সুপ্রিয় শ্রোতা, আপনারা শুনছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান। এখন আপনাদের জন্য রয়েছে সাপ্তাহিক আয়োজন-'হপ্তানামা'। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি ওয়াং তান হোং রুবি এবং আমি মোঃ এনামুল হাসান।
প্রথমে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের গত এক সপ্তাহের কর্ম তত্পরতা তুলে ধরছি...
গত ৪ মার্চ চীনের গণরাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলন (সিপিপিসিসি)’র বার্ষিক অধিবেশন বেইজিংয়ে শুরু হয়। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংসহ চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি) ও দেশের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এতে অংশ নেন।
গত ৫ মার্চ চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, দেশের প্রেসিডেন্ট ও কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান সি চিন পিং চীনের ত্রয়োদশ জাতীয় গণকংগ্রেসের চতুর্থ অধিবেশনের ইনার মঙ্গোলিয়ার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক পর্যালোচনা সভায় অংশ নেন।
সি চিন পিং বলেন, সাংস্কৃতিক পরিচিতি হচ্ছে জাতিগত একতার মূল এবং সঙ্গতির প্রধান উপাদান।
তিনি বলেন, মহান মাতৃভূমি, চীনা জাতি, চীনা সংস্কৃতি, সিপিসি ও চীনা বৈশিষ্টের সমাজতন্ত্রের প্রতি বিভিন্ন জাতির পরিচিতি জোরদার করতে হবে। দেশ, ইতিহাস, জাতি, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বিষয়ে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে হবে।
গত ৭ মার্চ বিকেলে ত্রয়োদশ জাতীয় গণ কংগ্রেসের চতুর্থ অধিবেশনে ছিংহাই প্রতিনিধি দলের পর্যালোচনা সভায় অংশ নিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।
ছিংহাই প্রদেশের ইয়ুশু জেলার এনপিসির প্রতিনিধি তাশি দোর্জের সাথে আলাপচারিতায় প্রেসিডেন্ট সি বলেন, ‘ইয়ুশুতে ভূমিকম্পের পর যথাযথ উদ্ধার কার্যক্রম চালানো হয়। দারিদ্র্যবিমোচন পদক্ষেপের মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের সুখী, আধুনিক ও স্বাস্থ্যকর জীবন নিশ্চিত করা হয়। আগামিতে ইয়ুশুর ভবিষ্যত আরও সুন্দর হবে।’
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে ইয়ুশু জেলায় ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। একই বছরের জুন মাসে তত্কালীন চীনা ভাইস প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ইয়ুশুর দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিলেন।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং গত ৯ মার্চ বিকেলে ত্রয়েদশ জাতীয় গণকংগ্রসের চতুর্থ অধিবেশনের গণমুক্তি ফৌজ ও র্যাপিড পুলিশ প্রতিনিধি দলের পুর্ণাঙ্গ সভায় অংশ নেন। এ সময় তিনি বলেন, চলতি বছর চীনের কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার শততম বার্ষিকী এবং চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনা ও সার্বিক সমাজতান্ত্রিক আধুনিকায়নের শুরুর বছর এবং প্রতিরক্ষা ও সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নের শুরুর বছর। সশস্ত্র বাহিনীর সকলের উচিত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে প্রচেষ্টা চালানো এবং স্বাভাবিকভাবে মহামারি নিয়ন্ত্রণকাজ করা, যাতে চতুর্দশ পাচসালা পরিকল্পনার ভালো সূচনা নিশ্চিত হয়। এ সভায় ৬জন প্রতিনিধি নানা ক্ষেত্রে মতামত ও পরামর্শ দিয়েছে।
তাঁদের ভাষণ শোনার পর সি চিন পিং বলেন, গত এক বছরে প্রতিরক্ষা বাহিনী নির্মাণে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে, তার প্রশংসা করেন তিনি। পুরো বাহিনী কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের নির্দেশনায় কোভিড-১৯ মহামারি প্রতিরোধের পাশাপাশি চর্চা জোরদার করে ২০২০ সালের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করেছে।
তিনি আরও বলেন, সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠার শততম বার্ষিকীর লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য চুতর্দশ পাচসালা পরিকল্পনা অনুযায়ী দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ইতিবাচকভাবে নানা কার্যক্রম বেগবান করতে সকল সেনাদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন সি চিন পিং।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং গত ১০ মার্চ কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও তাঁর স্ত্রী আসমা আসাদকে সমবেদনা জানিয়েছেন। সমবেদনা বার্তায় সি চিন পিং প্রেসিডেন্ট দম্পতির আশু রোগমুক্তি কামনা করেন।
তিনি বলেন, চীন সরকার ও জনগণ সিরিয়ার সরকার ও জনগণের মহামারি প্রতিরোধের চেষ্টাকে সমর্থন করে। সিরিয়ার জনগণ মহামারি পরাজিত করতে পারবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সি চিন পিং।
২, ‘দেশপ্রেমিকদের হংকং প্রশাসন’ খুব তাত্পর্যপূর্ণ
সদ্য সমাপ্ত চীনের দুই অধিবেশনে হংকংয়ের নির্বাচন ব্যবস্থা সুবিন্যাস্ত করার প্রস্তাব বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
হংকং বিষয়ে চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী হান জেং বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি হংকংয়ের নির্বাচন ব্যবস্থার ওপরও গুরুত্বারোপ করে চীনের কেন্দ্রীয় সরকার। জাতীয় নিরাপত্তা আইন ও হংকংয়ের নির্বাচন ব্যবস্থা সুবিন্যস্ত করার ক্ষেত্রে নানা পক্ষের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষ করে, হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের কর্মকর্তাদের মতামত বহুবার গ্রহণ করেছে চীনের কেন্দ্রীয় সরকার।
হংকংয়ের আবাসন সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, চীনের হংকংয়ের আবাসন সমস্য ঐতিহাসিক উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় জন্মেছে। এর সমাধানও জটিল। তবে চীন যে কোন মূল্যে এর সমাধান করতে বদ্ধপরিকর। কারণ এ অবস্থা বজায় থাকলে হংকংবাসীদের ক্ষতি হবে।
তিনি বলেন, হংকং ব্যাকিং খাতের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বৈশ্বিক যে স্বীকৃতি পেয়েছে, তা হংকংয়ের মর্যাদা এবং সুবিধা উভয় বৃদ্ধি করেছে। এ মর্যাদা আরও জোরদার করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।
চীনের কেন্দ্রীয় সরকার হংকংয়ের ব্যাংকিং খাতের এ মর্যাদা জোরদার করতে যথাসাধ্য সমর্থন দিয়ে যাবে।
দেশের উন্নয়নের সঙ্গে হংকংয়ের উন্নয়ন যুক্ত হবে। ফলে হংকং নিজস্ব উন্নয়নের পাশাপাশি চীনা জাতির পুনরুত্থানের প্রক্রিয়ায় নিজের অবদান রাখতে পারবে।
তিনি এ সব কথায় হংকংয়ের বিকাশ সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছেন।