চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ঢাকা স্টেশন থেকে প্রচারিত আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি শান্তা মারিয়া। কেমন আছেন আপনারা? আশাকরি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।
প্রতিবেদন: বদলে গেল তরুণী ড্রলমার জীবন
জামিয়াং ড্রলমা
থাশি ড্রলমা
চীনের ছিংহাই প্রদেশের তিব্বতী সমাজে আগে নারীদের বাল্যবিবাহ প্রচলিত ছিল। তাদের সংসারের কাজ, সন্তান লালন পালনের বাইরে কিছু করার সুযোগ ছিল না। সমাজে নারীর অবস্থান ছিল নিম্নতর। কিন্তু দিন পরিবর্তন হয়েছে। সেই পরিবর্তিত দিনের একজন উজ্জ্বল নারী জামিয়াং ড্রলমা। তাকে মা, চাচী বা খালাদের মতো কম বয়সে বিয়ে করতে হয়নি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেতে চান। তিনি মাকে পরামর্শ দিয়ে বদলে দিয়েছেন পরিবারের ভাগ্য।
তার মায়ের নাম থাশি ড্রলমা। ছিংহাই প্রদেশের ছিংহাই লেক এলাকায় চিয়াংসিকোওতে তার জন্ম।
থাশি ড্রলমা বলেন, ‘এখানে নারীরা শুধু ঘরগৃহস্থালী, কৃষি কাজ আর সন্তান লালন পালন করবেন এমনটিই রীতি ছিল।’
তার আত্মীয়া ডরজি ড্রলমা বলেন, ‘পুরুষরা মনে করে মেয়েরা যদি ঘরের কাজ না করবে তাহলে কেন বিয়ে করবো?’
অর্থনৈতিকভাবে নারীরা পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিলেন পুরুষদের উপর। তাদের হাতে একটি টাকাও দেয়া হতো না। পারিবারিক নির্যাতনও ছিল সাধারণ ঘটনা।
তবে থাশি ড্রলমার ভাগ্য ভালো, তার স্বামী একজন সহানুভূতিশীল মানুষ। একদিন থাশির কিশোরী মেয়ে জামিয়াং অনলাইনে একটি পোশাক কেনে। তখনি তারা চিন্তা করেন নিজেরা একটি অনলাইন শপ করলে কেমন হয়। তিনি তিব্বতী ভাষা জানতেন। কিন্তু স্ট্যান্ডার্ড চায়নিজ ভাষা তেমন ভালো জানতেন না। মেয়ের পরামর্শে তিনি ম্যান্ডারিন প্র্যাকটিস শুরু করেন। তাদের এলাকার টিবেটান প্রিফেকচারে তারাই প্রথম অনলাইন শপ খোলেন। তারা গ্রামবাসীদের তৈরি হস্তশিল্পের সামগ্রীও বিক্রি করা শুরু করেন। এতে গ্রামের অন্য নারীদেরও আয় রোজগার বাড়তে থাকে। এখন তাদের জীবনমান উন্নত হয়েছে, তারা জেনেছেন চীনের বড় শহরের নারীরা কিভাবে থাকে।
জামিয়াং বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাব। আইন পড়বো। অথবা শিক্ষক হবো। আমি শিক্ষক হলে গ্রামে ফিরে এসে এখানকার অধিবাসীদের শিক্ষার মান বাড়াতে ভূমিকা রাখবো।’
এইভাবে প্রযুক্তি ও উদ্যোগের সমন্বয়ে বদলে যাচ্ছে ছিংহাইয়ের তিব্বতী সমাজে নারীর অবস্থান।
সুপ্রিয় শ্রোতা আপনারা শুনছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতার থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠান আকাশ ছুঁতে চাই। এই অনুষ্ঠানে আমরা কথা বলি এমন নারীদের সঙ্গে যারা সাফল্যের আকাশ স্পর্শ করেছেন, অথবা স্পর্শ করতে চান।