দেহঘড়ি-৫
2021-02-19 21:12:47

দিন যত যাচ্ছে মানুষ প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছে শারিরীক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার। সন্ধান করছে স্বাস্থ্য ভালো রাখার সহজ উপায়। এ প্রচেষ্টায় সঙ্গী হতে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের স্বাস্থ্য বিষয়ক সাপ্তাহিক আয়োজন-‘দেহঘড়ি’র ।

‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে রয়েছে স্বাস্থ্যখাতের একটি সুখবর, স্বাস্থ্য বুলেটিন, খাদ্যের গুণাগুণ নিয়ে আয়োজন ‘কী খাবো কী খাবো না’, প্রাকৃতিকভাবে রোগপ্রতিরোধ ও রোগমুক্তি নিয়ে কথন ‘ভাল থাকার আছে উপায়’, সাক্ষাৎকারভিত্তিক আয়োজন ‘আপনার ডাক্তার’ এবং ‘মৌসুমী হেলথ টিপস’।

## সুখবর:করোনা মহামারি থেকে বেরিয়ে আসার পথে বাংলাদেশ

দেহঘড়ি-৫_fororder_shengwu1

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। সংস্থাটি বলছে, কোনও দেশে ৩ সপ্তাহ ধরে শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে সে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলা যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে গত ৪ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে শনাক্তের হার রয়েছে ৫ শতাংশের নিচে। এমনকি বেশ কয়েকদিন ধরে শনাক্তের হার ২ থেকে ৩ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। অর্থ্যাৎ ১০০ জন মানুষের নমুনা পরীক্ষা করে এখন করোনা পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে ২ থেকে ৩ জনের। আর মৃত্যুর হার প্রায় দেড় শতাংশ। সব মিলিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা মহামারি থেকে পর্যায়ক্রমে সরে আসছে বাংলাদেশ।

এ নিয়ে আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীরের সঙ্গে কথা বলেছে চীন আন্তর্জাতিক বেতার। তিনি বলেন, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ এখন নিম্নমুখী। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাই টিকা নিলে পরিস্থিতি আরো ভালোর দিকে যাবে।

দেহঘড়ি-৫_fororder_shengwu2

ডা. এস এম আলমগীর, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, আইইডিসিআর

তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক মোজাহেরুল হক বলছেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া করোনা বুলেটিনের তথ্যে প্রকৃত চিত্র উঠে আসছে না। কারণ আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যারা আসছেন তাদের সবার তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে না। এজন্য তিনি বলছেন, আশঙ্কার জায়গা থেকেই যাচ্ছে। 

দেহঘড়ি-৫_fororder_shengwu3

অধ্যাপক মোজাহেরুল হক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক উপদেষ্টা

পর্যায়ক্রমে করোনায় শনাক্ত ও মৃ্ত্যুর হার কমে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে বিশ্ব তালিকাতেও। আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান-ভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশের তালিকায় কয়েক ধাপ পিছিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৩৩ নম্বরে।

## হেলথ বুলেটিনসাড়ে ১৮ লাখ মানুষ টিকা নিয়েছে বাংলাদেশে

দেহঘড়ি-৫_fororder_shengwu4

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের গণটিকাদান কার্যক্রম শুরুর পর থেকে গেল ১১ দিনে টিকা নিয়েছেন ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৩ জন ।  গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুধু রাজধানী ঢাকাতেই টিকা গ্রহণ করেছেন প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। সবাইকে উত্সাহিত করতে প্রতিদিনই টিকা নিচ্ছেন সরকারের উর্ধ্বতণ কর্মকর্তা দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

 সারাদেশে ১ হাজারেরও বেশি কেন্দ্রে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত চলছে এ কার্যক্রম। এতে কাজ করছেন ৪২ হাজারেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী। বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী টিকা নিয়েছেন ২ লাখ ৬১ হাজার ৯৪৫ জন। তবে, সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শুক্রবার বন্ধ ছিলো সারাদেশের টিকাদান কমর্সূচি। শনিবার থেকে আবারও একযোগে শুরু হবে এ কার্যক্রম।

এদিকে ভারত থেকে আসা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাংলাদেশে ৫৩০ এরও বেশি মানুষের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

 

** ভারতীয় টিকা ফেরত পাঠাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা

দেহঘড়ি-৫_fororder_shengwu5

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটকে ১০ লাখ ডোজ করোনার টিকা ফেরত নিতে বলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্য ইকোনমিক টাইমস জানায়, গত সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকায় ১০ লাখ ডোজ করোনার টিকা পাঠায় সেরাম ইনস্টিটিউট।

অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা পৌঁছানোর পর সেখানে ছোট পরিসরে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হয়। এতে দেখা যায়, করোনার নতুন ধরনে আক্রান্ত হওয়ার পর হালকা থেকে মাঝারি অসুস্থতার বিরুদ্ধে এই টিকা সীমিত সুরক্ষা দেয়। এই ফলাফলের পরই দক্ষিণ আফ্রিকা অক্সফোর্ডের টিকা প্রদান স্থগিত করে।

দেশটিতে আরো ৫ লাখ ডোজ টিকা পাঠানোর কথা ছিল সেরামের। এর আগেই সব টিকা ফেরত নিতে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটকে চিঠি দিল দক্ষিণ আফ্রিকা। 

 

** বাংলাদেশকে টিকা সহায়তা দিতে চায় চীন

দেহঘড়ি-৫_fororder_shengwu6

বাংলাদেশকে টিকা সহায়তা দিতে চেয়েছে চীন। দেশটির এমন আগ্রহের কথা জানিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। চীনা নববর্ষ উপলক্ষে সম্প্রতি এক ভিডিও বার্তায় লি জিমিং বলেন, কোভেক্স উদ্যোগের আওতায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ১ কোটি ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে চীন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে লেটার অব ইন্টারেস্ট বা আগ্রহপত্র পেলেই টিকা সরবরাহ কার্যক্রম শুরু করবে চীন।

##কি খাবো, কি খাবো নাবরই তবে এতো ভাল!

দেহঘড়ি-৫_fororder_shengwu7

কুল বা বরই অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি ফল। শীত থেকে গরমের শুরু পর্যন্ত বাজারে পাওয়া যায় এই ফল। নানা জাতের বরই হয় এখন বাংলাদেশে। পুষ্টিবিদেরা বলেন, বরইয়ে আছে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। বরই এমন একটি ফল যেটা কাঁচা হোক বা পাকা, যেকোনো অবস্থাতেই খাওয়ার জন্য উপযুক্ত। এটি শুকিয়ে অনেক দিন সংরক্ষণ করা যায়। কাঁচা ও শুকনো কুল দিয়ে চমৎকার চাটনি ও আচার তৈরি করা যায়।

চলুন জেনে নেই বরইয়ের নানা উপকারী দিক সম্পর্কে:

ক্যান্সার প্রতিরোধ: বরইয়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকে, যা টিউমারের উপর সাইটোটক্সিক প্রভাব বিস্তার করে। এর ফলে শরীরে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

রক্ত পরিশুদ্ধি: শুকনো বরইয়ের মধ্যে স্যাপোনিন, অ্যালকালয়েড ও ট্রাইটারপেনয়েড থাকে। এগুলো রক্ত পরিশুদ্ধ করে এবং হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।

দুশ্চিন্তা: ভিটামিন-সি, এ ও বি-সহ বরইয়ে যে কয়েক রকমের ভিটামিন থাকে তা অবসাদ ও দুশ্চিন্তা করার জন্য ভীষণ কার্যকরী।

অনিদ্রা: বরইতে থাকা শক্তিশালী রাসায়নিক থায়ামিন অনিদ্রা ও দুশ্চিন্তা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। তাই যারা নিদ্রাহীনতা ও দুশ্চিন্তায় ভোগেন তাদের জন্য একটা ভাল ওষুধ এ ফল।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: এ ফলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি র‍্যাডিকেলগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। এছাড়াও এর ভিটামিন সি, এ, বি, ফাইটোকেমিক্যাল রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

লিভারের সুরক্ষা: শরীরের ফ্রি র‍্যাডিকেলগুলো লিভারের ক্ষতি করে। বরইয়ের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারকে সুরক্ষা দেয়।

ওজন নিয়ন্ত্রণ: বরইতে ফ্যাট নাই বললেই চলে। ২ আউন্স বরই শরীরে ৪৪ ক্যালরি শক্তি যোগান দেয়, কিন্তু এর ফ্যাট প্রায় শূন্য। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণেও বরই সাহায্য করে।

হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি: বরইয়ে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও লোহাসহ অনেকগুলো ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়, যা হাড় শক্ত করে। এছাড়া এ ফল দাঁতের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে।

রক্ত সঞ্চালন: আয়রন ও ফসফরাস শরীরে রক্ত উৎপাদন এবং রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়া বেগবান করে।

 

## ভাল থাকার আছে উপায়:ওষুধ নয়, হাঁপানি থেকে মুক্তি পান ঘরোয়া উপায়ে

দেহঘড়ি-৫_fororder_shengwu8

অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগটি জীবননাশক নয়; তবে খুবই কষ্টদায়ক। এ রোগে প্রবল শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়, গলা সাঁই-সাঁই করে, বুকে প্রবল চাপ বোধ হয় এবং প্রচণ্ড কাশি হয়। হাঁপানির প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এবং পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের সাথে শ্বাসনালীর বিভিন্ন রকমের সংবেদশীলতাকে এর জন্য দায়ী মনে করা হয়। সাধারণভাবে যেসব উত্তেজক উপাদান হাঁপানির জন্য দায়ী সেগুলো হলো অ্যালার্জি, ভাইরাসের সংক্রমণ, আবহাওয়া, ওষুধ, মানসিক চাপ ও পেশাগত কারণ। শীত ও বসন্তকাল সবচেয়ে বেশি হাঁপানি হয়। বাবা-মায়ের এ রোগ থাকলে, এটা সন্তানের মধ্যে সংক্রামিত হওয়ার উচ্চমাত্রার ঝুঁকি থাকে।

হাঁপানি সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য নয়। তবে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে বা কতগুলো নিয়ম মেনে চললে এ রোগের কষ্ট থেকে বাঁচা যায়। জানিয়ে দিচ্ছি এমন কতগুলো নিয়ম:

  • শীত ও বসন্তে হাঁপানির প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। শীতল বাতাস হাঁপানির উপসর্গ বাড়িয়ে দেয়। তাই ঠাণ্ডা বাতাস যেন সরাসরি শ্বাসনালীতে প্রবেশ না করে সেজন্য মাস্ক বা মুখে রুমাল ব্যবহার করুন।
  • মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটা ত্যাগ করুন এবং নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করুন। নাক দিয়ে শ্বাস নিলে শ্বাসনালীর তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এতে শ্বাসনালী স্বস্তি পায়।
  • ভাইরাসের সংক্রমণ হাঁপানির কষ্ট বাড়িয়ে দেয়। তাই ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যত বেশি সম্ভব চোখ, নাক বা মুখে হাত দেওয়া পরিহার করুন।
  • ধুলো হাঁপানি রোগীর এক বড় শত্রু। সেকারণে নিজে ঘর ঝাড়ামোছা, কাপড় পরিষ্কার করা থেকে বিরত থাকুন। সম্ভব হলে ঘর ঝাড়ামোছার সময় বাইরে থাকুন।
  • বিছানায় থাকা ক্ষুদ্র কীট হাঁপানি বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই বিছানার চাদর, বালিশের কভার সপ্তাহে অন্তত একবার ধুতে হবে এবং কমপক্ষে এক ঘণ্টা রোদে রাখতে হবে, যাতে এসব ক্ষুদ্র কীট মরে যায়।
  • রান্না করার সময় যে গন্ধ নির্গত হয়, সেটা হাঁপানি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই রান্নার সময় রান্নাঘরের জানালা খুলে রাখুন, যাতে গন্ধ দ্রুত বেরিয়ে যেতে পারে। তাছাড়া রান্নাঘরের গন্ধ যাতে শোবার ঘরে প্রবেশ করতে না পারে, সে দিকেও খেয়াল রাখুন।

## আপনার ডাক্তার:  ডা. ফারিয়া বারডেম 

এ পর্বে আজ আমরা কথা বলেছি থাইরয়েড-জনিত সমস্যা নিয়ে। আক্রান্তের সংখ্যার বিচারে থাইরয়েডজনিত রোগের অবস্থান বিশ্বে ১ নম্বরে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতাংশ থাইরয়েডজনিত সমস্যায় আক্রান্ত। তাদের মতে, এ সমস্যায় বাংলাদেশে আক্রান্ত প্রায় ৫ কোটি মানুষ, যাদের মধ্যে ৩ কোটি মানুষেই জানে না তারা এ সমস্যায় আক্রান্ত। এ রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতাই মুখ্য। থেইরয়েডজনিত নানা সমস্যা নিয়ে কথা বলতে আজ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন হরমোন বিশেষজ্ঞ ডা. ফারিয়া আফসানা। ডা. ফারিয়া বারডেম হাসপাতালে এন্ডোক্রাইন বিভাগরে সহকারী অধ্যাপক।

দেহঘড়ি-৫_fororder_shengwu9

# মৌসুমী স্বাস্থ্য পরামর্শ: বসন্তকালের রোগ প্রতিরোধে করণীয়

দেহঘড়ি-৫_fororder_shengwu10

আগমন ঘটেছে ঋতুরাজ বসন্তের। প্রকৃতিতেও সাড়া পড়েছে তার। বসন্তকাল মানেই প্রকৃতির নতুন সাজ এবং মানুষের আনন্দ-উদযাপন। কিন্তু প্রকৃতির এই সাজ আর আনন্দ-উদযাপনের আড়ালে ঢাকা পড়ে যায় এ সময়ে আগমন ঘটা নানা ধরনের অসুখ-বিসুখসহ স্বাস্থ্য ঝুঁকি। জ্বর, সর্দি-কাশি ও অ্যালার্জির সমস্যাও বেড়ে যায় বসন্তকালে। তবে কয়েকটি খাদ্য গ্রহণ করলে এবং কতগুলো নিয়ম অনুসরণ করলে এসব রোগব্যাধি থেকে দূরে থাকা যায়। জানিয়ে দিচ্ছি এমন কতগুলো পদ্ধতি:

মধু: রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মধু বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। মৌসুম পরিবর্তনের এই সময় প্রতিদিন দুই চামচ করে মধু খান। এতে জ্বর, সর্দি-কাশি ও অ্যালার্জির সমস্যা দূরে থাকবে।

অ্যাপেল সিডার ভিনেগার: অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মৌসুমি রোগ প্রতিরোধে ভালো কাজ করে। সুস্থ থাকতে তাই প্রতিদিন এক গ্লাস পানির সঙ্গে এক চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার, এক চামচ লেবুর রস এবং এক চামচ মধু মিশিয়ে খান।

আনারস: মৌসুমি রোগব্যাধি দূর করতে আনারস ভালো ভূমিকা রাখে। এতে থাকা ব্রোমেলেইন, ভিটামিন বি, সি এবং অন্যান্য উপাদান সব ধরনের জ্বর, সর্দি-কাশি ও অ্যালার্জি প্রতিরোধ করে।

অর্গানিক শাকসবজি: শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং বায়ুবাহিত প্রতিরোধ করতে পারে অর্গানিক অর্থাৎ জৈব চাষাবাদ পদ্ধতিতে উৎপাদিত শাকসবজি। তাই এ মৌসুমে বেশি পরিমাণে বাঁধাকপি, বিট ও গাজরের মতো অর্গানিক সবজি খান। গাজরে থাকা বিটা ক্যারোটিন বিশেষভাবে সাহায্য করে সংক্রমণের সঙ্গে লড়তে।

ভিটামিন সি: ঠাণ্ডার সমস্যা ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি-জাতীয় খাবার, যেমন কমলা, আঙুর, মালটা, লেবু খেতে হবে নিয়মিতভাবে। এক্ষেত্রে আদাও খুব ভালো কাজ করে। সকালে আদা মেশানো গরম পানি পান করতে পারেন।

ভিটামিন ডি জিংকসমৃদ্ধ খাবার:  স্যামন, সার্ডিন, ডিমের কুসুম, মাংস ও কলিজার মতো ভিটামিন ডিসমৃদ্ধ এবং বাদাম, বীজ, ডাল ও দুগ্ধপণ্যের মতো জিংকসমৃদ্ধ খাবার সর্দি-কাশি, জ্বর, গলাব্যথা ও জ্বরজ্বর ভাব প্রতিরোধ করে। তাই বসন্তে নিয়মিত খান এসব খাবার।

সজনে ডাঁটা: বসন্তকালে জ্বর, সর্দি-কাশি ও অ্যালার্জির মতো যেসব রোগের প্রকোপ দেখা দেয়, সেগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সজনে ডাঁটা অত্যন্ত কার্যকর। তাই খাদ্যতালিকায় সজনে ডাঁটা রাখুন।

তুলসিপাতা: জ্বর, সর্দি, কাশি ও গলাব্যথার চিকিৎসায় তুলসিপাতা অতুলনীয়। এসব রোগ প্রতিরোধে তুলসিপাতার রস খাওয়া যায়। তুলসিপাতার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।

পরিচ্ছন্নতা: এ মৌসুমে শরীর, বিশেষ করে হাত, পরিষ্কার রাখতে হবে সব সময়। গোসলের পর চুল শুকিয়ে ফেলতে হবে। ভেজা চুল বেঁধে রাখা যাবে না।

টকদই: টকদই শরীরের টক্সিন বা দূষিত পদার্থ দূর করে রোগ প্রতিরোধে সক্ষম করে তোলে। দইয়ের প্রোবায়োটিক উপাদান শরীরে সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। তাই বসন্তে নিয়মিত টকদই খান।

  • দেহঘড়ি অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত জানতে চাই আমরা আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত