সম্প্রতি বিবিসি সিনচিয়াংয়ের বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের স্বাভাবিক জীবন-যাপনের দৃশ্যকে উল্টা-পাল্টা করে সেখানে চীনের সহায়তার নীতিকে বাধ্যতামূলক নীতি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। একটি ভিডিওতে সিনচিয়াংয়ের এক সাহায্যকারী কর্মীকে বলতে দেখা যায় যে, ‘তারা আপনার জন্য যাতায়াতের টিকিট কিনবেন।’ কিন্তু বিবিসি ওই ভিডিও দৃশ্যের ব্যাখ্যা করে যে, ‘সিনচিয়াংয়ের সাহায্যকারী কর্মীর বাধ্যতামূলক কথাবার্তায় সে তরুণী অবশেষে কাজ করতে অন্য প্রদেশে যেতে রাজি হয়।’ চীন সরকারের সিনচিয়াং নীতি বাধ্যতামূলক বলে মন্তব্য করে বিবিসি। চীনে একটি প্রবাদ আছে যে, জনগণের চোখ উজ্জ্বল। তার মানে মিথ্যাচার জনগণকে ঠকাতে পারবে না। বিবিসির এমন মিথ্যাচার খণ্ডন করেছেন অনেকে বিদেশী, যারা চীনা ভাষা জানেন। বিবিসি মিথ্যাচার করেছে বলে তারা অভিযোগ করেন।
বিবিসিসহ পশ্চিমা দেশগুলোর মিথ্যাচার প্রচারের তত্পরতা বেড়েই চলছে। বর্তমানে কয়েকটি পশ্চিমা দেশ চীনের সিনচিয়াংয়ের তুলাশিল্প নিয়ে মিথ্যাচারে লিপ্ত আছে। দেশগুলোর কোনো কোনো রাজনীতিবিদ সিনচিয়াংয়ের তুলাশিল্পে ‘বাধ্যতামূলক শ্রম’ রয়েছে বলে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন এবং সবাইকে সিনচিয়াংয়ে উত্পাদিত তুলা না-কেনার আহ্বান জানাচ্ছেন। প্রকৃত প্রস্তাবে এটি পাশ্চাত্য দেশগুলোর অনেক মিথ্যার একটি বৈ আর কিছুই নয়।
বিসিআই নামের একটি সংস্থা এ মিথ্যা খুব বেশি বেশি প্রচার করছে। বিসিআই দৃশ্যত একটি বেসরকারি সংস্থা। আসলে এর পিছনে বিনিয়োগ করছে মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ব্যুরো। অথচ ব্যুরোর শাংহাই অফিসের তদন্ত অনুযায়ী, সিনচিয়াংয়ে বাধ্যতামূলক শ্রমের কোনো অস্তিত্ব নেই। কিন্তু ব্যুরো চীনবিরোধী থিঙ্কট্যাংক ‘অস্ট্রেলিয়ার কৌশল ও নীতি গবেষণালয়’ থেকে প্রকাশিত মিথ্যা প্রতিবেদন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রকৃত সত্য হচ্ছে, সিনচিয়াংয়ে তুলাশিল্পে যন্ত্রের ব্যবহার অনেক বেড়েছে। এ শিল্পে বিপুল সংখ্যায় শ্রমিক দরকার হয় না। পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২০ সালে সিনচিয়াংয়ের তুলাশিল্পে যন্ত্রের ব্যবহার ছিল ৭০ শতাংশেরও বেশি। বাকি ৩০ শতাংশের জন্য শ্রমিকদের ওপর নির্ভর করতে হয়। এ ছাড়া, সিনচিয়াংয়ের তুলাশিল্প বর্তমানে ‘অনলাইন প্লাস’ যুগে প্রবেশ করেছে। তুলা উত্পাদনকারীরা এখন ই-কমার্সের মাধ্যমে নিজেদের পণ্য বিক্রয় করতে পারেন।
তুলাশিল্প হলো সিনচিয়াংয়ের মূল শিল্প। তুলাশিল্প স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়নের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ও তাঁদের আয়ের প্রধান উত্স। কিন্তু পাশ্চাত্যের দেশগুলোর কোনো কোনো রাজনীতিবিদ আন্তর্জাতিক সরবরাহ-চেইন থেকে সিনচিয়াংয়ের তুলাকে বাদ দিতে আগ্রহী। এর মাধ্যমে কি মানবাধিকার সুরক্ষা পাবে?
সিনচিয়াংয়ের তুলাশিল্পের এক কৃষক বলেন, “আমরা নিজের জমিতে চাষ করি, নিজের তুলা তুলে নেই এবং নিজে আয় করি। তাহলে জবরদস্তি শ্রমের কথা কীভাবে এলো? এর আগে আমরা
শ্রমিক নিয়োগ করতাম। সে সময় তারা দুমাসে ১০ হাজার ইউয়ান আয় করতে পারতেন। অনেকে নিজের ইচ্ছায় ছুটে আসতেন। তার মানে কি জবরদস্তি শ্রম? সিনচিয়াংয়ের তুলার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা মানে স্থানীয় বাসিন্দাদের আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলা। এতে অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে যেতে পারেন।”
রুবি/এনাম