সংবাদ পর্যালোচনা: বারবার দেখলেও আবারও দেখার ইচ্ছা জাগে: হাইনানের প্রতি সি চিন পিংয়ের ভালোবাসা
2021-04-13 14:53:29

সংবাদ পর্যালোচনা: বারবার দেখলেও আবারও দেখার ইচ্ছা জাগে: হাইনানের প্রতি সি চিন পিংয়ের ভালোবাসা_fororder_xi1

সংবাদ পর্যালোচনা: বারবার দেখলেও আবারও দেখার ইচ্ছা জাগে: হাইনানের প্রতি সি চিন পিংয়ের ভালোবাসা_fororder_xi2

এপ্রিল ১৩: হাইনান প্রদেশ হচ্ছে চীনের একমাত্র প্রাদেশিক পর্যায়ের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং একে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের বৃহত্তম পরীক্ষার ক্ষেত্র বলা যায়। ২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল চীনের কমিউনিস্ট পার্টি বা সিপিসি’র সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং হাইনান প্রদেশ এবং হাইনান বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ৩০তম বার্ষিকীর সম্মেলনে ঘোষণা করেন যে, সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটি পুরো হাইনান দ্বীপে পরীক্ষামূলক অবাধ বাণিজ্যিক অঞ্চল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মাধ্যমে হাইনানের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হলো।

হাইনানে একটি লোকসংগীত আছে। ‘দীর্ঘ সময় পর আবার দেখা হয়, বারবার দেখলেও আবারও দেখার ইচ্ছা জাগে। আজ এখানে সব পুরানো ও নতুন বন্ধুদের পেয়ে আমি খুব খুশি।’

২০১৮ সাল ছিল চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি চালু হওয়ার ৪০তম বার্ষিকী। সে বছর ছিল হাইনান প্রদেশ ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের ৩০তম বার্ষিকী। সে বছরের বোআও এশীয় ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট সি হাইনানের লোকসংগীত দিয়ে অতিথিদের স্বাগত জানান।

১৯৭৯ সালে ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সি চিন পিং প্রথমবার হাইনান যান। তখন হাইনান ছিল কুয়াংতোং প্রদেশের অধীনে থাকা পিছিয়ে পড়া একটি সীমান্ত দ্বীপ। তবে পরবর্তী কয়েক দশকে হাইনান দ্বীপ চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের ক্ষেত্রে বহির্বিশ্ব পর্যবেক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ জানালা হয়ে উঠেছে। প্রেসিডেন্ট সি বলেন,

‘বলা যায়, হাইনান প্রদেশ সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের হাত ধরে জন্ম হয়, একই কারণে এর উত্থানও হয়। সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি চালু হওয়ার পর হাইনান তুলনামূলক একটি বন্ধ ও পশ্চাত্পদ সীমান্ত দ্বীপ থেকে উন্নত হয়ে চীনের সবচে উদার ও প্রাণবন্ত একটি অঞ্চলে পরিণত হয়। এমন একটি জায়গায় যে কোনো দেশের ভাবমূর্তির প্রতীক।’

হাইনানের উন্নয়নের ওপর সি চিন পিং বরাবরই গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। আরো প্রাণবন্ত ব্যবস্থা সৃষ্টি করা এবং আরো উন্মুক্ত পরিস্থিতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে হাইনানকে উত্সাহ দেন তিনি।

তিনি বলেন, সবুজ পাহাড় ও নদী এবং নীল আকাশ হলো হাইনানে আন্তর্জাতিক পর্যটন দ্বীপ গড়ে তোলার সবচে শক্তিশালী সুবিধা, তাই এর মূল্য অনেক বেশি।

২০১৮ সালে হাইনান প্রদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ৩০তম বার্ষিকীতে সি চিন পিং ঘোষণা করেন যে,

 ‘সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটি পুরো হাইনান দ্বীপে পরীক্ষামূলক অবাধ বাণিজ্যিক অঞ্চল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হাইনানে চীনের বৈশিষ্ট্যময় অবাধ বাণিজ্যিক বন্দরের নির্মাণ এগিয়ে নেওয়া হবে এবং পর্যায়ক্রমে অবাধ বাণিজ্যিক বন্দর নির্মাণের নীতি ও ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় পরিস্থিতি বিবেচনা করে গভীর আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যা চীনের বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণ ও অর্থনীতির বিশ্বায়ন এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’

অবাধ বাণিজ্যিক বন্দর হলো বর্তমান বিশ্বের সর্বোচ্চ মানের উন্মুক্ত ফর্ম। সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং নিজ উদ্যোগে হাইনান অবাধ বাণিজ্যিক বন্দর নির্মাণের কাজ বণ্টন করেছেন এবং তা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

২০২০ সালের জুন মাসে হাইনানের অবাধ বাণিজ্যিক বন্দর নির্মাণের সময় সি চিন পিং গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, ব্যবস্থা নবায়নকে গুরুত্ব দিয়ে চিন্তাধারা উন্মুক্ত করা এবং সাহসের সঙ্গে নব্যতাপ্রবর্তন করা উচিত্।

বর্তমানে গোটা বিশ্বে শত বছরের মধ্যে অভূতপূর্ব পরিবর্তন ঘটেছে। চীনা জাতির পুনরুত্থানের মহান গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রয়েছে চীন। ২০২০ সালের অক্টোবরে চীনের শেনচেন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ৪০তম বার্ষিকীতে সি চিন পিং বলেন, নতুন যুগে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের উন্নত চিন্তাধারায় অটুট থাকা এবং আরো উচ্চ মানের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ এগিয়ে নেওয়া উচিত্।

তিনি বলেন,

‘বর্তমানে সংস্কার নতুন একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে পৌঁছে গেছে। তাই আরো বেশি সাহস ও বুদ্ধি দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাতের সংস্কার গভীর করা এবং সংস্কারের সার্বিক কার্যকারিতা বাড়ানো উচিত্।’

হাইনানের নির্মাণকারীদেরকে সি চিন পিং বলেন, ‘সবসময় মনে রাখবেন যে, কেবল আমার ওপর নির্ভর করে সাফল্য অর্জন করা যায় না, তবে সাফল্যের সঙ্গে নিঃসন্দেহে আমার অস্তিত্ব আছে।’ হাইনান দ্বীপের উন্নয়নের সঙ্গে সি চিন পিংয়ের গল্প অব্যাহতভাবে এগিয়ে যাবে।

(লিলি/তৌহিদ/শুয়েই)