‘গাড়িঘোড়া সব চলে, গরীব মারার লকডাউন’ আজহার লিমন
2021-04-09 13:33:12

‘গাড়িঘোড়া সব চলে, গরীব মারার লকডাউন’ আজহার লিমন_fororder_s2

লকডাউনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে যখন আমি মোহাম্মদপুরে। তখন এলাকার রিং রোডে কাজের খোঁজে থাকা মানুষের একটা বড় জটলা দেখতে পেলাম। প্রান্তিক এসব মানুষেরা নির্মাণের কাজ যেটাকে বলা হচ্ছে রাজমিস্ত্রীর সহযোগী, মাটি কাটা কিংবা গৃহস্থালির বিভিন্ন কাজ করে থাকেন। জানতে চেয়েছিলাম, লক ডাউনে কেমন আছেন তারা?

এ ভীড়ে উপস্থিত রাজীব নামের একজন বললেন,  “লকডাউনে তো সমস্যা নেই, কয়টা খেতে দিতো, ঘরে বসে থাকতাম। বাড়িওয়ালা ভাড়া চায়, কী করবো বলেন। এর আগে তো রিক্সা চালিয়ে বাকি পরা ভাড়া পরিশোধ করেছিলাম।”

‘গাড়িঘোড়া সব চলে, গরীব মারার লকডাউন’ আজহার লিমন_fororder_s3

 

এই লকডাউনে ভালো নেই রিক্সা, অটোরিক্সা বা সিএনজি চালকদের মত নিম্ন আয়ের মানুষেরাও। ঢাকার একটি সড়কে লকডাউনের তৃতীয় দিনে যাত্রীর অপেক্ষায় প্রায় ঘন্টাব্যাপী অপেক্ষা সিএনজি চালক আব্দুর রশিদের। রিক্সাচালক মোজাম্মেল বলছিলেন, লকডাউনে তিনি ঢাকায় থাকলেও পুরো পরিবার দিনাজপুরে। তাদেরও প্রয়োজন অর্থের।

 

অভাব অনটনের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাসের বস্তিগুলোতে প্রায়ই শোনা যাচ্ছে পারিবারিক কলহ, ঝগড়া। প্রান্তিক এসব মানুষেরা বলছেন, এতো এতো প্রতিশ্রতির কথা তারা শোনেন নানাভাবে, কিন্তু বাস্তবে সহযোগিতা পান খুব কমই। বস্তির এক বাসিন্দা বলছিলেন, “কেন ঝগড়া লাগবে না বলেন। হাতে টাকা পয়সা না থাকলেই তো ঝগড়া হয়।”

 

কিন্তু এত কিছুর পরও প্রান্তিক এসব মানুষের স্বাস্থ্য বিধি মানা, কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মানানোর তেমন কোন উদ্যোগ চোখে পড়ে না শহরের অলিতে গলিতে। ফলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের মত নানা পদক্ষেপের মাঝেও একদিকে করোনা ঝুঁকি অপরদিকে জীবিকার জন্য সংগ্রাম, এসব উভয় সংকট, খেটে খাওয়া মানুষের দৈনন্দিন সংকট আরও গভীর করছে, তা বলাই যায়।