চীনে জাতিসংঘের সমন্বয়ক সিদ্ধার্থ চ্যাটার্জি মহামারী ও দারিদ্র্যবিমোচনে চীনের অর্জনের স্বীকৃতি দেন
2021-03-25 16:40:02

মার্চ ২৫: চীনে জাতিসংঘের সমন্বয়ক সিদ্ধার্থ চ্যাটার্জি সম্প্রতি চায়না মিডিয়া গ্রুপে একান্ত সাক্ষাত্কার দিয়েছেন। তিনি বিশ্বব্যাপী মহামারী প্রতিরোধ ও দারিদ্র্যবিমোচন ইস্যুতে চীনের অবদানকে পুরোপুরি স্বীকৃতি দিয়েছেন।

নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর প্রেক্ষাপটে, জাতিসংঘের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা হিসেবে অন্যান্য বিদেশি নাগরিকদের মতো সিদ্ধার্থ চ্যাটার্জিও চীন সফর এসে নির্ধারিত হোটেলে ২১ দিন কোয়ারান্টিনে ছিলেন। সিদ্ধার্থ চ্যাটার্জি চীন সরকারের এই পদ্ধতির প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা ব্যক্ত করেন। তিনি বিশ্বাস করেন, চীন সরকারের মহামারীবিরোধী ব্যবস্থা এবং জনগণের উচ্চ পর্যায়ের শৃঙ্খলাবোধ মহামারী প্রতিরোধে চীনের জয়ের মূল কারণ। তিনি বলেন,

“নভেল করোনাভাইরাস মহামারী বিশ্বস্বাস্থ্য ব্যবস্থার কেন্দ্রীয় বিষয়ে পরিণত হয়েছে। দেখা গেছে, শক্তিশালী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কিছু দেশ দ্রুতগতিতে স্বাস্থখাত ধসে পড়েছে। সুতরাং, কোনও দেশে মহামারীর তীব্রতা সম্পূর্ণরূপে সামাজিক বিকাশের মাত্রা এবং একাডেমিক গবেষণার স্তরের উপর নির্ভর করছে না। মহামারী প্রতিরোধের অনুশাসন মেনে চলা, মাস্ক পরা এবং হাত ধোয়ার সঙ্গে এটি ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। অনেক ক্ষেত্রে চীন একটি উদাহরণ তৈরি করেছে যা অন্যান্য দেশ অনুসরণ করতে পারে। যদি প্রতিটি দেশ চীনের মতো শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থা মেনে চলতে পারে তবে নভেল করোনাভাইরাস কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।”

 

টেকসই বিকাশের জন্য বিশ্বজুড়ে সব ধরণের দারিদ্র্য দূরীকরণ জাতিসংঘের ২০৩০ এজেন্ডার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। চীনের ৮০ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেয়েছে। যা বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য হ্রাসের ক্ষেত্রে এককভাবে ৭৫ শতাংশের বেশি। এটি দারিদ্র্যবিমোচন ও বিশ্বের শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের ঐতিহাসিক অবদান রেখেছে। সিদ্ধার্থ চ্যাটার্জি দারিদ্র্যবিমোচনে চীনের অসাধারণ সফলতার উচ্চ পর্যায়ের মূল্যায়ন করেন। তিনি বলেন,

“গত সাত বছরে, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং ১০ কোটি চীনা মানুষের দরিদ্র জীবন বদলে দিয়েছেন। বিগত ৪০ বছরে চীন সফলতার সাথে প্রায় ৮০ কোটি মানুষকে চরম দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করেছে। এটি একটি দুর্দান্ত অর্জন, এটি দারিদ্র্যবিমোচনে আগ্রহী অনেক দেশের জন্য একটি উদাহরণ তৈরি করেছে।”

 

দারিদ্র্যবিমোচন ও দরিদ্রতা হ্রাসে চীনের অর্জনের প্রশংসা করার সময়, সিদ্ধার্থ চ্যাটার্জী আরও জোর দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে একাধিক সহযোগিতা কাঠামো চুক্তির আলোকে জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট নানা ক্ষেত্রে চীন সরকারের সাথে গভীর সহযোগিতা করবে, দারিদ্র্যবিমোচনে চীনের অভিজ্ঞতা থেকে শিখবে এবং একে বিশ্বব্যাপী এগিয়ে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন,

“চীনের দারিদ্র্যবিমোচন কাজটি দরিদ্রতার সমস্যা সমাধানের জন্য একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতির পরিবর্তে, কৃষিক্ষেত্র, অবকাঠামো, উত্পাদন, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও অন্যান্য নানা দিকে পরিচালিত হয়েছে। এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।”

 

জাতিসংঘ ও চীনের সহযোগিতা চীনকে কেবল টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে না, পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলো চীনের দারিদ্র্য বিমোচন ও দরিদ্রতা হ্রাসের অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা ভাগাভাগি করতে পারবে।

সম্প্রতি চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ২০২১ সালে দাভোস ফোরামে এক ভাষণে বলেন, বহুপক্ষবাদ ধরে রাখা এবং নভেল করোনাভাইরাস দূর করার জন্য একত্রে কাজ করতে হবে। সিদ্ধার্থ চ্যাটার্জীও এতে দৃঢ় বিশ্বাস করেন। তিনি বলেন,

“বহুপক্ষবাদে আস্থা রাখা এবং মূল্যবান একটি দেশের সেবা করে আমি অত্যন্ত সম্মানিত। আমাদের অবশ্যই একটি স্থিতিশীল সমাজ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে আমরা সবাই একটি অভিন্ন লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ থাকব এবং বিশ্বব্যাপী সমৃদ্ধি অর্জন করবো।” (জিনিয়া/তৌহিদ/শুয়েই)