সংবাদ পর্যালোচনা: জৈব-নিরাপত্তা আইন চীনের জৈব-নিরাপত্তায় কঠোর প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা তৈরি করেছে
2021-04-15 14:00:47

এপ্রিল ১৫: চীনের কমিউনিস্ট পার্টি বা সিপিসি’র অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসের পর থেকে সি চিন পিংকে কেন্দ্র করে সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটি জৈব-নিরাপত্তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে। জৈব-নিরাপত্তা জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা এবং জাতীয় জৈব-নিরাপত্তা বিষয়ক আইনগত ব্যবস্থা ও প্রাতিষ্ঠানিক গ্যারান্টি ব্যবস্থা গঠন দ্রুত করার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে।

 

আজ (বৃহস্পতিবার) চীনের ষষ্ঠ জাতীয় নিরাপত্তা শিক্ষা দিবস উপলক্ষ্যে জৈব-নিরাপত্তা আইন আনুষ্ঠানিকভাবে জারি করা হয়।

জৈব-নিরাপত্তার ক্ষেত্রে চীনের প্রথম মৌলিক আইন হিসেবে জৈব-নিরাপত্তা আইন বর্তমানে এ খাতে মহামারী প্রতিরোধ, বায়োটেকনোলজির উন্নয়ন, পরীক্ষাগারের নিরাপত্তা, মানুষের জিনগত সম্পদ ও জৈবিক সম্পদ সুরক্ষা, চীনের বাইরের থেকে প্রজাতির আক্রমণ ও জীববৈচিত্র্য, জীবাণু প্রতিরোধ, জৈব-সন্ত্রাসবাদের আক্রমণ এবং জৈবিক অস্ত্রের হুমকি— এ আটটি হুমকি মোকাবিলা করার সঙ্গে জড়িত। যা চীনের জৈব-নিরাপত্তা সুরক্ষার আইনগত নিশ্চয়তা দিয়েছে।

 

চীনের জাতীয় গণকংগ্রেসের সংবিধান ও আইন কমিটির উপপ্রধান ছোং বিন বলেন,

 ‘জৈব-নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট আইন ও নিয়মের ভিত্তিতে জৈব-নিরাপত্তা আইনে জৈব-নিরাপত্তার ঝুঁকি প্রতিরোধের অভিজ্ঞতা সংকলিত করা হয়েছে। আগের দুর্বলতা- বিশেষ করে নভেল করোনাভাইরাস মহামারী প্রতিরোধ প্রক্রিয়ায় দেখা দেওয়া সমস্যা সমাধানের জন্য এই আইনটি জারি করা হয়।’

 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সার্সের সংক্রমণ থেকে বার্ডফ্লু ও আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লু এবং কোভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাবে চীনের জৈব-নিরাপত্তা সার্বিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। চীনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও জ্বালানি আইনবিষয়ক গবেষণালয়ের প্রধান ইউ ওয়েন সুয়েন বলেন,

 

‘জৈব-নিরাপত্তা আইনে বলা হয়েছে, মহামারী পর্যবেক্ষণ নেট ও তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা জাতীয় জৈব-নিরাপত্তার হুমকি পর্যবেক্ষণের পূর্বসতর্কতা ব্যবস্থা গড়তে হবে। তা ছাড়া, মহামারী প্রতিরোধের পেশাগত সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের আইনগত দায়িত্ব সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। আইনটিতে জৈব-নিরাপত্তা আইনে প্রধান প্রাণী ও উদ্ভিদের মহামারী রোধের জন্য একটি যৌথ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা স্থাপন, মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নির্মাণ এবং মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করার কথা বলা হয়। এই বিধিগুলি মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ আইনি ভিত্তি সরবরাহ করেছে।’

 

চীনের বাইরের থেকে প্রজাতির আক্রমণ চীনের জৈব-নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বেশি আঘাত হানে। প্রাকৃতিক পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জারি করা ‘চীনের প্রাকৃতিক পরিবেশবিষক ইস্তাহার-২০১৯’ অনুসারে, চীনে ৬৬০টিরও বেশি বাইরে থেকে আসা আক্রমণাত্মক প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৭১টি প্রজাতি প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের জন্য ইতোমধ্যেই হুমকি সৃষ্টি করেছে বা সম্ভাব্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।

 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বায়োটেকনোলজির কারণে সৃষ্ট নৈতিক সমস্যাগুলো নিয়ে নিয়মিত বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে জৈব-নিরাপত্তা আইন স্পষ্টভাবে জানায় যে, জৈব-প্রযুক্তি গবেষণা, বিকাশ ও প্রয়োগের কাজে নৈতিক নীতিমালা মেনে চলতে হবে; নতুন বায়োমেডিকাল প্রযুক্তির বিষয়ে ক্লিনিকাল গবেষণায় নৈতিকতা রক্ষা করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট পদ্ধতিতে মেডিকেল প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হবে।

 

উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ আইনবিষয়ক গবেষণালয়ের প্রধান ছিন থিয়েন পাও মনে করেন,

 ‘নীতিশাস্ত্র নৈতিকতার সঙ্গে সম্পর্কিত। জৈব-প্রযুক্তি গবেষণা, বিকাশ এবং প্রয়োগমূলক কাজ চালালে সাধারণ নীতিশাস্ত্র ও নৈতিকতা রক্ষা করতে হবে। যেসব কাজ করা নিষেধ, আমরা সেসব কাজ করতে পারি না।

(লিলি/তৌহিদ/শুয়েই)