আরসিইপির সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর চুক্তি পহেলা জানুয়ারি থেকে কার্যকর হতে পারে
2021-03-23 16:02:02

মার্চ ২৩: আঞ্চলিক বিস্তৃত অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি বা আরসিইপি বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম এলাকার চুক্তি। এটি বৃহত্তম অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল, বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ জনসংখ্যা, মোট অর্থনীতির ৩০ শতাংশ এবং বিদেশি বাণিজ্যের ৩০ শতাংশ এলাকা অন্তর্ভুক্ত করেছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ব্যক্তি গতকাল (সোমবার) বেইজিংয়ে জানান, আরসিইপি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর, এই অঞ্চলে পণ্য-বাণিজ্য ৯০ শতাংশ উন্মুক্ত হবে। বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করে আরসিইপি’র সব সদস্য দেশ জানায় যে, তারা এ বছরের মধ্যে চুক্তিটি অনুমোদন করবে এবং চুক্তিটি আগামী বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

২২ ও ২৩ মার্চ চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনলাইন দ্বিতীয় আরসিইপি’র বিশেষ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আয়োজন করে। শিল্প খাতে আরসিইপি’র প্রভাব নিয়ে আলোকপাত করা হয়, শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলির চুক্তির বিষয়বস্তু ও বিধি আরও ভালোভাবে বুঝতে সংস্থাগুলোকে সহায়তা করা হয় এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের পরিচালক ইয়ু বেন লিন গতকাল জানান, চীন সরকার আরসিইপি চুক্তির আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দিয়েছে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য সব প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি সুশৃঙ্খলভাবে এগিয়ে নিচ্ছে। তিনি বলেন, “বর্তমানে চীন অনুমোদনের কাজটি সম্পন্ন করেছে এবং চুক্তিটির প্রথম অনুমোদন দিয়েছে চীন। এরপর থাইল্যান্ডও চুক্তিটি অনুমোদন দেয়। এ বছর, সব সদস্যদেশ নিজ দেশের অনুমোদনের অগ্রগতি নিয়ে কাজ করবে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে, সদস্যদেশগুলো জানায় যে, তারা এ বছরের মধ্যে চুক্তিটি অনুমোদন দেবে এবং চুক্তিটি পরবর্তী বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। চুক্তিটি কার্যকর হলে, দেশগুলি চুক্তি অনুসারে তাত্ক্ষণিকভাবে কর হ্রাস করবে, উন্মুক্ত পরিষেবা বিনিয়োগে তাদের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করবে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিধি বাস্তবায়ন করবে।”

 

যুক্তরাষ্ট্রের পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক্সের অনুমান অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে, আরসিইপি চুক্তির অধীনে রফতানি খাতে ৫১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং সদস্য দেশগুলোর জাতীয় আয় ১৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নিট বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের পরিচালক ইয়ু বলেন, আরসিইপিতে থাকা বিপুল বাণিজ্যিক সম্ভাবনা আঞ্চলিক ও বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে জোরালো গতি সৃষ্টি করবে। তিনি বলেন,

“আরসিইপি চীনের উচ্চ পর্যায়ের প্রাতিষ্ঠানিক উন্মুক্তকরণ বাস্তবায়ন করবে এবং আঞ্চলিক শিল্প চেইনের সরবরাহ চেইনের সমন্বয় করে সার্বিক বৃহত্তম বাজার উন্নয়নে আরও বেশি সহযোগিতা করবে।”

 

ইয়ু বলেন, আরসিইপি অর্থনীতির বৃহত্তম সদস্যদেশ হিসাবে চীন সহযোগিতার সুযোগগুলি সম্পূর্ণ অর্জন করতে সক্ষম। তিনি বলেন, চীনের উত্পাদন শিল্পকে ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মানে উন্নীত করতে একটি সম্পূর্ণ শিল্প চেইনের সুবিধা এবং সহায়ক সুবিধাগুলো কাজে লাগাতে হবে। তিনি একটি উদাহরণ হিসাবে অটোমোবাইল শিল্পের কথা বলেন।

তিনি বলেন, “অটোমোবাইল শিল্পের জন্য, চীন প্রায় ৬৫ শতাংশ শূন্য শুল্ক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এটি অটো যন্ত্রাংশের বাণিজ্যকে ব্যাপকভাবে এগিয়ে নেবে এবং পূর্ব এশিয়ার অটোমোবাইলের সরবরাহ শিল্প চেইনের সমন্বয়কে উত্সাহিত করবে। এতে মোটরগাড়ি প্রস্তুতকারকদের ব্যয় হ্রাস পাবে। এভাবে, অটোমোবাইল শিল্পের মাধ্যমে আমাদের যানবাহন উত্পাদনের সামগ্রিক শক্তি উন্নত করার সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।”

(জিনিয়া/তৌহিদ/শুয়েই)