত্তি। এ বছর চীনা কমিউনিস্ট পার্ট (সিপিসি) প্রতিষ্ঠার ১০০তম বার্ষিকী। চীন সর্বাত্মকভাবে একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ হয়ে ওঠার নতুন যাত্রা শুরু করেছে। দল ও দেশের উন্নয়নের জন্য উচ্চশিক্ষা, বৈজ্ঞানিক জ্ঞান এবং অসামান্য মেধার প্রয়োজনীয়তা আগের চেয়ে বেশি। সরকার যে বিশ্ব-স্তরের বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে চায়, তা চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সমাজতন্ত্রের প্রথম শ্রেণির বিশ্ববিদ্যালয়। চীনের সমাজতান্ত্রিক শিক্ষা হ'ল সমাজতান্ত্রিক কারিগরদের এবং তাদের উত্তরসূরীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, যাদের নৈতিক, বৌদ্ধিক, শারীরিক, শৈল্পিক প্রতিভা রয়েছে। উচ্চশিক্ষা চীনা জাতির পুনরুজ্জীবনের একটি কৌশল।

সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে প্রেসিডেন্ট সি প্রথমে ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট কলেজ পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি বলেন,

“চারুকলা, শিল্প, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি একে অপরের পরিপূরক এবং একে অপরের প্রচারক। অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রে চারুকলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা উচিত।”

ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেজিং ও ইন্টেলিজেন্ট টেকনোলজি পরীক্ষাগার ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি মূলত কম্পিউটারভিত্তিক ইমেজিং, মস্তিষ্কের বিজ্ঞান এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গবেষণা করে। প্রেসিডেন্ট সি এখানে এসে বলেন, “আমাদের অবশ্যই আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে, আমাদের দিগন্তকে আরও প্রশস্ত করতে হবে, সামঞ্জস্য বজায় রাখতে হবে এবং চীনের শিক্ষাকে পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে হবে।”

ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভবনের দ্বিতীয় তলায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল শিক্ষা এবং গবেষণার সাফল্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। নবত্যাপ্রবর্তন বাড়ানো, মূল গবেষণা জোরদার করা, নতুন তত্ত্ব গড়ে তোলা এবং চীনা স্ববৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রস্তাব শোনেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি। তিনি কয়েকজন প্রবীণ অধ্যাপক এবং তরুণ ও মধ্যবয়সী শিক্ষকের সাথে কথা বলেন। গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় তাদেরকে ধন্যবাদ জানান প্রেসিডেন্ট সি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে নীতিবান মানুষ গড়ে তুলতে হবে, দেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার শিক্ষা দিতে হবে, উন্নয়নের ভিত্তি হিসাবে শৃঙ্খলাকে প্রমোট করতে হবে, এবং একটি শক্তিশালী চালিকাশক্তি হিসাবে সংস্কারকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে।

প্রেসিডেন্ট সি ক্রীড়াভবনও পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, ক্রীড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্বিত ঐতিহ্য। আশা করা যায় যে, শিক্ষার্থীরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্দান্ত লেখাপড়া ও ক্রীড়ার ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।  

সবশেষে প্রেসিডেন্ট সি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি বলেন, ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় জন্মগ্রহণ করেছিল তখন যখন দেশ ও জাতি সংকটে পড়েছিল। এটি বড় হয়েছে দেশ ও জাতির বড় হয়ে ওঠার সংগ্রামের মধ্যেই। দেশ ও জাতির নবজাগরণ দেখেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। বিগত ১১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে, ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় দেশে গভীরভাবে শিকড় গেড়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় দেশ, জাতি ও জনগণের জন্য বিপুলসংখ্যক প্রতিভাবান ব্যক্তি গড়ে তুলেছে। তাঁরা দেশের উন্নয়নে বিশিষ্ট অবদানও রেখেছেন। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)