সিন চিয়াং ইস্যুতে চীনের প্রতি অনেক দেশের ব্যাপক সমর্থন
2021-03-17 16:01:53

মার্চ ১৮: গত শুক্রবার জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৪৬তম অধিবেশনে ৬৪টি দেশের প্রতিনিধি হিসেবে সিনচিয়াং ইস্যুতে চীনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে কিউবা। এ বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র চাও লি চিয়ান বেইজিংয়ে এক নিয়মিত সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, সিনচিয়াং ইস্যুটি মানবাধিকার সমস্যা নয়, বরং তা সন্ত্রাসদমন, চরমপন্থা দূরীকরণ, বিচ্ছিন্নতাবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়। সিনচিয়াংয়ে জাতিগত নিধন, বাধ্যতামূলক শ্রম এবং ধর্মীয় দমনের কোনো ঘটনা নেই।

তিনি বলেন, অসংখ্য উন্নয়নশীল দেশ জাতিসংঘে সত্যের পক্ষে কথা বলেছে। যা প্রমাণ করে যে, মিথ্যা কথা কেউ বিশ্বাস করে না। চীন কিছু দেশকে মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে রাজনীতি না-করতে, দ্বৈতনীতি অনুসরণ না-করতে, সিনচিয়াং ইস্যুতে চীনের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত না-করতে, এবং চীনের অভ্যন্তরীণ বাপারে হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে তাগিদ দেয়।

মাত্র দু’বছর আগে একবার সিনচিয়াং গিয়েছিলেন এবং সিনচিয়াংয়ের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা খুব কার্যকর দেখেছেন। এ সত্য কথা বলার কারণে ফ্রান্সের বিখ্যাত পণ্ডিত প্রফেসর ক্রিশ্চিয়ান মাস্ত্রেকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। বস্তুত, কতিপয় পশ্চিমা দেশে তথাকথিত ‘স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার’ নিছক কথার কথা মাত্র। সত্য বলার কারণে পশ্চিমাদের রাজনৈতিক প্রতিশোধের প্রমাণ এটি। প্রফেসর মাস্ত্রে-র অভিজ্ঞতা সমুদ্রে ভাসমান বিশাল বরফ খণ্ডের সামান্য একটি অংশ মাত্র। ‘সিনচিয়াং দিয়ে চীনকে প্রতিরোধ করার’ অপপ্রয়াস চালায় পশ্চিমা কতিপয় রাজনীতিবিদ ও তথ্যমাধ্যম। তারা সিনচিয়াং সম্পর্কে যারা সত্যি কথা বলে, তাদের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক প্রতিশোধ’ গ্রহণ করে।

তবে সত্যকে কখনই মিথ্যা প্রমাণ করা যায় না। বর্তমানে অনেক আন্তর্জাতিক পণ্ডিত ও সাংবাদিক সিনচিয়াংসম্পর্কিত সত্য খবর প্রচার করছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ৪৬তম অধিবেশনে, বেশকিছু দেশের প্রতিনিধি চীনের সিনচিয়াংয়ে গৃহীত নীতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

সিনচিয়াং পরিস্থিতি সম্পর্কে স্থানীয়রা সবচেয়ে ভালো বলতে পারবেন। সম্প্রতি সিনচিয়াংয়ের কাসি শহরের উইগুর নারী রানাগুল হুদাবাদ জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৪৬তম অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন। তিনি বলেন, তাঁর গর্ভবতী হওয়া থেকে শিশুর জন্মগ্রহণ পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারের সাহায্য পেয়েছেন। এখন তারা সুখী জীবন কাটাচ্ছেন।

চীনের সিন চিয়াং উইগুর জাতির নারী প্রতিনিধি নিশা এরি বলেন, তিনি সিনচিয়াংয়ের ‘হ্য থিয়ান’ পেশাগত প্রযুক্তিগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের স্নাতক । এখানকার শিক্ষার্থীরা কেবল যে চীনের ভাষা, আইনগত জ্ঞান শিখতে পারেন তা নয়, তারা পেশাগত দক্ষতাও অর্জন করতে পারেন। তিনি শ্রম বাজারের মাধ্যমে পোষাক কোম্পানিতে কাজের সুযোগ লাভ করেন। কোম্পানির সাথে তাঁর শ্রমচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রতি সপ্তাহে ৫ দিন অফিস হয় এবং প্রতিদিন কর্মঘন্টা ৮। সাপ্তাহিক ছুটিতে তিনি মাঝেমধ্যেই তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে শপিংয়েও ও বেড়াতে যান।

তিনি বলেন, তার দক্ষতা দিয়ে তিনি এখন মাসিক ৪ হাজার ইউয়ান আয় করেন। তিনি ইতমোধ্যেই ওয়ার্কশপ ডিরেক্টর হয়েছেন। র জীবনমানও আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। তাঁর পরিবারও সুখী জীবনযাপন করছে। যারা সিনচিয়াংয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছে, তাদেরকে সরাসরি সিনচিয়াংয়ে আসতে এবং নিজেদের চোখে সবকিছু দেখার আমন্ত্রণ জানান তিনি। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, সিনচিয়াং ইস্যু নিয়ে চীনের বিভিন্ন জাতির জনগণের মৈত্রীর সম্পর্ক নষ্ট করবে না পশ্চিমা দেশগুলোর কিছু সংবাদমাধ্যম। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সিনচিয়াংয়ের উন্নয়নের প্রকৃত অবস্থা কেউ বিকৃত করতে পারবে না। (ওয়াং  হাইমান/আলিম/ছাই)