বিশ্ব দারিদ্র্যবিমোচনে চীন কী কী অবদান রাখছে?
2021-03-02 12:55:02

চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি) ও চীনা মানুষের যৌথ প্রচেষ্টায় সিপিসি প্রতিষ্ঠার শতবার্ষিকীতে চীনের দারিদ্র্যবিমোচন লড়াইয়ে সার্বিক জয় অর্জিত হয়েছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সমগ্র চীনে দারিদ্র্যবিমোচন বিষয়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীনকে চরম দারিদ্র্যমুক্ত ঘোষণা করেন।

 

গত আট বছরে চীনের ৮৩২টি দরিদ্র জেলা এবং এক লাখ ২৮ হাজার দরিদ্র গ্রাম দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে। বর্তমান মানদণ্ড অনুযায়ী প্রায় ১০ কোটি গ্রামীণ দরিদ্র লোক সম্পূর্ণ দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছেন। নতুন যুগে দারিদ্র্যমুক্তির লক্ষ্য ও কাজ সময় মতো শেষ হয়েছে। এটি হলো মানব ইতিহাসে দারিদ্র্যমুক্তির অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত।

 

বিশ্বের দরিদ্র লোকের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনাকে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার প্রথম কর্তব্য হিসেবে নির্ধারণ করে জাতিসংঘ। এটি ২০০০ সালে নির্ধারণ করা হয়। চীন বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে এ লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করেছে।

তারপর ২০১৫ সালে জাতিসংঘ ২০৩০ সালে বিশ্বকে চরম দারিদ্র্যমুক্ত করার প্রস্তাব উত্থাপন করে। এ লক্ষ্যও চীন জাতিসংঘ নির্ধারিত সময়ের ১০ বছর পূর্বে অর্জন করে। বিশ্বে চীনের মতো দ্বিতীয় আর কোন দেশ এত অল্প সময়ে এত বেশি সংখ্যক লোককে দারিদ্রমুক্ত করতে পারে নি।

১৯৯০ সালের বিশ্ব ব্যাংকের মানদণ্ড অনুযায়ী,  বিশ্বের দরিদ্র লোকের মধ্যে চীনের অনুপাত ছিল ৩৬.২শতাংশ এবং তখন চীনের লোকসংখ্যার ৬৬.৩ শতাংশ দরিদ্র ছিল। ২০১৫ সালে চীনের লোকসংখ্যার মধ্যে মাত্র ০.৭ শতাংশ দরিদ্র ছিল।

১৯৮১ সালে বিশ্বের প্রত্যেক ১০০জন দরিদ্র মানুষের মধ্যে ৪৬জন ছিল চীনা এবং ২০১৫ সালে বিশ্বে ১০০জন দরিদ্র লোকের মধ্যে মাত্র একজন ছিল চীনা।

গত ৮ বছরে ৯কোটি ৮৯লাখ ৯০হাজার গ্রামীণ দরিদ্র লোক চরম দারিদ্র্যমুক্ত হয়।  তা প্রতি বছরে মাঝারি আকার একটি দেশের সকল মানুষের দারিদ্রমুক্ত হবার সমান। বিশ্বের দারিদ্র্যমুক্তিতে চীনের অবদান ৭০ শতাংশের বেশি।

দারিদ্র্যমুক্তি মূল লক্ষ্য নয়। বরং, এটি নতুন জীবন ও নতুন পরিশ্রমের সূচনা। চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনার আলোকে চীন টেকসই উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা প্রণয়ন করবে এবং গ্রামের সঞ্জীবনীশক্তি পুনরুদ্ধার কৌশলের সঙ্গে দারিদ্র্যমুক্তির সাফল্য সমন্বয় করবে।

বর্তমানে বিশ্বে চরম দরিদ্র লোকসংখ্যা ৭০ কোটির বেশি এবং নানা দেশের ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান আরও বাড়ছে। এমন প্রেক্ষাপটে চীন যেমন অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়ন করছে, তেমনি চরম দারিদ্র্যমুক্তি বাস্তবায়ন করেছে। তা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব ও সমাজবাদী ব্যবস্থার প্রাধান্যের প্রতিফলন। বিশ্বের দারিদ্র্যবিমোচন কাজে চীন বুদ্ধি ও পরিকল্পনা প্রদান করছে এবং মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠনে শাক্তি যোগাচ্ছে।(শিশির/এনাম/রুবি)