চীন এবং মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর সহযোগিতা আরও গভীর হবে
2021-02-09 15:26:25

ফেব্রুয়ারি ৯: আজ (মঙ্গলবার) চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বেইজিংয়ে চীন এবং মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতৃবৃন্দের শীর্ষ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন এবং এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন।

চীনের উদ্যোগে অনলাইনে এবারের শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতৃবৃন্দ ও উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা এবং চীন ও মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর সমবায় পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিরা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

মহামারী পরবর্তী যুগে চীন এবং মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলো কিভাবে সহযোগিতা আরও গভীর করবে? এ নিয়ে শুনবেন আজকের সংবাদ পর্যালোচনা।

২০১২ সালে চীন এবং মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতৃবৃন্দের প্রথম বৈঠক পোল্যান্ডের ওয়ারশোতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। চীন এবং মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর সহযোগিতার ব্যবস্থা এর পর প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৯ সালে গ্রীস আনুষ্ঠানিকভাবে এই সহযোগিতা ব্যবস্থায় যোগ দেয়। মোট ১৭টি মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর হয়ে ওঠছে। চীন এবং মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা চীন-ইইউ সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং একটি কার্যকর পরিপূরক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত ৯ বছরে চীন-মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর সহযোগিতা ব্যবস্থার উন্নয়নের দিকে ফিরে তাকিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চীন-মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলো বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি হুও ইউজেন বলেছেন, এ ব্যবস্থার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো বাস্তব, লাভ ও কল্যাণের অংশীদারিত্ব, ভারসাম্য এবং উদ্ভাবন।

তিনি বলেন,

 ‘আর্থিক সংটকের মোকাবেলা এবং অভিন্ন উন্নয়ন বেগবানের এ বিশেষ প্রেক্ষাপটে আমরা উভয় পক্ষের ইচ্ছা ও চাহিদা অনুযায়ী একযোগে সহযোগিতার এ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছি। উভয় পক্ষই আলোচনা, গঠন, এবং ভাগাভাগি করতে পারে। এতে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সমতা এবং পারস্পরিক সুবিধা প্রকাশিত হয়। প্রতিটি দেশ তার নিজস্ব সুবিধাগুলি এবং বৈশিষ্ট্যগুলি পালন করতে পারে। বাস্তবতায় মনোনিবেশ করলে অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি, অবকাঠামো, আন্তঃসংযোগ, মানবিকতা ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।’

প্রথম চীনা নববর্ষের ঘরোয়া কূটনীতি চীন এবং মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতার উপর আলোকপাত করে যা ইঙ্গিত দেয় যে, চীন চীন-মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর সহযোগিতা এবং চীন-ই ইউ সম্পর্ককে খুব গুরুত্ব দেয়।

চীনের সমাজ বিজ্ঞান একাডেমির ইউরোপ বিষয়ক গবেষণালয়ের মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের দপ্তরের প্রধান লিউ চুও কুই মনে করেন, চলতি বছর চীনের প্রথম ঘরোয়া কূটনৈতিক কার্যক্রমে চীন-মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর সহযোগিতার উপর ফোকাস করা হয়। এতে চীন-মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর সহযোগিতা এবং চীন-ইউরোপ সম্পর্কের উপর চীনের উচ্চ পর্যায়ের গুরুত্ব প্রকাশিত হয়।

মহামারীর পরবর্তীকালে চীন-মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলো কীভাবে সহযোগিতার উপর ফোকাস করবে? পরের এই পরিসংখ্যান দেখুন। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত সর্বশেষ রিপোর্ট থেকে দেখা যায়, ২০২০ সালে চীন এবং মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর বাণিজ্যিক মূল্য প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়নম মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যায়, এই সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৮.৪ শতাংশ বেশি।

মহামারীর প্রেক্ষাপটে চীন-মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি প্রসঙ্গে লিউ চুও খুই বলেন, একদিকে, দু’পক্ষের বাণিজ্যিক কাঠামোর পারস্পরিক পরিপূরকতার কারণে দু’পক্ষের বাণিজ্য উপকৃত হয়। অন্যদিকে, চীন সর্বপ্রথমে মহামারী নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহামারী প্রতিরোধের প্রক্রিয়ায় বিশেষ ‘মহামারীসংক্রান্ত অর্থনীতি’ উন্নয়ন করেছে। ওষুধ, মাস্ক ও ভেন্টিলেটরসহ জনস্বাস্থ্যের পণ্যের ক্ষেত্রে বিপুল প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।

লিউ চুও খুই বলেন, স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে সহযোগিতা পরবর্তী পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং বৃদ্ধি বিষয়ে পরিণত হতে পারে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের ১৭টি দেশ চীনের সঙ্গে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ সহযোগিতার দলিলপত্রে স্বাক্ষর করেছে। চীন এবং মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর সহযোগিতা মহামারীর পরীক্ষায় পাস করেছে। পরবর্তীতে বিনিয়োগ, সৃজনশীলতা, সবুজ উন্নয়ন এবং ডিজিটাল অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু’পক্ষের আরও অনেক সম্ভাবনাও থাকবে বলে লিউ চুও খুই মনে করেন।

লিলি/এনাম/শুয়ে