সিএমজি সম্পাদকীয়: চীনে নিষিদ্ধ হবার জন্য বিবিসি নিজেই দায়ী
2021-02-12 19:15:41

সিএমজি সম্পাদকীয়: চীনে নিষিদ্ধ হবার জন্য বিবিসি নিজেই দায়ী_fororder_0212yang5-1

ফেব্রুয়ারি ১২: চীনের জাতীয় বেতার ও টেলিভিশন ব্যবস্থাপনা ব্যুরো গতকাল (বৃহস্পতিবার) জানায়, বিবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ চ্যানেলটি চীনসংক্রান্ত তথ্য প্রচারে চীনের সংশ্লিষ্ট বিধি লংঘন করেছে, সংবাদ প্রচারে সততা ও নিরপেক্ষতার নীতি লংঘন করছে, চীনের জাতীয় স্বার্থ ও জাতিগত ঐক্যের চেতনার ক্ষতি করেছে। এ জন্য চীন সরকার চীনে বিবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজের সম্প্রচার নিষিদ্ধ করেছে। নতুন বছরে চীনে এই চ্যানেলের নিউজ ও অনুষ্ঠান সম্প্রচারের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

বলা বাহুল্য, এটা চীন সরকারের একটি বৈধ পদক্ষেপ। জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সরকারকে এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে হয়। আর চীনে নিষিদ্ধ হবার জন্য খোদ বিবিসি নিজেই দায়ী।

চীনে বহু বছর ধরে প্রচারিত হয়ে আসছে বিবিসি-র অনুষ্ঠানমালা। সংবাদমাধ্যমটি খুব ভালোভাবেই চীনের সংশ্লিষ্ট নিয়ম ও বিধান জানে। ‘চীনের গর্ব ও স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর’ এবং ‘বিচ্ছিন্নতা, সহিংসতা, বৈষম্য ও অস্থিতিশীলতাকে উস্কে দেওয়া’ তথ্য চীনে প্রচার করা যায় না। এসব কিছু জেনেও বিবিসি গুরুতরভাবে সংশ্লিষ্ট নিয়ম লংঘন করেছে।

সিএমজি সম্পাদকীয়: চীনে নিষিদ্ধ হবার জন্য বিবিসি নিজেই দায়ী_fororder_0212yang5-2

বিশেষ করে গত ছয় মাসে বিবিসি যেসব গুজব ছড়িয়েছে,  তা সাংবাদিকতার নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও অগ্রহণযোগ্য।

কোভিড-১৯ মহামারীর প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি বিবিসি ‘হুপেই ফিরে যাওয়া’ নামক একটি প্রমাণ্যচিত্রে উহানকে ‘মহামারীর উত্স’ বলে আখ্যায়িত করে এবং চীনের সন্ত্রাসদমন মহড়ার একটি ভিডিও ক্লিপ ব্যবহার করে এই সিদ্ধান্ত দিয়ে দেয় যে, চীনে মহামারী প্রতিরোধ বিভাগ ‘বল প্রয়োগ করে মানবাধিকার লংঘন’ করছে।

তা ছাড়া, সিনচিয়াং বিষয়ে বিবিসি গত ছয় মাসে ৪০টি প্রবন্ধের মাধ্যমে সেখানে ‘বাধ্যতামূলক শ্রম’ ও ‘গণহত্যা’র গুজব ছড়িয়েছে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বিবিসি সিনচিয়াংয়ের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ‘সিস্টেমেটিক ধর্ষণ’-এর অভিযোগ আনে, যার কোনো ভিত্তি নেই।  তারা সাগুরে দাওতি নামক একজন উইগুর নারীর বক্তব্য উল্লেখ করেছে। অথচ এ নারী কখনও প্রশিক্ষণকেন্দ্রে থাকেইনি!

এমন পক্ষপাতদুষ্ট মিথ্যা ও জাল খবর প্রচার করার পর বিবিসি নিজেকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বিশ্বস্ত আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম’ বলে দাবি করতে পারে কি? তাদের কি লজ্জা-শরম বলে কিছু নেই? জাল খবর প্রচার করে কিভাবে বিশস্ত হওয়া যায়? কোন দেশ এমন অপপ্রচেষ্টাকে সহ্য করবে?

আসলে বিবিসি পক্ষপাতদুষ্ট ও জাল খরব প্রচারের জন্য আগে থেকেই কুখ্যাত। ২০১৯ সালে বিবিসিতে ১১ বছর ধরে কাজ করার পর পদত্যাগ করেন আন্না ব্লিস। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, বিবিসি সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র থাকার মিথ্যা খবর সৃষ্টি করেছিল। তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশরা বিবিসির খবর দেখার সময় সাবধান! কারণ, তারা সত্যতা লুকিয়ে রাখে এবং জাল খবর বানায়।’ রাশিয়ার নিরাপত্তা সম্মেলনের সচিব পাত্রুশেভ বলেছেন, ‘বিবিসি এখন জাল খবর তৈরির কারখানায় পরিণত হয়েছে। তাদের বানানো জাল খবর দেখে ব্রিটিশরা নিজেরাও হাসাহাসি করে।’

বিবিসির আছে ৯৯ বছরের ইতিহাস। নিজেদের কর্মদোষেই এই প্রাচীন সংবাদমাধ্যমটি এখন চীনে নিষিদ্ধ। এ অবস্থায় সংবাদমাধ্যমটির উচিত আত্মসমালোচনা করা। মনে রাখতে হবে, বিদেশি সাংবাদিকরা যতক্ষণ চীনের আইন মেনে সাংবাদিকতা করবে, ততদিন চীনা সরকার তাদের স্বাগত জানাবে ও সাহায্য করে যাবে। কিন্তু যারা বিদ্বেষ প্রচার করবে, চীনের বিরুদ্ধে না-হক কুত্সা রচনা করে তা প্রচার করবে, চীনে তাদের কোনো স্থান নেই। (ইয়াং/আলিম/ছাই)