‘চীনে চরম দারিদ্র্য নির্মূল একটি ঐতিহাসিক অর্জন’
2021-02-25 16:00:08

ফেব্রুয়ারি ২৫: গত ৮ বছরে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে কেন্দ্র করে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)’র কেন্দ্রীয় কমিটির শক্তিশালি নেতৃত্বে বিশ্বের সবেচয়ে বড় আকারের দারিদ্র্যবিমোচন যুদ্ধে জয়ী হয়েছে। এ সময়ে চীন প্রায় ১০কোটি মানুষের চরম দারিদ্র্য দূর করেছে। জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রায় নির্ধারিত সময়ের ১০ বছর আগে দারিদ্র্যবিমোচনের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করেছে চীন। 

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (ইফাদ) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের প্রধান নাইজেল ব্রেট সিএমজিকে দেওয়া এক স্বাক্ষাতকারে জানান, চীনে চরম দারিদ্র্য নির্মূল করা একটি ঐতিহাসিক অর্জন। এ পর্যন্ত বিশ্বের অন্য কোন দেশ এত দ্রুতগতিতে তা বাস্তবায়ন করতে পারে নি। 
               
নাইজেল দীর্ঘ সময় ধরে একই পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাই দারিদ্র্যবিমোচন খাতে তাঁর অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি জানেন যে, চীনের চরম দারিদ্র্য দূর করার এ সফলতা সহজে অর্জিত হয় নি। তাঁর মতে, এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।

তিনি বলেন,“যদি আপনি এখনকার পরিস্থিতি দেখেন, তাহলে বুঝতে পারবেন যে, কোন একটি দেশ এত দ্রুতগতিতে তা সম্পন্ন করতে পারে না। এ অর্জন অতন্ত্য গুরুত্বপূর্ণ। তা একটি ঐতিহাসিক অর্জন। এটি কেবলমাত্র কিছু সংখ্যা নয়, বরং কীভাবে দ্রুতগতিতে দারিদ্র্যবিমোচন বাস্তবায়ন করতে হয়।”

দারিদ্র্যবিমোচনে চীনের অভিজ্ঞতার উপর তাঁর অনেক গবেষণা রয়েছে। তাঁর চোখে চীনের দারিদ্র্যবিমোচনের সফলতা অনেক উপাদান একসাথে কাজ করার ফলাফল। প্রথমত, কৃষক ও গ্রামকে নীতিবিধি তৈরী করার কেন্দ্রীয় স্থানে রাখা হয়, এবং লক্ষ্য ভিত্তিক পদ্ধতির বাস্তবায়ন করা হয়। দ্বিতীয়ত, দারিদ্র্যবিমোচনে ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তিগত নতুনত্বকে গুরুত্ব দেওয়া । তৃতীয়ত, গ্রামাঞ্চলে সড়ক নির্মাণ, জলসেচন ও নিষ্কাশন, টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্কসহ নানা অবকাঠামো খাতে বড় আকারের পুঁজি বিনিয়োগ করা হয়। কৃষির উতপাদন ও বাজারকে ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত করা হয়।

 তিনি বলেন,“চীন অবশেষে চরম দারিদ্র্যকে নির্মূল করতে সফল হয়েছে। তার কারণ হল সরকার কৃষকদেরকে নীতিবিধির কেন্দ্রীয় স্থানে রেখেছে, প্রযুক্তি ও অবকাঠামোকে অতন্ত্য গুরুত্ব দিয়েছে এবং বিপণন ও বাজারের সাথে সংযুক্ত করেছে। এ তিনটা কারণে এ ঐতিহাসিক অর্জন বাস্তবায়িত হয়।”

দারিদ্র্যবিমোচনের উদ্ভাবনী ব্যবস্থাসমূহের মধ্যে লক্ষ্য ভিত্তিক পদ্ধতির বাস্তবায়ন করার কৌশল চীনে চরম দারিদ্র্যবিমোচনের প্রক্রিয়ায় মৌলিক ভূমিকা পালন করে। তিনি জানান, চীনে বাস্তবায়িত ইফাদের ৩৩টা কার্যক্রমের সাথে লক্ষ্য ভিত্তিক পদ্ধতির বাস্তবায়ন করা হয়। 

তিনি বলেন,“এ নীতির সুবিধা অনেক। সরকার লক্ষ্য ভিত্তিক পদ্ধতির বাস্তবায়ন করার কৌশলের মাধ্যমে স্পষ্টভাবে জানতে পারে যে, কে দরিদ্র, কোন অঞ্চল দরিদ্র্য, দারিদ্র্যের কারণ কী। সংশ্লিষ্ট পরিস্থিতি অনুসারে বিশেষ নীতিবিধি তৈরী করতে পারে। লক্ষ্য ভিত্তিক পদ্ধতির বাস্তবায়ন করার খাতে চীন অনেক ভাল করেছে। এতে সবচেয়ে অরক্ষিত জণগোষ্ঠীসহ সবাইকে অর্ন্তভক্ত করা যায়। যাতে স্থানীয় জনগণের জীবনে স্বচ্ছলতা বাস্তবায়ন করা যায়।”

তিনি আরও জানান, দারিদ্র্যবিমোচনে চীনের অভিজ্ঞতা অতন্ত্য গুরুত্বপূর্ণ। অনেক বছর ধরে আন্তর্জাতিক সমাজ তাকে ব্যাপকভাবে বাস্তবায়ন করে আসছে। ভবিষ্যতে ইফাদ চীনের সাথে সহযোগিতা জোরদার করবে।

 তিনি বলেন,“চীনের অভিজ্ঞতা বিশ্বের অন্য দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তাতপর্য্য রয়েছে। চীনের সফলতার অভিজ্ঞতা থেকে আমরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় শিখতে পেরেছি। তা হল দারিদ্র্যবিমেচন কল্পনা নয়, তা বাস্তবায়ন করা যায়। আমাদের সময়েই বাস্তবায়ন সম্ভব।”

(আকাশ/এনাম/রুবি)