ভুলের ভূবনে বাস: ছোঁয়াছে নয় শ্বেতি
2021-04-02 20:14:07

ভুলের ভূবনে বাস: ছোঁয়াছে নয় শ্বেতি_fororder_shengwu22

শ্বেতি রোগ ত্বকের এমন এক অবস্থা যাতে ত্বকের স্বাভাবিক রং হারিয়ে সাদা রং ধারণ করে। ত্বকের যে কোনো অংশ এতে আক্রান্ত হতে পারে। শ্বেতির ডাক্তারি নাম ভিটিলিগো। চিকিৎসকদের ভাষ্য, রোগ হিসেবে এটি সাধারণ এবং আক্রান্তদের স্বাভাবিক কাজে কোনও অসুবিধা হয় না। কিন্তু চামড়ার রং পরিবর্তনে চেহারাটাই যেহেতু বদলে যায়, তাই অনেক সময় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।

তবে এ রোগটি সম্পর্কে চারপাশের মানুষের ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকে মনে করেন, এটি ছোঁয়াচে। ক্স্তিু আসলে তা নয়। আবার অনেকেই ভাবেন, এ রোগ সারে না। বাস্তবতা হলো আধুনিক চিকিৎসায় শরীরের যে কোনও জায়গার শ্বেতি দূর করা যায়। প্রয়োজন শুধু সময় ও ধৈর্য। শিশুদের মধ্যে ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে শ্বেতি সেরে যায়। এর জন্য দু থেকে আড়াই বছরের লাগে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে যথাযথ চিকিত্সায় বছর পাঁচেকের মধ্যে ৪০-৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে শ্বেতি সেরে যায়।

শ্বেতি এক ধরনের অটো ইমিউন রোগ। গোড়ার দিকে শরীরের নানা অংশে এক বা একাধিক ছোট দাগ হয়। চামড়ার রং সাদা ও মসৃণ হয়ে যাওয়া ছাড়া এ রোগের আর কোন লক্ষণ নেই। রোগটি আঙুলের ডগা বা ঠোঁটের কাছ থেকে শুরু হলে এবং ত্বকের যে সব অংশে রোম থাকে না সেখানে হলে, সারতে বেশি সময় লাগে। তবে শ্বেতি হতে পারে শরীরের যে কোনও অংশে। ঠোঁট, মুখ ও পিঠে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শ্বেতি সাধারণত দু’ রকমের হয়, দ্রুত ছড়িয়ে পড়া শ্বেতি এবং ধীর গতিতে ছড়ানো শ্বেতি।

বিভিন্ন ধরনের মেকআপে থাকা রাসায়নিক পদার্থ দীর্ঘ সময় ধরে ত্বকের সংস্পর্শে এলে তা থেকেও শ্বেতি হতে পারে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে দেখা যায়, আক্রান্ত ব্যক্তির গায়ের রং খুব ফর্সা হওয়ার কারণে রোগ ধরা পড়েনি। তাই শরীরের কোথাও সাদা দাগ দেখলে চর্ম বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া দরকার।

শ্বেতি হলে খুব চেপে বেল্ট না পরা, গরম জিনিস না ধরা এবং রান্না করার সময় সাবধানে থাকা উচিত। পুরুষের মুখে শ্বেতি ধরা পড়লে, সেই অংশে দাড়ি না কাটা ভালো। এছাড়া শ্বেতি রোগীদের রোদে সানস্ক্রিন লাগানো ও রোদচশমা পরা জরুরি।

ওষুধ ও অস্ত্রোপচার দু’ভাবেই এ রোগের চিকিত্সা হতে পারে।ত্বকের স্বাভাবিক রং ফিরিয়ে আনতে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ও ক্রিম দেন চিকিত্সকরা। কিছু ক্ষেত্রে ফোটোকেমোথেরাপিও করানো হয় বা আক্রান্ত অংশে ওষুধ লাগিয়ে রোদে দাঁড়িয়ে অতিবেগনি রশ্মিও নিতে বলা হয়। ওষুধ খাওয়ার পরেও যদি রোগটি ঠোঁট ও আঙুলের ডগায় ছড়িয়ে যায়, তখন স্কিন গ্রাফ্টিং করা হয়।