বন্ধুরা, বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ মহামারী ছড়িয়ে পড়ার অবস্থায় চীন প্রথমে মহামারীতে নিয়ন্ত্রণ এসেছে এবং কাজ ও উত্পাদন পনুরদ্ধার হয়েছে। প্রথমে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি পেয়েছে চীন।
২০২০ সালে চীন সার্বিকভাবে দারিদ্র্যবিমোচন বাস্তবায়ন করেছে। আগাম ১০ বছর ‘জাতিসংঘ ২০৩০ সাল টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা’-এর দারিদ্র হ্রাসর লক্ষ্য বাস্তবায়ন করেছে চীন। গত ২৩ নভেম্বর চীনের নিবন্ধিত ৮৩২টি দরিদ্র জেলা সমন্ত দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হয়েছে। ৮ বছরের প্রচেষ্টায় চীন সময় মত নতুন যুগে দারিদ্র্যবিমোচনের দায়িত্ব পালন করেছে।
চীনের নির্মূল দারিদ্রবিমোচনের ধারণা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দলিলসমূহে লেখা হয়। জাতিসংঘের মহাসজিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, চীন হলো দারিদ্র্য হ্রাসের ক্ষেত্রে বিশ্ব রেকর্ডধারক।
নব্যতাপ্রবর্তন ও কাঠামো উন্নয়ন হলো চীনের জিডিপি ১০০ট্রিলিয়ন ইউয়ানের ছাড়িয়ে যাওয়ার কারণের দু’টি।
ছাংএ্য-৫ সফলভাবে চাঁদে অবতরণ করে নমুনা সংগ্রহ এবং পৃথীবিতে ফিরে এসেছে। ‘থিয়ানওয়েন-১’ মার্স অনুসন্ধাযান সফলভাবে উত্ক্ষেপিত হয়েছে। ‘পেইতৌ-৩’ বিশ্বজুড়ে জিপিএস ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে। কোয়ান্টাম কম্পিউটার ‘জিউচাং’ ইত্যাদি।
যদিও মহামারী ছড়িয়ে পড়ে, তবুও চীন নব্যতাপ্রবর্তন উন্নয়ন করতে থাকে। আমরা দৃঢ়ভাবে নতুন উন্নয়নের ধারণা বজায় রাখবো, উচ্চ মানের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবো, যাতে অর্থনীতি বৃদ্ধির মান ও যোগ্যতা স্থিতিশীলভাবে উন্নীত করা যাবে। চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক নিং জি চে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, চীনের সামাজিক উত্পাদিত শক্তি একটি নতুন মানে উঠে গেছে।
জিডিপি ১০০ট্রিলিয়নের ছাড়িয়ে গেছে, মানে চীনের বিস্তৃত জাতীয় শক্তি অব্যাহতভাবে উন্নীত হচ্ছে।
২০২০ সালে চীনের খাদ্যশস্য উত্পাদিত পরিমাণ ইতিহাসিক রেকর্ড সৃষ্ট হয়। চীনের খাদ্যশস্য উত্পাদিত পরিমাণ টানা ৬ বছরে ১.৩ ট্রিলিয়ন ইউয়ানের ছাড়িয়ে গেছে। তা বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে। উত্পাদিত শিল্প বৃদ্ধির মূল টানা ১১ বছরে বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে। দ্রুতগতি রেলপথের দীর্ঘ ৩৮হাজার কিলোমিটার, দ্রুতগতি সড়কের দীর্ঘ ১.৫৫ লাখ কিলোমিটারের ছাড়িয়ে গেছে। ৫জি টার্মিনাল সংযোগের সংখ্যা ২০কোটিরও বেশি হয়েছে, তা বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে।
কাঠামোমূলক উন্নীত হলো জিডিপি ১০০ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়ে পড়ার আরেকটি কারণ।
২০২০ সালে চীনের তৃতীয় শিল্প বৃদ্ধির মূল মোট জিডিপি’র ৫৪.৫ শতাংশ। তা ২০১৯ সালের চেয়ে ০.২ শতাংশ বেশি। চূড়ান্ত ভোগের সংখ্যা জিডিপি’র ৫৪.৩ শতাংশ ছিল।
সবুজ উন্নয়ন হলো জিডিপি ১০০ট্রিলিয়ান ইউয়ানের ছাড়িয়ে যাওয়ার ভিত্তি।
২০২০ সালে চীনের জিডিপির প্রতি ইউনিট জ্বালানি খরচ হ্রাস পেয়েছে। পরিশ্কার জ্বালানী খরচ মোট জ্বালানি খরচের হার ২০১৯ সালের চেয়ে ১ শতাংশ বেশি ছিল। ২০২০ সালে সমস্ত চীনের ৩৩৭টি শহরের ভাল বায়ু মানের দিনের হার বছরের ৮৭ শতাংশ ছিল। তা ২০১৯ সালের চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি।
চীনের জিডিপি ১০০ ট্রিলিয়ান ইউয়ানের ছাড়িয়ে গিয়ে বিশ্বের অর্থনীতিতে আরো বেশি ইতিবাচক শক্তি এনে দেয়।
২০২০ সালের ১৫ নভেম্বরে ৮ বছর আলোচনার মাধ্যমে ‘আঞ্চলিক সার্বিক অর্থনৈতিক অংশীদারি সম্পর্ক চুক্তি’ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তিতে ১৫টি সদস্য দেশ অন্তর্ভুক্ত হয়। এ ১৫টি সদস্য দেশের জনসংখ্যা, অর্থনীতির পরিমাণ ও বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় গোটা বিশ্বের ৩০ শতাংশ। এটি হলো বিশ্বের বৃহত্তম অবাধ বাণিজ্যিক অঞ্চল।
মহামারীর অবস্থায় বিশ্বের অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছে। চীন একতরফা উন্নয়ন করে না, কিন্তু দেশীয় বাজার কেন্দ্র করে বিদেশী বাণিজ্য উভেয় উন্নয়নের নতুন কাঠামো গড়ে তুলেছে।
চীনা পণ্যের অন্তঃদেশীয় পরিবহন স্থিতিশীল থেকে স্থিতিশীলরত। ২০২০ সালে চীন-ইউরোপ রেলপথে চালু হয়েছিল ট্রেন মোট ১২.৪ হাজারটি। তা ২০১৯ সালের চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি। এতে ইউরোপের ২১টি দেশের ৯৭টি শহর অন্তর্ভুক্ত হয়।
চীনে বিনিয়োগের শর্ত আরো হ্রাস হয়েছে। ২০২০ সালের বিদেশী বিনিয়োগ অ্যাক্সেস নেতিবাচক তালিকায় পরিষেবা, উত্পাদন ও কৃষ শিল্প উন্মুক্তকরণের মান উন্নীত হয়েছে। জাতীঁ ও অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলগুলিতে নেতিবাচক তালিকা হ্রাসের হার যথাক্রমে ১৭.৫ এবং ১৮.৯ শতাংশে পৌঁছেছে।
২০২০ সালে চীনা পণ্য আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ ইতিহাসের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করে। তা ২০১৯ সালের চেয়ে ১.৯ শতাংশ বেশি।