ব্যবসাপাতি: ৮ম পর্ব
2021-02-11 20:18:33

অতি মুনাফালোভীদের দৌরাত্মে নিশ্চিত হচ্ছে না নিরাপদ খাদ্য:

বিশ্বব্যবস্থা সচল রাখতে অর্থনীতি, ক্ষুধা-দারিদ্র্য দূর করে সমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মাণে অর্থনীতি। অর্থনীতি হয়ে উঠছে রাজনীতির হাতিয়ার, কূটনীতির মূলমন্ত্র আর স্বকিয়তার রক্ষাকবচ। এই অর্থনীতির নানা সমাচার নিয়ে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সাপ্তাহিক আয়োজন ব্যবসাপাতি।

 

৮ম পর্বের আয়োজন:

দেশের নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন। বাংলাদেশে হৃদরোগে কেন এতো মানুষ মারা যাচ্ছে প্রতিবছর, এ নিয়ে থাকছে প্রতিবেদন। থাকছে অতি মুনাফালোভীদের দৌরাত্মে কেন অসহায় সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ এমন জিজ্ঞাসার খোঁজখবর।

মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িতদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্বাহী আদেশ অনুমোদন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মিয়ানমারের ওই সামরিক নেতাদের পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্য এবং তাদের মালিকানাধীন ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপরও এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, ওয়াশিংটন এই সপ্তাহে নিষেধাজ্ঞার প্রথম দফার লক্ষ্য নির্ধারণ করবে। যুক্তরাষ্ট্রে গচ্ছিত রাখা মিয়ানমার সরকারের ১ বিলিয়ন ডলার যেন সামরিক সরকার পেতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি ইউ উইন মিন্ট এবং স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক নেতা এবং কর্মীদের শিগগিরই মুক্তি দিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান জো বাইডেন।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় কমেছে টাইফয়েড-জন্ডিসসহ অনেক রোগ

হাত ধোয়া, মাস্ক পরাসহ করোনাকালীন যে অভ্যাসগুলো গড়ে উঠেছে, তাতে কমেছে টাইফয়েড, জন্ডিস ও হাঁপানী রোগের প্রকোপ। স্বাস্থ্যবিদরা বলছেন করোনা চলে গেলেও অভ্যাসগুলো ধরে রাখলে বড় ধরনের রোগবালাই থেকেও সুরক্ষা পাওয়া সম্ভব। শুনুন হাবিবুর রহমান অভির রিপোর্ট।

করোনা মহামারির সময় দীর্ঘদিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কারণে বেশ কিছু সুফল পেয়েছেন সাধারণ মানুষ। আগের চেয়ে অনেকাংশে কমে এসেছে টাইফয়েড, জন্ডিস ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। এ নিয়ে ভাইরাস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোশতাক আহমেদের সাথে কথা বলেছে চীন আন্তর্জাতিক বেতার। তাঁর এক বছরের গবেষণা বলছে, নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাসের কারণে ভাইরাস ও ব্যাকটেরেয়িাজনিত নানারকম রোগবালাই কমে গেছে।

তিনি বলেন, বাইরে বের হলেই মাস্ক পরার কারণে বায়ু দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে অনেকটাই সুরক্ষা পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে কমেছে অ্যাজমা ও হাঁপানি রোগীর সংখ্যাও।

জনস্বাস্থ্যবিদ কিংকর ঘোষ মনে করেন, শুধু স্বাস্থ্যবিধি নয়, পরিবর্তন এসেছে খাদ্য তালিকাতেও। যে অভ্যাস করোনাকালে তৈরি হয়েছে তা ধরে রাখলে বড় ধরনের জটিল রোগ থেকেও দূরে থাকা সম্ভব।

বিশেষ প্রতিবেদন:

হৃদরোগ স্ট্রোক ঠেকাতেট্রান্সফ্যাটএর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত নীতিমালা চূড়ান্ত হয়নি এখনো কমছে না অনাকাঙ্ক্ষীত মৃত্যু

মচমচে ভাজা খাবার ও আকর্ষণীয় বেকারি পণ্য সুস্বাদু হলেও ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে এর মধ্যে থাকা ট্রান্স ফ্যাট। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংখ্যার প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৬ হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ খাবারে অতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট। গড়ে মাসে মৃত্যুবরণ করছে ৪৮০ জন মানুষ। অথচ অনাকাঙ্খীত এ মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব খাদ্যে ট্রান্সফ্যাটের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে। যদিও বাংলাদেশের নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে একটি নীতিমালা তৈরির কাজে হাত দিয়েছে, কিন্তু দীর্ঘ প্রক্রিয়াগতকারণে এখনো আলোর মুখ দেখেনি এই নীতিমালা। বিশ্লেষকটা বলছেন, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের টিকা হিসেবে কাজ করতে পারে ট্রান্সফ্যাটের নিয়ন্ত্রণ। সাজিদ রাজু’র প্রতিবেদন।

রাজধানীর ইস্কাটন ও মগবাজার এলাাকয় সড়কের পাশেই মিলবে জমজমাট খাবারের আয়োজন। ফুটপাতে সারিবদ্ধ দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে হরেক রকম খাবার।

এই এলাকায় ৩০ বছর ধরে খাবারের ব্যবসা পরিচালনা করা ষাটোর্ধ্ব সিকান্দার আলী বলছিলেন, করোনার কারণে মাঝে কিছুটা কমলেও আবারো ফিরতে শুরু করেছে গ্রাহক। 

তেলে ভাজা লোভনীয় এসব খাবারের স্বাদ নিতে হাজির নানা জায়গা থেকে আসা মানুষ। তাদের কাছে প্রশ্ন ছিলো, রাস্তার পাশে মুখরোচক এসব খাবারের স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে কতোটা সচেতন তারা?

খাবার কিনতে আসা মো. নাবিল বলছিলেন, ফুটপাতের তেলে ভাজা খাবার নিয়ে সন্দহ সংশয় থাকলেও না খেয়ে উপায় থাকে না। স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও প্রয়োজনপূরণকেই বেশি গুরুত্ব দেন তিনি।

বাংলাদেশে সাধারণত ভাজা পোড়া এসব খাবার ও বেকারিপণ্য এবং হোটেল-রেস্তোরাঁয় মজাদার খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয় অতিরিক্ত তেল। কর্মজীবি মানুষের নাস্তার অনুসঙ্গ প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং বেকারি পণ্য তৈরি হয় বনস্পতি ঘি বা ডালডা দিয়ে। এসব তেল ও ডালডায় অধিক পরিমাণে থাকে এক ধরণের ফ্যাট বা স্নেহ জাতীয় খাদ্য উপাদান ট্রান্স ফ্যাটি এসিড বা সংক্ষেপে ট্রান্সফ্যাট। ট্রান্সফ্যাট রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল’ এর পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, কমায় ভালো কোলেস্টেরল এর মাত্রা। এই উপাদান রক্তবাহী ধমনিতে জমে বাধা সৃষ্টি করে রক্তচলাচলে।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্স ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী বলছিলেন,  বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১ লক্ষ ৩১ হাজার মানুষ সার্বিকভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় যার মধ্যে ৪.৪১ শতাংশ অর্থাৎ ৫৭৭৬ জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী এই ট্রান্সফ্যাট। অথচ ট্রান্সফ্যাটের ক্ষতি সম্পর্কে ধারণা নেই দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষেরই।  

ব্যবসাপাতি: ৮ম পর্ব_fororder_jingji

সোহেল রেজা চৌধুরী

অধ্যাপক, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্স ইনস্টিটিউট

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপাত্ত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৬ হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ এই ট্রান্সফ্যট। গড়ে মাসে মৃত্যুবরণ করছে ৪৮০ জন মানুষ। সংস্থার প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বে ট্রান্সফ্যাট ঘটিত হৃদরোগে মৃত্যুর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই ঘটে ১৫টি দেশে, যার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।  অথচ অনাকাঙ্খীত এ মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব খাদ্যে ট্রান্সফ্যাটের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে।

আশার কথা হচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে গঠিত  বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে নীতি প্রণয়নের। হয়েছে প্রাথমিক খসড়াও। তবে চূড়ান্ত নীতিমালা প্রণয়নের অগ্রগতি খুব ধীর। প্রশ্ন ছিলো সংস্থার চেয়ারম্যান আব্দুল কাইউম সরকারের কাছে, কতোটা এগিয়েছে এ নীতিমালার কাজ?

আব্দুল কাইউম সরকার জানান, নীতিমালা চূড়ান্ত হতে আরো অনন্ত ৬ মাস সময় লাগবে। এখন প্রাথমিক খসড়া যাচাই-বাছাই এর কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, সব পক্ষের মন্তব্য ও মূল্যায়ন নেয়ার পরই তা পাঠানো হবে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং এর জন্য।

ব্যবসাপাতি: ৮ম পর্ব_fororder_jingji1

মো: আব্দুল কাইউম সরকার, চেয়ারম্যান, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

সম্প্রতি ঢাকার শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২৪টি বনস্পতি ঘি বা ডালডার নমুনা বিশ্লেষণ করে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন। এ গবেষণায় দেখা গেছে, ৯২ শতাংশ নমুনায় ২ শতাংশের বেশি মাত্রার ট্রান্সফ্যাট আছে। শুধু তাই নয়, প্রতি ১০০ গ্রাম ডালডায় সর্বোচ্চ ২০.৯ গ্রাম পর্যন্ত ট্রান্সফ্যাট এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এর পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ করা মাত্রার চেয়ে ১০ গুণেরও বেশি।

বাংলাদেশের একটি বেসরকারি সংগঠন প্রগতির জন্য জ্ঞান –প্রজ্ঞা, ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণের দাবিতে সোচ্চার। সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের চান, দ্রুততম সময়ের মধ্যে নীতিমালাটি আলোর মুখ দেখুক। তার কাছে প্রশ্ন ছিলো, নীতিমালা করলেই খাদ্যে ট্রান্সফ্যাটের নিরাপদ মাত্রা নিশ্চিত করা সম্ভব কি? জবাবে আইনের প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, নীতিমালা প্রণয়নের সঙ্গে এর প্রয়োগেও নজর দিতে হবে।

ব্যবসাপাতি: ৮ম পর্ব_fororder_jingji2

এবিএম জুবায়ের, নির্বাহী পরিচালক, প্রগতির জন্য জ্ঞানপ্রজ্ঞা

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, খাবারে নির্দিষ্টমাত্রার ট্রান্সফ্যাট নিশ্চিত করা গেলে তা কাজ করবে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের টিকা হিসেবে।

 

বিশেষ প্রতিবেদন: খাদ্য সেবা আর মুনাফা লাভের ব্যবসার মধ্যে দূরত্ব ঘুচেছে কতটা?

নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের জন্য আইন আছে। আইন বাস্তবায়নের জন্য বড় আকারের কমিটি ও কর্তৃপক্ষও আছে। কিন্তু সাধারণের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত হয়েছে কি? খাদ্য সেবা আর মুনাফা লাভের ব্যবসার মধ্যে দূরত্ব ঘুচেছে কতটা? এসব আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, যেভাবে খাদ্য ব্যবস্থাপনার পুরো চেইনের সঙ্গে ক্ষতিকর ভারিধাতু ও রাসয়নিক মিশে যাচ্ছে তাতে দীর্ঘামেয়াদে ক্ষতির মুখে পড়বে গোটা জাতি। আজহার লিমনের রিপোর্ট।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজার। এখানে নিয়মিত বাজার করেন ইসরাত জাহান। বলছিলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় যাই কেনেনা কেন, আস্থা পান না।

সকাল বেলা অফিস ধরার তাড়া বেসরকারি চাকরীজীবী মনোয়ার হোসেনের। রাজধানীর কাকলী মোড়ের একটি হোটেল থেকে তড়িঘড়ি করে নাস্ত সেরে বের হলেন। অথচ হোটেলের রান্নাঘরে নেই পরিচ্ছন্নতা, নেই মান রক্ষার নূন্যতম প্রয়াস। মিস্টার মানোয়ার বলছিলেন, তারপরও বাধ্য হয়েই প্রয়োজন পূরণ করতে হয়।

খাবার কিংবা খাবারের উৎস নিয়ে এমন অভিব্যক্তি দেশের অধিকাংশ মানুষের। এ আস্থা ফেরাতে অবশ্য বছর জুড়ে হঠাৎ হঠাৎ অভিনব পদক্ষেপও নিতে দেখা যায়। এই যেমন ১ বছর আগে বেশ জোরোশোরে রাজধানীর হোটেলগুলোকে গ্রেডিং করার পদক্ষেপ নেয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। খাবারের মান, বিশুদ্ধতা, পরিবেশ, ডেকোরেশন, রান্নাঘরের পরিচ্ছন্নতা, ওয়েটারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ভিত্তিতে রেস্তোরাঁগুলোকে চার ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়। দেয়া হয় সুবজ ও কমলা রঙের চিহ্ন। বাস্তবতা হচ্ছে অনিরাপদ খাবারের পরিসরটা কেবল অপরিচ্ছন্নতা আর ভেজাল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নেই।

সম্প্রতি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ অ্যাটোমিক এনার্জি সেন্টার এক গবেষণা করেছে। তাতে উঠে এসেছে বাংলাদেশ বছরে গড়ে যে ৩৮ হাজার টন পেসটিসাইড আমদানি করা হয় তাতে ব্যাপক পরিমাণ লেড, ক্রোমিয়াম কিংবা ক্যাডমিয়ামের মত ভারি ধাতুর অস্তিত্ব মিলেছে। গবেষণায় ব্যবহৃত ৬৩টি নমুনার মধ্যে দশমিক দুই চার থেকে থেকে ১২ দশমিক ৭ মিলিগ্রাম পর্যন্ত সীসা পেয়েছে সংস্থা দুইটি। ঐসব নমুনায় পাওয়া গেছে ভারী ক্রোমিয়ামের মত ধাতুও। ফসলের ক্ষেত থেকে মানুষের খাদ্য শৃঙ্খলে ভারী ধাতুর ঢুকে পড়ার এ ঘটনা গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। কিন্তু কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি? নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান  মো: আব্দুল কাইউম সরকার চীন আন্তর্জাতিক বেতারকে জানান, গবেষণা করলেও ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার নেই তার হাতে।

 

খাদ্য অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনশাস কনজুমার্স সোসাইটি-সিসিএসের নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ মনে করেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে বহু প্রতিষ্ঠান থাকলেও মানুষের অনাস্থার মূল কারণ আইনী কাঠামোর দুর্বলতা ও সদিচ্ছার অভাব। তিনি মনে করেন, অতি মুনাফালোভীদের দৌরাত্নে সবসময়ই পরাজিত হয় নিরাপদ খাদ্যের সব উদ্যোগ।

ব্যবসাপাতি: ৮ম পর্ব_fororder_jingji3

পলাশ মাহমুদ, নির্বাহী পরিচালক, কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি-সিসিএস

খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞানীরা মনে করেন এখনই ব্যবস্থা না নিলে করুন পরিণতির সম্মুখীন হতে হবে গোট জাতিকে। খাদ্য শৃঙ্খলে দূষণ রোগের জন্য কতটা দায়ী তা খুজেঁ বের করতে গুণগত গবেষণার উদ্যোগ নেয়ার সুপারিশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলাম।

ব্যবসাপাতি: ৮ম পর্ব_fororder_jingji4

. খালেদা ইসলাম
অধ্যাপক, পুষ্টি খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ কাজ করে প্রায় ২৫টির সেবা ও পর্যবেক্ষণ সংস্থা।

সাক্ষাৎকার:  অধ্যাপক . নাজমুল হোসাইন নাজির

বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলতে আজ আমাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. কে.এইচ.এম নাজমুল হোসাইন নাজির। 

ব্যবসাপাতি: ৮ম পর্ব_fororder_jingji5

বিশেষ প্রতিবেদন:  অধিবাসীরাকফি সংস্কৃতিতে ভর করে করোনার ধাক্কা সামলে উঠতে চান উদ্যোক্তারা

চীনে শুরু হচ্ছে নতুন বর্ষ বা বসন্ত উৎসবের জমজমাট আয়োজন। আর এদিকে, করোনা মহামারি শেষে চা-কফির পেয়ালা হাতে আবারো জেগে উঠেছে সিচুয়ান প্রদেশ। আবারো স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে এ অঞ্চলের জীবনযাত্রা। দীর্ঘদিন পর অন্যতম ঐতিহ্য ‘চা-কফি’র স্বাদ নিতে দোকানগুলোতে ভিড় করছেন এখনকার অধিবাসীরা। ‘কফি সংস্কৃতি’তে ভর করে করোনার ধাক্কা সামলে উঠতে চান উদ্যোক্তারা। রওয়াজে জাবিদা ঐশি’র রিপোর্ট।

আবারো জমে উঠেছে আড্ডা। ধোয়া ওঠা কফি’র পেয়ালা হাতে প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ সময়। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রদেশ সিচুয়ানের চিত্র এখন এমনই।

প্রদেশের ‘অবকাশ স্বর্গ’হিসেবে পরিচিত ছেংদু সিটির ঐতিহ্যবাহী চা সংস্কৃতির কেন্দ্র দোকানগুলো খুলতে শুরু করেছে। যাপিত জীবনের সুন্দর কিছু মূহূর্ত কাটাতে শপগুলোতে ভিড় করেন স্থানীয়রা। উপভোগ করেন সময়টাকে।

এখানে আসা এক নারী বলছিলেন, চা ও কফি যদি আমার সামনে দেয়া হয়, তাহলে দশবারের মধ্যে একবার মাত্র চা কে বেছে নেবেন তিনি।

উদ্যোক্তারা বলছেন, অবকাশের এ সংস্কৃতিই করোনার পর উজ্জীবিত করছে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে।

ক্যাফে জি-ওয়ান এর প্রতিষ্ঠাতা লি চিয়াংছুন বলেন, এ অঞ্চলের লোকেরা খুব ছিমছাম জীবনযাপন পছন্দ করে। শহরটিতে চা পান করার সংস্কৃতি শেকড় থেকে বলা যায়। চা বা কফি পান মানে একটি মিলন মেলা বলা যায়। যা তাদের নিজেদের প্রয়োজন। সামগ্রিকভাবে এটি একটি ভালো জিনিস।

 

কফির প্রচলন আরো জনপ্রিয় করতে নতুন নতুন ধারনার সমন্বয় করছেন উদ্যোক্তারা। আরো আকর্ষনীয় করতে ক্যাফিনেটেড পানীয়র সঙ্গে মেশানো হচ্ছে ফলের রস ও অ্যালকোহল।

জেজেএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিয়ে লিং বলেন, সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ও ব্যবসা দুটোরই ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সমন্বয়ের ওপর। এই ক্যাফেগুলো কেবল কফিই পরিবেশন করে না। বরং সংস্কৃতি ও ব্যবসাকে এক দারুণ সমন্বয়ের জায়গায় নিয়ে এসেছে।

কোভিডের কারণে গেল বছর থমকে ছিলো কফির ব্যবসা। উদ্যোক্তারা বলছেন, মহামারি না এল কফি শপের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়ে যেতো।

 

প্রিয় পাঠক, আয়োজনের একেবারে শেষ প্রান্তে চলে এসেছি আমরা। আপনার পরামর্শ আমাদের সমৃদ্ধ করবে। আপনার যে কোন পরামর্শ পাঠাতে পারেন আমাদের কাছে। চীন আন্তর্জাতিক বেতার –সিআরআই বাংলা’র ফেসবুক পাতায় আপনার মন্তব্য করতে পারেন। আরো যুক্ত থাকতে পারেন সিএমজি বাংলা’র ফেসবুক পাতা facebook.com/cmgbangla এবং ও ইউটিউব লিঙ্ক youtube.com/cmgbangla তে গিয়েও আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে পারেন। আগামী পর্বে আবারো কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সে পর্যন্ত সুস্থ্য থাকুন, শুভকামনা সবাইকে।