চীনের চলচ্চিত্র: থার্টিন ফ্লাওয়ার্স অব নানচিং
2021-04-09 19:09:53

চীনের চলচ্চিত্র: থার্টিন ফ্লাওয়ার্স অব নানচিং_fororder_w2

দিনটি ছিল ১৩ই ডিসেম্বর ১৯৩৭। সবাই সেদিন প্রাণভয়ে ছোটাছুটি করছিল,কিন্তু কেউই সেই কুয়াশার চাদর ভেদ করে পালাতে পারেনি নাৎসি বাহিনির কাছ থেকে।

নানচিং এর তখন ক্ষমতা ছিল না যুদ্ধ করার মত, ছিল না পর্যাপ্ত অস্ত্র- ট্যাঙ্ক ধ্বংস করার মত। তাই তারা প্রাচীণ যুদ্ধকৌশল অবলম্বন করেছে, মানবঢাল বানিয়ে মোকাবেলা করেছে জাপানী ট্যাঙ্কের। তবুও তারা নিজের দেশকে এভাবে হারাতে দিতে চায়নি। সবকিছু পেছনে ফেলে তারা যুদ্ধ করেছে, নিজের জীবনের বিনিময়েও একটি জীবন রক্ষা করার।

উইনচেস্টার কেথেড্রালের শিক্ষার্থীদের শহর থেকে পালানোর কোন সুযোগ ছিল না। গির্জায় ফাদার ইঙ্গলম্যান জাপানিদের বোমার আঘাতে নিহত হন। ফলে তাদের দেখাশুনার জন্য ছিল অনাথ কিশোর জর্জ। শহরের কিছু পতিতাও আশ্রয় নেয় এই গির্জায়।

জন মিলার দাফন করার কাজে নিযুক্ত একজন আমেরিকান। ফাদার ইঙ্গলম্যানকে দাফন করতে এসে আটকে যান গির্জায়। বাচ্চাদের অবর্ণনীয় বিপদের মুখে এবং পতিতাদের রক্ষার্থে পুরোহিতের পোশাক পরে গির্জায় ফাদার সেজে দায়িত্ব নেন তাদের ।

এদিকে চীনা মেজর লি’র পুরো বাহিনী শহীদ হয় জাপানিদের হাতে। তার সাথে ছিল আহত অনাথ শিশু পুং সেং। তিনি পুং কে রেখে যান গির্জায়।

কিছুদিন পর, জাপানি সেনাবাহিনীর বিজয় উদযাপনে স্কুল ছাত্রীদের জন্য একটি আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ নিয়ে আসেন কর্নেল হাসেগাওয়া। স্কুলছাত্রীদের সুরক্ষার জন্য অস্বীকৃতি জানায় মিলার। হাসেগওয়া তাকে জানিয়ে দেয় যে এটি উপর মহলের আদেশ। স্কুল ছাত্রীদের গণনা করে পরের দিন এই ১৩ জনকে তুলে নেওয়া হবে বলে জানায় তারা।

পতিতাদের নেত্রী ইয়াও মো সবাইকে রাজি করান শিক্ষার্থীদের পরিবর্তে নিজেদের সেই অনুষ্ঠানে যাওয়ার। কিন্তু তারা তো ১২ জন। বাকি একজন কে হবে?

কিশোর জর্জ সিদ্ধান্ত নেয় মেয়ে সেজে সেই অনুষ্ঠানে যাওয়ার।

পরের দিন জাপানি সৈন্যরা তুলে নিয়ে যায় সেই ১৩ জন কে। তারা চলে যাওয়ার পরে, গির্জায় মেরামত করা ট্রাকের উপরে স্কুল ছাত্রীদের নিয়ে বেরিয়ে পরেন মিলার। এক স্কুলছাত্রীর বাবার দেওয়া অনুমতিপত্র ব্যবহার করে চলে যান নানচিংয়ের বাইরে। সেই ১৩টি ফুলের ভাগ্য আর জানা যায়নি কারো। হয়ত তারা শহীদ হয়েছে স্কুল ছাত্রীদের স্বাধীনতার জন্য। যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ, সীমাহীন নিষ্ঠুরতার মধ্যে মানবিক একটি শক্তিশালী গল্পের সিনেমা The Flowers of War।

গো লিং ইয়ানের উপন্যাস '13 Flowers of Nanjing' 'অবলম্বনে নির্মিত এই সিনেমা ১৯৩৭ সালে নানচিংয়ের গণহত্যা উপর নির্মিত। 

টুইচ ফিল্ম এটিকে একটি সার্থক সিনেমা হিসেবে সঙ্গায়িত করেছে। গতিময় যুদ্ধের দৃশ্য থেকে শুরু করে সুন্দর সিনেমাটোগ্রাফি এবং অনভিজ্ঞ তরুণ অভিনেতা- অভিনেত্রীর অসাধারণ অভিনয়ের আপনাকে মুগ্ধ করবে।

চীনের ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল সিনেমাটি আপনাকে নিয়ে যাবে ২য় বিশ্বযুদ্ধের সেই ভয়াবহ সময়ে। আপনি চাইলে বাংলা সাবটাইটেল সহ উপভোগ করতে পারেন সিনেমাটি।