দারিদ্র্যবিমোচনের সুখের পথ
2021-02-27 18:08:42

১৯৯৭ সালে সি চিন পিং নিংস্যিয়া হুই জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল পরিদর্শন করেন। তখন তিনি দরিদ্র বাসিন্দাদেরকে ভাল পরিবেশে স্থানান্তের প্রস্তাব করেন। এ ব্যবস্থা পরে চীনের দারিদ্র্যবিমোচনের পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য ভিত্তি স্থাপন করে।

এ বছরের বসন্ত উত্সব উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট সি বিজিয়ে ও গুইইয়াংয়ে পরিদর্শন করেন। বিজিয়ে আগে ছিল চীনের পশ্চিমাঞ্চলে সবজেয়ে দরিদ্র এলাকা। স্থানীয় হুয়াউ গ্রাম ছিল হতদরিদ্র গ্রাম। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ভাল অবস্থায় স্থানান্তর পরিকল্পনা এবং বৈশিষ্ট্যময় পশুপালন ও পর্যটন শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামটি দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট সি মিয়াও জাতির গ্রামবাসী চাও ইউ স্যুয়ে’র বাড়িতে গিয়েছেন। তিনি চাও’র খোঁজখবর নিয়েছেন।

চাও বলেন, আগের বাড়ির অবস্থা খুব খারাপ ছিল। সেখানে ট্যাপের জল, বিদ্যুত্ ও সড়ক ছিল না। কিন্তু বর্তমানে তাঁরা দুই তলা ঘর নির্মাণ করেছেন। এ কথা শুনে সি চিন পিং অনেক খুশি হন। তিনি তাঁদের আরো সুন্দর জীবন কামনা করেন।

চাও ইউ স্যুয়ে পরিবার দারিদ্র্যমুক্ত হওয়ার গল্প আসলে হলো চীনের দরিদ্র এলাকাগুলোর হাজার হাজার পরিবারের একটি প্রতিলিপি।

নিংস্যিয়া হু জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ইনছুয়ান শহরের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে হ্যলান পাহাড়ের নিচে অবস্থিত মিননিং নামের একটি থানা। বহু বছর আগে থানায় পানির অভাব ছিল। তখন স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মান খুবই নিম্ন ছিল। তখনকার কঠিন জীবন সম্পর্কে স্থানীয় বাসিন্দা হাই গুও বাও বলেন,

‘আগে আমাদের বাড়ি আসলে ছিল একটি গুহার মতো। খাবার ও টাকা যথেষ্ট ছিল না।’

১৯৯৬ সালে ফুজিয়ান প্রদেশের সিপিসি’র উপ-সম্পাদক সি চিন পিং নিংস্যিয়াকে ফুজিয়ান প্রদেশের সহায়ক গ্রুপের নেতৃত্ব করতেন। পরের বছরে সি চিন পিং নিংস্যিয়ায় পরিদর্শন করেন। তিনি ফুজিয়ান ও নিংস্যিয়ায় যৌথভাবে নির্মিত একটি উন্নয়ন এলাকা নির্মাণের প্রস্তাব করেন। এটি হলো মিননিং গ্রাম। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে সি চিন পিং চীনা প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনরায় নিংস্যিয়া পরিদর্শন করেন।

২০ বছর পর বর্তমানে মিননিং গ্রামের লোকসংখ্যা ৮ হাজার থেকে ৬০ হাজারে উন্নীত হয়েছে। আগে যেখানে ছিল মরুভূমি, এখন সেখানে আধুনিক প্রাকৃতিক গ্রাম হয়েছে।

সিপিসি’র অষ্টাদশ জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলনের পর সি চিন পিং চীনের ১৪টি ভীষণ দরিদ্র অঞ্চল পরিদর্শন করেন। তিনি নিজে চীনের দারিদ্র্যবিমোচন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।

তিনি বলেছিলেন, জনগণের সুখ হলো সিপিসি’র সুখ। সিপিসির দায়িত্ব হলো জনগণের সেবা করা। নাগরিকদের আনন্দ হলো সিপিসি’র কাজ।

পরিসংখ্যান অনুসারে, চীনের ত্রয়োদশ পাঁচপালা পরিকল্পনার সময় চীনের ৯৬ লাখেরও বেশি দরিদ্র নাগরিক নতুন বাড়িঘরে স্থানান্তরিত হয়েছেন। তাঁদের বার্ষিক গড় আয় ২০১৬ সালের ৪.২ হাজার থেকে ২০১৯ সালে ৯.৩ হাজার ইউয়ান আরএমবিতে বৃদ্ধি পায়। বৃদ্ধির হার ছিল ৩০ শতাংশ।

২০২১ সালে চীনের চতুর্দশ পাঁচপালা পরিকল্পনা কার্যকর শুরু হয়। চীন আরেক ধাপে নীতি ও ব্যবস্থা উন্নয়ন করে দারিদ্র্যবিমোচনের সাফল্য জোরদার করবে।