‘বোআও এশীয় ফোরাম, ২০২১’-এর বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম দিনে দুটো গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্ট প্রকাশিত
2021-04-19 12:18:50

 

এপ্রিল ১৯: ‘বোআও এশিয়া ফোরাম, ২০২১’-এর বার্ষিক সম্মেলন গতকাল (রোববার) চীনের হাইনান প্রদেশে শুরু হয়েছে। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে: “বিশ্বের পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’-এর সুর সৃষ্টি করা”।

এদিন ফোরামে দুটো রিপোর্টে বলা হয়, এশীয় অর্থনীতি ২০২১ সালে পুনরুদ্ধার হতে পারে এবং প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬.৫ শতাংশের বেশি। আজকের ‘সংবাদ পর্যালোচনা’য় আমি এই বিষয়ে আলোচনা করবো।

দু’বছর পর বোআও এশীয় ফোরাম পুনরায় বৈশ্বিক দৃষ্টির আওতায় এসেছে। এর প্রথমদিনের প্রেস ব্রিফিংয়ে ‘অবিরাম উন্নয়নের এশিয়া ও বিশ্ব’ এবং ‘এশিয়ার অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও একীকরণ প্রক্রিয়া’ শীর্ষক দুটো গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। বোআও এশীয় ফোরামের ঐতিহ্যবাহী প্রধান রিপোর্ট হিসেবে এবারের ‘এশিয়ার অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও একীকরণ প্রক্রিয়া’ শীর্ষক রিপোর্টে বলা হয়, কোভিড-১৯ মহামারীর আঘাতে এশিয়ার দেশগুলোর অবস্থা স্পষ্টভাবেই বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে ভাল। ফোরামের মহাসচিব লি পাও তুং বলেন, মহামারী এশিয়ার অর্থনৈতিক শক্তির ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে কিছু অর্থনৈতিক সত্ত্বা কোভিড-১৯ টিকা ব্যাপকভাবে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে মহামারী কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণের সম্ভাবনাও জাগিয়েছে। এই সম্পর্কে তিনি বলেন

 

“বিশ্বে এশিয়ায় সবার আগে মহামারী স্থিতিশীল হয়েছে এবং উত্পাদনকাজ পুনরায় শুরু হয়েছে। তাই এ বছর এশিয়ার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি ত্বরান্বিত হবে এবং এর প্রবৃদ্ধি ৬.৫ শতাংশের বেশি হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, চীনের ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ প্রস্তাব ও ‘আসিয়ানের আন্তঃযোগাযোগ ও আন্তঃসংযোগের সামষ্টিক কার্যক্রম –২০২৫’ এবং ‘ইউরেশিয়ান অর্থনৈতিক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠাকাজসহ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক  আন্তঃযোগাযোগ ও আন্তঃসংযোগের  প্রস্তাবের মধ্যে শক্তিশালী সংযোগ মহামারী-উত্তর সময়পর্বে আঞ্চলিক আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা, অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ও উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

এ বছর বোআও এশীয় ফোরাম প্রতিষ্ঠার ২০তম বার্ষিকী। এবারের ফোরামে প্রথমবারের মতো অবিরাম উন্নয়নের ধারাবাহিক প্রধান রিপোর্ট --‘অবিরাম উন্নয়নের এশিয়া ও বিশ্ব’ প্রকাশিত হয়। এই রিপোর্টে চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান ও কাজাখস্তানসহ বেশ কয়েকটি এশীয় দেশের উন্নয়নক্ষমতা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুসারে, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো, সবুজ রূপান্তর ও ডিজিটাল বিভাজন এশিয়ার অর্থনীতির বর্তমান টেকসই পুনরুদ্ধারপ্রক্রিয়াকে সীমাবদ্ধ করে দেয়। এই সম্পর্কে মধ্য-এশিয়ার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ইনস্টিটিউটের সহ-সভাপতি লিয়াং চি ছিয়ান বলেন, স্বাস্থ্য খাতের সংকট দূর করার সঙ্গে টেকসই উন্নয়নের সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি। এই সম্পর্কে তিনি বলেন

 

“সবাই জানেন যে, অবিরাম উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা কেবল মধ্য-এশিয়া দেশুগুলোর নয়, বরং গোটা বিশ্বের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। অবিরাম প্রবৃদ্ধির নতুন উপায় খুঁজে বের করতে বিশ্বের চাই যৌথ উদ্যোগ। এই রিপোর্টে অবিরাম উন্নয়নের পথে চারটা সমস্যার কথা উল্লেখ করেছে। এগুলো হচ্ছে: স্বাস্থ্য খাতের সমস্যা, অবকাঠামো খাতের সমস্যা, সবুজ অর্থনীতিতে বিনিয়োগে ঘাটতি, ও ডিজিটাল খাতের সমস্যা। এগুলো সমাধান করা হচ্ছে অবিরাম উন্নয়নকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”

চীনে জাতিসংঘের সমন্বয়কারী সিদ্ধার্থ চ্যাটার্জি বলেন, প্রকাশিত এই দুটো রিপোর্ট বৈশ্বিক অর্থনীতির পুরুদ্ধারের গতি বাড়ানোর দিক্‌নির্দেশনা দিয়েছে। তিনি কোভিড-১৯ মহামারী ঠেকাতে চীনের প্রতিরোধক ব্যবস্থার ভূয়সী প্রশংসা করেন। এই সম্পর্কে তিনি বলেন

 

“বোআও এশীয় ফোরামে প্রকাশিত এই দুটো রিপোর্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ রিপোর্টগুলো বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি ত্বরান্বিত করতে আমাদেরকে সহায়তা করবে। এই সুযোগে আমি বলতে চাই যে, কোভিড-১৯ মহামারী ঠেকাতে চীনের প্রতিরোধক ব্যবস্থা ছিল প্রশংসনীয়। এই কার্যকর প্রতিরোধক ব্যবস্থাগুলোর কারণেই এবারের ফোরামও সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে।” (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)