শানদং প্রদেশের সবজির জন্মস্থান বলে পরিচিত শৌগুয়াংয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা কর্মীরা কাজ করেন। তারা এবার বসন্ত উত্সবের ছুটিতে নিজেদের জন্মস্থানে যাচ্ছেন না। তাঁরা কর্মস্থলেই বসন্ত উত্সব কাটাবেন। জিয়াংসু প্রদেশের নানথংয়ের ছাও চু ছিং হলেন তাঁদের একজন। তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বসন্ত উত্সব কাটাবেন না। তাহলে তিনি কিভাবে ছুটি কাটাবেন? আসুন জেনে নিই।
ভোর তিনটায় এলার্ম ক্লকের চিত্কার ঠান্ডা শীতের নীরবতা ভেঙ্গে দিয়েছে। এরপর শৌগুয়াংয়ের থিয়ানলিউচেন’র কৃষি আধুনিক শিল্প ক্ষেত্রের একটি সবজির গ্রীনহাউসের লাইট জ্বলে ওঠে। লাইটের আলোয় শীতকালের ঠান্ডা কিছুটা কম হয়। ৫৮ বছর বয়সী ছাও চু ছিং ঘুম থেকে ওঠেন। তিনি নিজের গ্রীণহাউস দেখার পর বাইসাইকেলে তাঁর ছেলের অন্য একটি গ্রীণহাউসে যান।
ছাও হলেন জিয়াংসু প্রদেশের নানথংয়ের ছুথাংয়ের মানুষ। ২০১৯ সালে তাঁর পরিবার শৌগুয়াংয়ে তিনটি গ্রীণহাউস ভাড়া করেন। গ্রীণহাউস ভাড়া করার পর তাঁরা সেখানে বসবাস শুরু করেন। প্রতিদিন ভোর প্রায় চারটায় তাঁরা কৃষিকাজ শুরু করেন। বসন্ত উত্সবের সময় তাঁরা নিজেদের সবজি বেশি বিক্রয় হবে বলে আশা করেন। ছাও ও তাঁর ছেলে’র একদিনের কাজ হলো তিনটি গ্রীণহাউসের সকল ফসল বাছাই করা।
‘আমাদের ফসল উত্পাদনের পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন ফসল হয় ১৫০ কেজিরও বেশি। বসন্ত উত্সবের সময় প্রতিদিন ৫০০ কেজি হবে। বর্তমানে প্রতি আধা কেজি সবজির দাম প্রায় ১০ ইউয়ান আরএমবি।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের ফসল অনেক ভাল। কিন্তু প্রথম দিকে এতো ভাল ছিল না।’
“গ্রীণহাউস ভাড়ার প্রথম বছরে আমাদের কোনো প্রযুক্তি ছিল না। এ ছাড়াও আমাদের থাকার ব্যবস্থাও ছিল খারাপ। সেজন্য আমাদের উত্পাদিত ফসলের পরিমাণ কম ছিল। সে বছরে আমাদের এক লাখ ইউয়ানেরও বেশি ক্ষতি হয়। আমরা একটি বড় আঘাত পাই। তখন থেকে আমরা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাষ করার অভিজ্ঞতা শিক্ষা শুরু করি। আস্তে আস্তে আমরা গ্রীণহাউসে চাষ করার প্রযুক্তি শিখেছি।” তিনি বললেন।
এদিন তিনটি গ্রীণহাউসের ফসল বাছাই করার পর সকাল সাড়ে এগারোটা হয়েছে। ছেলে ছাও শান ছুন পিতা-মাতা’র গ্রীণহাউসে এসেছেন। গ্রীণহাউসে মা লাঞ্চ রান্না শেষ করেছেন।
যদিও গ্রীণহাউসে তাঁদের বাড়ি খুবই সাদামাটা, তবুও টেবিলে রাখা বিভিন্ন ডিশের সুগন্ধ সহজেই নাকে আসে।
ছাও শান ছুন বলেন, তাঁরা নিজেদের চাষ করা সবজি খেয়ে থাকেন। এ বছর তাঁরা প্রথমবারের মতো নিজেদের জন্মস্থানের বাইরে বসন্ত উত্সব কাটাবেন। মার রান্না করা খাবার জন্মস্থানের স্বাদ ও বসন্ত উত্সবের স্বাদ এনে দেবে। তিনি বলেন,
“এ বছরের বসন্ত উত্সবে আমরা জন্মস্থানে ফিরে যাবো না। আমরা জন্মস্থানকে মিস করি। আমাদের আত্মীয়-স্বজনরা আমাদেরকে জন্মস্থানের খাবার পাঠিয়েছেন। আমরা এখানে জন্মস্থানের খাবার খেতে পারি, অনেক আনন্দ লাগে।”
ছাও শান ছুন বলেন, চলতি বছর বিশেষ অবস্থায় তারা এখানে বসন্ত উত্সব কাটাবেন। পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে উত্সব কাটালে বেশি আনন্দ লাগে। তিনি বলেন,
“আমরাও আত্মীয়-স্বজনদেরকে নিজেদের চাষ করা সবজি পাঠিয়েছি। শিশুরা তা খেতে পছন্দ করে।
ছাও বলেন, ভবিষ্যতে তিনি নিজের জন্মস্থানে ফিরে যেতে চান। তিনি এখানকার উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে নিজের জন্মস্থানে ফিরে যেতে চান।