আপন আলোয় – পর্ব ৬
2021-03-05 19:20:57

শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের খবরাখবর, বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ও প্রতিভাবান-সৃষ্টিশীল তরুণদের জীবন ও কর্ম নিয়ে সাজানো আমাদের এ অনুষ্ঠান। খ্যাতিমানদের কৃতি মানুষ হয়ে ওঠার অনুপ্রেররণা, সৃষ্টিশীল তরুণদের স্বপ্ন, তাদের জীবনের আনন্দ-বেদনার গল্প নিয়েই ‘আপন আলোয়’।

আপন আলোয় আমাদের এবারের অতিথি বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও শিক্ষক সাদি মহম্মদ। অন্তরঙ্গ আলাপচারিতায় আমরা শুনবো সুরের ভুবনে তাঁর দীর্ঘ পাঁচ দশকের রাজসিক পদচারণার গল্প।

বাংলাদেশ ও চীনের সংস্কৃতি অঙ্গনের খবরাখবর।

১।  জয় বাংলা কনসার্ট হবে ভার্চুয়ালি

আপন আলোয় – পর্ব ৬_fororder_0305-1

করোনা মহামারীর কারণে এবার জয় বাংলা কনসার্ট হবে ভার্চুয়ালি। কনসার্টের আয়োজক সংস্থা ইয়াং বাংলা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এই তথ্য জানিয়েছে। ইয়াং বাংলা তাদের ফেইসবুক পেজে এক ঘোষণায় জানায়, করোনাজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইয়াং বাংলা আয়োজিত এবারের সাতই মার্চের জয় বাংলা কনসার্টটি সরাসরি অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। তবে এবার আর্মি স্টেডিয়ামে কনসার্ট না হলেও ঐতিহাসিক এ দিনটি ভার্চুয়ালি উদযাপন করা হবে। ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের দিনে ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে এই কনসার্ট হয়ে আসছিল। একাত্তরের যুদ্ধদিনের অনুপ্রেরণা যোগানো গানগুলো এ কনসার্টে ফিরিয়ে আনা হয় তরুণদের কণ্ঠে। প্রতি বছর কয়েক লাখ তরুণ অনলাইনে ও সরাসরি এ কনসার্ট উপভোগ করতেন।

২। চীনের ঐতিহ্যবাহী নান্দনিক লণ্ঠন উত্সব

আপন আলোয় – পর্ব ৬_fororder_0305-2

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রদেশ সিচুয়ানের লাংচোং শহরে স্থাপিত বিশ্বে সবচেয়ে বড় লণ্ঠন

জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপিত হয়েছে চীনা বসন্ত উত্সবের অন্যতম আকর্ষণ লণ্ঠন উত্সব। লাখ লাখ লন্ঠন জ্বালিয়ে চীনের নাগরিকরা এই উত্সব পালন করেন। দিবসটি পালিত হয় চীনা চান্দ্রবর্ষের প্রথম মাসের ১৫তম দিন। লণ্ঠন উত্সবে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা দেখা গেছে চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে। নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ এই মেলায় এ বছরও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। হরেকরকম পরিবেশনায় ও রঙের আলোকচ্ছটায় বরাবরের মতোই জমজমাট ছিল এবারের আয়োজন। লণ্ঠন উত্সব পরিবেশনার মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ ছিল ঐতিহ্যবাহী ড্রাগন ও সিংহনাচ।

 

চীনের চলচ্চিত্র: সুয়ান জং

আপন আলোয় – পর্ব ৬_fororder_0305-3

সুয়ান জং: ইতিহাস-নির্ভর অ্যাডভেঞ্চার

অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়দের কাছে সুয়ান জং একটি পরিচিত নাম। থাং রাজবংশের শাসনকাল তিনিই প্রথম চীন ও ভারতের মধ্যে যোগাযোগের সূত্রপাত করেন।

রাজধানী চাওয়াুনে বৌদ্ধধর্ম নিয়ে পড়াশোনা করেন সুয়ান জং। কিন্তু এই ধর্মের আদিলিপি দেখবার বাসনা পেয়ে বসে তাকে। বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলোর মূল অনুলিপি খুঁজে বের করতে এবং ভারতীয় উপমহাদেশ ভ্রমণের উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

সময় কাল ছিল ৬২৭ খ্রিস্টাব্দ। সে সময় ভ্রমণের জন্য একমাত্র বাহন ছিল ঘোড়া। কিন্তু অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় জ্ঞানপিপাসুদের কাছে পায়ে হাঁটাই ছিল একমাত্র মাধ্যম।

সে সময় দেশের নাগরিকদের বিদেশে ভ্রমণ নিষিদ্ধ ছিল। কারণ প্রতিবেশীদেশের সাথে প্রায়ই যুদ্ধ হত। কিন্তু নাছোড়বান্দা সুয়ান জং রাজার কাছ থেকে ভ্রমণের অনুমতি আদায় করে ছাড়েন।

কিন্তু সীমান্ত অতিক্রম করার এই অনুমতি সুয়ান চং কে নিয়ে গেল বিপদের দিকে।

যখন তিনি কুয়াংচৌয়ে পৌঁছান তখন এর গভর্নর লি চাং তাকে নিরুৎসাহিত করেন এই ভ্রমণে। কারন সামনে তাকে পার হতে হবে তাকলিমাকান মরুভুমি। যা প্রায় অসম্ভব। 

এরপর তার সাথে পরিচয় হয় সিল্ক রোডের ব্যবসায়ী জিন রঙ এবং তার মেয়ে লওউ চিয়া ইউয়ের সঙ্গে। তাদের সাথে মিলে পৌছান হুলু নদীর তীরে সবুজ গ্রামে। জিন রঙের দেয়া একটি ঘোড়া নিয়ে আবার একা হয়ে পড়েন জং।

এরপর শুরু হয় তার মরুভূমির পথে যাত্রা। মরুভূমির এক প্রান্তে দেখা পান সীমানা টাওয়ারের আর সেখানেই পরিচয় হয় কমান্ডার ওয়াং চিয়াং এর সাথে। যিনি সাত বছর ধরে আছেন এখানে। যার কেবল একটাই আকুতি ফিরে যেতে চান চাওয়ানে।

কিন্তু এই তকলিমাকান মরুভূমির রাস্তা যেন শেষই হচ্ছে না। ক্ষুধা আর তৃষ্ণায় যেন মৃত্যুর দরজায় পৌঁছে গেছেন সিয়ান ।

অবশেষে ৬২৯ খৃষ্টাব্দে ঘোড়ার সাহায্যে তিনি সফলভাবে পার হন তকলিমাকান মরুভূমি।

কিন্তু এক বিপত্তি পার হয়ে যেন শুরু হলো আরেক বিপত্তি। করখাজো রাজা তাকে প্ররোচিত করতে থাকেন তাদের ধর্মে স্কুলে শিক্ষা নেয়ার জন্য। এভাবে একের পর এক এডভেঞ্চারের মুখোমুখি হয়ে সুয়ান জং ৬৩১ খ্রিস্টাব্দে পৌঁছেতে সক্ষম হন ভারতের নালন্দা মন্দিরে। 

এরপর শুরু হলো তার ভারত ভ্রমণ। ৫ বছর তিনি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে গবেষণা শেষে ৬৩৯ সালে প্রস্তুতি শুরু করেন দেশে ফিরে যাওয়ার। তিনি কি পারবেন দেশে ফিরে যেতে?  জানতে হলে আপনাকে দেখতে হবে পুরো সিনেমাটি।

স্থলভ্রমণ নিয়ে নির্মিত চায়না ফিল্ম গ্রুপের এই সিনেমা চীন ও ভারতের দর্শকদের কাছে সুয়ান জংকে দারুণভাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এই সিনেমার দারুণ প্রশংসা করেন। চীন সফরকালে এই চলচ্চিত্রের অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ কলাকৌশলীদের সাথেও সাক্ষাত্ করেন তিনি।

আপনি যদি অ্যাডভেঞ্চার কিংবা ঐতিহাসিক সিনেমা পছন্দ করে থাকেন তাহলে আপনার জন্য ভালো পছন্দ হতে পারে সুয়ান জং। আপনি চাইলে ইউটিউবে উপভোগ করতে পারেন সিনেমাটি।

 

অন্তরঙ্গ আলাপনে সাদি মহম্মদ

আপন আলোয় – পর্ব ৬_fororder_0305-4

বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও শিক্ষক সাদি মহম্মদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ আলাপন

রক্ষণশীল পরিবারে গান-বাজনার চল ছিল না। বংশে কেউ কখনো গান করেছে এমন নজির নেই। রেডিওতে গান শুনে শুনে সুরের নেশা। নিজের একটা হারমোনিয়মও ছিল না, বন্ধুর বোনের হারমোনিয়ামে নিজে নিজে গান তোলা। মেধাবি ছাত্র হিসেবে ভর্তি হলেন বুয়েটে- কিন্তু মন বসলো না। তারপর বৃত্তি নিয়ে স্বপ্নের শান্তিনিকেতনে। তারপর তো ইতিহাস... প্রায় পাঁচ দশক ধরে রবীন্দ্রসংগীতের জগতে সুরের ইন্দ্রজাল ছড়িয়ে চলেছেন তিনি।

বন্ধুরা বলছি, আপন আলোয় আমাদের এবারের অতিথি বরেণ্য সংগীতশিল্পী ও শিক্ষক সাদি মহম্মদের কথা।  অন্তরঙ্গ আলাপনে আমরা শুনবো সংগীতে নিমগ্ন ধ্যানী এ শিল্পীর বর্ণাঢ্য জীবনের গল্প! শুনবো তাঁর কিছু গান।

প্রিয় বন্ধুরা, আপনাদের মূল্যবান পরামর্শ আমাদের সমৃদ্ধ করবে। চীন আন্তর্জাতিক বেতার-সিআরই বাংলা’র ফেসবুক পাতা facebook.com/cmgbangla আপনার মন্তব্য করতে পারেন। সিএমজি বাংলা’র ফেসবুক পাতা facebook.com/cmgbangla এবং ইউটিউব লিঙ্ক youtube.com/cmgbangla তে গিয়েও আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্ক জানাতে পারেন আপনার মূল্যায়ন।

 

প্রতিবেদন: তানজিদ বসুনিয়া, হোসনে মোবারক সৌরভ

ছবি ও অডিও সম্পাদনা: তানজিদ বসুনিয়া

সাক্ষাত্কার গ্রহণ, গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম