মানবাধিকার পরিষদের বক্তব্যে উন্নয়শীল দেশসমূহের চীনকে সমর্থন
2021-03-15 14:34:04

গত ১২ মার্চ  জেনেভায় অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৪৬তম অধিবেশনে কিউবা ৬৪টি দেশের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেয়। এতে দেশটি নানা পক্ষের প্রতি গঠনমূলক সংলাপ ও সহযোগিতার মাধ্যমে মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়ন করার আহ্বান জানায়। পাশাপাশি, মানবাধিকার ইস্যুর রাজনীতিকরণ ও দ্বৈত নীতির বিরোধীতা করে কিউবার নের্তৃত্বে দেশগুলো। সেসব দেশ চীন সরকারের জনগণকে কেন্দ্র করে মানবাধিকার উন্নয়নের প্রশংসা করে এবং জোর দিয়ে বলে যে, সিনচিয়াং চীনের অবিছিন্ন অংশ।

 

সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে জাতিসংঘ সনদ মেনে চলে সিনচিয়াং ইস্যু নিয়ে চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না-করতে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে চীনের বিরুদ্ধে অযৌক্তিক অভিযোগ ও মানবাধিকারের অজুহাতে উন্নয়নশীলদেশের উন্নয়নে বাধা দান বন্ধের তাগিদ দেয় দেশগুলোর প্রতিনিধিগণ।

 

ওই দিন শ্রীলংকা, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ সুদান, ক্যামেরুন, কোট ডি আইভায়ার ও আজারবাইজানসহ আরও অনেক উন্নয়নশীল দেশ বক্তব্য দেয় এবং সিনচিয়াং ও হংকং বিষয়ে চীনকে সমর্থন জানায়। সিনচিয়াংয়ের অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়ন, স্থিতিশীলতা, নানা জাতির অধিকার রক্ষায় চীনা সরকারের প্রচেষ্টাকে প্রশংসা করে। হংকংয়ে ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ বজায় রাখার উপরও সমর্থন দেয় দেশগুলো।

 

জাতিসংঘ জেনেভা কার্যালয় ও সুইজারল্যান্ডে অন্য আন্তর্জাতিক সংস্থার চীনা প্রতিনিধি ছেন স্যু এতে ভাষণ দেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, মানবাধিকারের ক্ষেত্রে গঠনমূলক সংলাপ ও সহযোগিতা করা উচিত। তিনি বলেন, কোন কোন দেশ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে উন্নয়শীল দেশের বিরুদ্ধে অযৌক্তিক অভিযোগ করে এবং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে। যা জাতিসংঘ সনদের গুরুতর লঙ্ঘন। তিনি এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

 

তিনি বলেন, কোন কোন দেশ অন্য দেশের মানবাধিকার নিয়ে অভিযোগ করে, তবে নিজের দেশের গুরুতর মানবাধিকার সমস্যা দেখেও না দেখার ভান করে। তা প্রমাণ করে, মানবাধিকারকে কেবল তারা রাজনৈতিক কারসাজির সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহার করছে। সেসব দেশগুলোকে কথা ও কাজের সাথে সঙ্গতি রেখে নিজের মানবাধিকার সমস্যা সমাধান করা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সহযোগিতায় অবদান রাখার আহ্বান জানিয়েছেন চীনা প্রতিনিধি।

 

তাছাড়া, ৬৪ দেশের পক্ষ থেকে কিউবার প্রতিনিধির সিনচিয়াংয় সম্পর্কিত বক্তব্য নিয়ে ছেন স্যু বলেন, কিউবার প্রতিনিধির কথা এবং এর আগে ৭১টি দেশের পক্ষ থেকে বেলারুশের প্রতিনিধির কথা থেকে প্রতিফলিত হয় যে, আন্তর্জাতিক সমাজের বেশিরভাগ সদস্য ন্যায়সংগত অবস্থানকে সমর্থন করে।

 

ছেন স্যু বলেন, গেল ৬০ বছরে সিনচিয়াংয়ের জিডিপি ২০০গুণ বৃদ্ধি পায় এবং মানুষের গড় আয়ু ৩০ থেকে ৭২ বছরে উন্নীত হয়। গেল ৪০ বছরে, সিনচিয়াং উইগুর জাতির লোকসংখ্যা ৫৫ লাখ ৫০ হাজার থেকে বেড়ে ১কোটি ২০লাখে পৌঁছেছে। সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে চীনে কখনও গণহত্যা হবে না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ১০০টির বেশি দেশের ১২০০জনের বেশি কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও ধর্মীয় ব্যক্তি সিনচিয়াং সফর করেছেন এবং তাঁদের চোখে সিনচিয়াং, আর পশ্চিমা তথ্যমাধ্যমের বর্ণনার সিনচিয়াংয়ের মাঝে আকাশ-পাতাল পার্থক্য।

 

ছেন স্যু বলেন, চীনা মানুষের মানবাধিকারের ওপর চীন সরকার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়। পারস্পরিক সম্মান ও সমতার ভিত্তিতে নানা পক্ষের সঙ্গে মানবাধিকার ক্ষেত্রে গঠনমূলক বিনিময় ও সহযোগিতা করতে চায় চীন। তবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আরোপিত যে কোন অপবাদের বিরোধিতা করে চীন। (শিশির/এনাম/রুবি)