রোববারের আলাপন-ষাটোর্ধ এক প্রতিবন্ধী আইস স্কেটিং প্রেমীর গল্প
2021-04-02 21:26:14

আকাশ: সুপ্রিয় শ্রোতা, সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে। আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের সাপ্তাহিক আয়োজন ‘রোববারের আলাপন’। আপনাদের সঙ্গে আছি এনাম এবং আকাশ।

আকাশ: বন্ধুরা, আমরা সম্প্রতি বেইজিং শীতকালীন অলিম্পকি গেমস সম্পর্কে একাধিক অনুষ্ঠান করেছি। আজ আমরা শীতকালীন খেলাধুলা সম্পর্কে একটি গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করব, কেমন?

ইনার মঙ্গোলিয়ার তা সি আন লিং বনাঞ্চল শীতকালে চীনের সবচেয়ে ঠান্ডা এলাকা হিসেবে পরিচিত। সেখানকার তাপমাত্রা তখন -৪০-এ গিয়ে ঠেকে। কিন্তু সেখানে একজন কিংবদন্তী দাদা আছেন। তাঁর গল্প শুনলে শরীরের রক্ত গরম হয়। 

তাঁর নাম হচ্ছে ওয়াং ছুয়ান লি। এ বছরে তাঁর বয়স পঁয়ষট্টি ৬৫ হয়েছে। ইয়া কে শহরের খেলাধুলার মাঠে তাঁকে আইস স্কেটিং করতে দেখা যায়। স্থানীয় কোচ বলেন, প্রবীণ আইস স্কেটিং প্রেমীদের মধ্যে তাঁর কৌশলগত স্থান অনেক উচুতে। কিন্তু কেউ দেখে বুঝতে পারবে না যে, তিনি একজন প্রতিবন্ধী। তাঁর দুটি পা কেটে ফেলে দেওয়া হয়েছে। 

প্রায় ৩৫ পঁয়ত্রিশ বছরের আগে একটি দূর্ঘটনায়  ওয়াং দুটি পা ও হাতের তিনটি আঙ্গুল হারান। তিনি হাসপাতালে চিকিতসাধীন ছিলেন আড়াই বছর। তারপর বসায় ফিরে বিছানায় কাটান আরও এক বছর। 

তিনি ও দুঃসময়কে স্মরণ করে বলেন, “ তখন আত্মহত্যা করতেও চেয়েছিলাম। দুর্ঘটনা ঘটার ৫ বছর পর তিনি বুঝতে পারেন যে, জীবন এভাবে চলতে পারে না। ইতিবাচকভাবে সুন্দর জীবন কাটাতে হবে।” 

কৃত্রিম অঙ্গ ব্যবহার করে অনেক বছর চর্চা করে এখন তিনি স্বাভাবিক হাটা-চলা করতে পারেন। তা ছাড়া, তিনি সাইকেলিংও করতে পারেন। তিনি বলেন, পা ভাঙ্গলে মানুষ মারা যায় না।  কিন্তু, হাল ছেড়ে দিলে তা থেকে পরিত্রাণ মিলে না।  

ওয়াং আইস স্কেটিং অনেক পছন্দ করেন। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে তিনি এ খেলা শুরু করার চেষ্টা করেন। স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য তিনি অনেক কঠোর পরিশ্রম করেন ও প্রশিক্ষন নেন। শুরু করার সময় তিনি পড়ে যেতেন। হাজার হাজার বারের চেষ্টায় তিনি সফল হন। তিনি কখনো হাল ছেড়ে দেন নি। অধ্যবসায়ের সাথে প্রশিক্ষণ অব্যাহত রাখেন। 

এ খেলা শুরু করার পর থেকে তাঁর শরীর দিন দিন ভাল হচ্ছে। তিনি বলেন, শুধু রক্ত চাপ স্থিতিলশীল হয়েছে, তা নয়। শরীরে কোনো সমস্যাও আর নেই। শরীরে সবসময় অনেক শক্তি অনুভব করেন তিনি। যখন আবহাওয়া গরম হয়ে যায়, তখন তিনি রোলার স্কেটিং খেলতে শুরু করেন। 

তিনি জানান, তাঁর এখন দুটি লক্ষ্য রয়েছে-- ভবিষ্যতে আইস স্কেটিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারা, এবং ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত খেলা অব্যাহত রাখা। 

আকাশ: ভাই, এ গল্প শুনে আপনার অনুভূতি কী?