দেহঘড়ি- ৩
2021-02-05 19:41:55

 ‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে রয়েছে স্বাস্থ্যখাতের একটি সুখবর, স্বাস্থ্য বুলেটিন, খাদ্যের গুণাগুণ নিয়ে আয়োজন ‘কী খাবো কী খাবো না’, প্রাকৃতিকভাবে রোগপ্রতিরোধ ও রোগমুক্তি নিয়ে কথন ‘ভাল থাকার আছে উপায়’, সাক্ষাৎকারভিত্তিক আয়োজন ‘আপনার ডাক্তার’ এবং ‘মৌসুমী হেলথ টিপস’।

 

## সুখবর :চীনা টিকার বিশ্ব জয়

দেহঘড়ি- ৩_fororder_sheng1

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সাদরে গ্রহণ করছে চীনা করোভাইরাসের টিকা। বেশ কিছু দেশে এরই মধ্যে স্বীকৃতি পেয়েছে তাদের উৎপাদিত টিকা - সিনোভ্যাক । স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা আর কার্যকারিতার দিক থেকেও বিশ্বজুড়ে সুনাম কুড়িয়েছে ভ্যাক্সিনটি ।

ব্রাজিল, তুরস্ক, সার্বিয়া, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, জর্ডান ও ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের প্রধানরা এরই মধ্যে গ্রহণ করেছেন চীনা টিকা। ওইসব দেশের নাগরিকদের জন্যও উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে এ টিকা। এছাড়াও আরও অনেক দেশ চীনা টিকা সিনোভ্যাক নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

বিশ্বের টিকা উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে তুলনামূলক কম দামে করোনাভাইরাসের টিকা দিচ্ছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের টিকাগুলোর প্রতি ডোজের দাম যেখানে ১২শ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত, সেখানে তার অর্ধেকেরও কম দাম অর্থাৎ প্রতি ডোজ ৮শ থেকে ১১শ টাকা নির্ধারণ করেছে চীন।

এছাড়াও সম্প্রতি অনুদান হিসেবে চীন থেকে প্রথম টিকা পেয়েছে পাকিস্তান। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণায়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শুধু পাকিস্তান নয়, শ্রীলংকা, ফিলিস্তিন ও জিম্বাবুসহ আরও ৩৮টি দেশ পর্যায়ক্রমে পাবে চীনের টিকা-সহযোগিতা।

 

## হেল্‌থ বুলেটিন

সারাদেশে পৌঁছেছে করোনার টিকা

দেহঘড়ি- ৩_fororder_sheng2

বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় পৌঁছেছে করোনাভাইরাসের টিকা। ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে থাকা আনা এসব টিকা ফ্রিজার ভ্যানে করে দেশের সবকটি জেলায় পৌঁছে দিয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, টিকা নেওয়ার জন্য করোনার সুরক্ষা অ্যাপে এরই মধ্যে নিবন্ধন করেছেন হাজার হাজার মানুষ। মানুষদেরকে টিকা নিতে আগ্রহী করতেও প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে মন্ত্রণালয়।  জানা গেছে, ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ  হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও বাংলাদেশ-কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় দেওয়া হবে করোনার টিকা। এরইমধ্যে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে একযোগে শুরু করা হবে টিকাদান কার্যক্রম। ওইদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ সরকারের উচ্চপদস্ত কর্মকর্তাদেরও করোনার টিকা নেওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশে কমে এসেছে করোনায় সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা। গেল ২৯ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, করোনা মহামারিতে তার আগের ২৪ ঘন্টায় ৭ জনের মৃত্যু হয়। এ সংখ্যা ছিল গত ৯ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম।

সবশেষ গেল বছরের ৬ মে এর চেয়ে কম মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর; সেদিন ৩ জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল। আর ৮ মে মৃত্যু হয় ৭ জনের।

শুধু মৃত্যু নয়, কমেছে আক্রান্তের হারও। গেল একমাসে প্রতি ১শ জনের নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্ত পাওয়া গেছে মাত্র ৩ থেকে ৪ জন। স্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে মানুষজন আরও সচেতন হলে আক্রান্তের হার আরও কমে আসবে।

 

##কি খাবো, কি খাবো না

এতো গুণ ব্রকলির!

দেহঘড়ি- ৩_fororder_sheng3

ফুলকপি ও বাঁধাকপির মতো ব্রকলিও এখন বাংলাদেশের অন্যতম শীতকালীন সবজি। সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এ সবজি স্বাস্থ্য সচেতনদের খাদ্য তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম ব্রকলিতে থাকে ৩২ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি। এছাড়াও এতে ১৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৫.৫ গ্রাম শর্করা, ৩.৩ গ্রাম প্রোটিন, ০.১৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১, ০.৯১ মি.গ্রাম বি-২, ১১৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ১.৬ মিলিগ্রাম লৌহ এবং ০.১ গ্রাম চর্বি পাওয়া যায়। আমেরিকান ক্যানসার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তালিকায় ক্যানসার-প্রতিরোধী ১০ম খাবার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে ব্রকলি।

ব্রকলি ত্বকের জন্য ভালো। এটি কোলেস্টেরল কমাতে এবং হাড় ও দাঁত সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ দূর করার ক্ষেত্রেও কার্যকরী ব্রকলি। গ্যাসট্রিক আলসার প্রতিরোধ ও কোষ্ঠকাঠিণ্য দূর করে এ সবজি।

সালাদের ভাল উপকরণ ব্রকলি। এর পাশাপাশি সবজি হিসাবে রেঁধে এবং মাংসের সঙ্গে রোস্ট করে খাওয়া যায় এটি। ব্রকলি একটি লঘুপাক সবজি। তাই কম সিদ্ধ করে রান্না করুন। ব্রকলির কুঁড়ি ও নরম ডাঁটা দুটো অংশই খাওয়া যায়।

আসুন জেনে নিই ব্রকলির সাতটি উপকারিতা সম্পর্কে:

1.      ভিটামিন সির উৎস: পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, লেবুর দ্বিগুণ ও আলুর সাত গুণ ভিটামিন সি থাকে ব্রকলিতে। যাদের ভিটামিন সি দরকার, তাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এ সবজি থাকা উচিৎ।

2.      ক্যানসার প্রতিরোধ: ব্রকলির বিটা ক্যারোটিন, সেলিনিয়াম ও ভিটামিন সি প্রোস্টেট, কোলন, ফুসফুস, যকৃত, স্তন ও প্যানক্রিয়াটিক ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে।

3.      রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: ব্রকলির সেলিনিয়াম দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে থাকা ভিটামিন এ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে ত্বককেরক্ষা করে। সর্দি-কাশিও প্রতিরোধ করে ব্রকলি।

4.      উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং কোলোস্টেরলের মাত্রা কমাতে ব্রকলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

5.      গ্যাসট্রাইটিস প্রতিরোধ: গ্যাসট্রিক আলসার ও গ্যাসট্রাইটিস প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর ব্রকলি।

6.      তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়ক: শরীরে সক্রিয় অক্সিজেন প্রতিরোধ এবং বিষমুক্ত করে দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকাতে সাহায্য করে ব্রকলি।

7.      ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি: ব্রকলিতে থাকা ভিটামিন সি ত্বক সুন্দর করে।

8.      কোষ্ঠকাঠিণ্যের মহৌষধ: ব্রকলিতে চর্বি ও ক্যালরি কম কিন্তু আঁশ বেশি। এজন্য এ সবজি খেলে কোষ্ঠকাঠিণ্য দূর হয়।

 

## ভাল থাকার আছে উপায়

কিডনি বাচাঁন

দেহঘড়ি- ৩_fororder_sheng4

মানব দেহের অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর একটি হচ্ছে কিডনি। মানুষ যেসব প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হয়, তার মধ্যে কিডনি রোগ অন্যতম। কিডনি রোগ খুব নীরবে শরীরের ক্ষতি করে। খুব জটিল অবস্থা না হওয়া পর্যন্ত সাধারণত রোগের লক্ষণগুলো ভালোভাবে প্রকাশও পায় না। সেকারণে কিডনি জটিলতা প্রতিরোধ, কিডিনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণ এবং রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়গুলো জানান জরুরি।

মানুষের শরীরে দুটি কিডনি থাকে যেগুলো শরীরের পানির ভারসাম্য রক্ষা করে এবং বিভিন্ন দূষিত পদার্থ ছেঁকে ফেলে। কিন্তু কিডনি রোগ শরীরের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এ অঙ্গের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়। বাংলাদেশে কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রতিবছর অগুনতি মানুষ মারা যায় এ রোগে। এ রোগের চিকিৎসাও খুব ব্যয়বহুল। তবে কতগুলো নিয়ম পালন করলে এবং অভ্যাস গড়ে তুললে কিডনি রোগ থেকে বাঁচা যায়।

জানিয়ে দিচ্ছি কিডনি ভালো রাখার কতগুলো উপায়:

1.      পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন: প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি বা তরল খাবার গ্রহণ করুন। তবে অতিরিক্ত ঘাম হলে পানি খাওয়ার পরিমাণ আরো বাড়াতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেলে কিডনিতে পাথর হয় না এবং এর স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় থাকে।

2.      লবণ কম খান: অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মানুষের শরীরে প্রতিদিন মাত্র ১ চা চামচ লবণের চাহিদা থাকে। তাই কিডনি সুস্থ রাখতে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া পরিহার করুন।

3.      অতিরিক্ত প্রাণিজ আমিষ পরিহার করুন: গরুর মাংসের মতো রেড মিট বেশি খেলে কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এছাড়া চিপস, ফাস্টফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার, ইন্সট্যান্ট নুডলস এবং লবণ দিয়ে ভাজা বাদামও কিডনির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই এসব খাবার এড়িয়ে চলুন। প্রাণিজ আমিষের বদলে বরং মাছ বা ডাল জাতীয় আমিষ রাখুন খাদ্য তালিকায়।

4.      রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন: রক্তচাপ ১৪০/৯০ এর উপরে থাকলে কিডনির সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই কিডনি ভালো রাখতে রক্তচাপ সবসময় ১৩০/৮০ অথবা এর কম রাখার চেষ্টা করুন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলেও কিডনির রোগের ঝুঁকি বাড়ে। নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করান। শর্করা বেশি থাকলে মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন।

5.      ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন: ধূমপান ও মদ্যপানের কারণে ধীরে ধীরে কিডনিতে রক্ত চলাচল কমে যেতে থাকে এবং এর ফলে কিডনির কর্মক্ষমতাও হ্রাস পায়। কিডনি বাঁচাতে এ দুটি বস্তু ত্যাগ করুন।

6.      অযথা ওষুধ খাবেন না: প্রায় সব ওষুধই কিডনির জন্য ক্ষতিকর; তবে বিশেষভাবে ক্ষতিকর ব্যথানাশক ওষুধ। তাই যে কোনো ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিন।

7.      প্রয়োজন ছাড়া ভিটামিন সি নয়: মানুষের শরীরে দিনে ৫০০ মিলিগ্রামের বেশি ভিটামিন সি’র প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশংকা থাকে। তাই প্রতিদিন ৫০০ মিলিগ্রামের কম ভিটামিন সি গ্রহণ করুন।

8.      কোমল পানীয় বর্জন করুন: অনেকেই পানির বদলে কোমল পানীয় বা বিভিন্ন রকমের এনার্জি ড্রিঙ্কস খেয়ে থাকেন। এ ধরনের পানীয় কিডনির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন এবং যখনই তৃষ্ণা পায় পানি খেয়ে নিন।

9.      নিয়মিত কিডনির পরীক্ষা করান: উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত ওজন অথবা পরিবারের কারো কিডনি সমস্যা থাকলে কিডনি রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। যাদের কিডনি রোগের ঝুঁকি আছে তাদের অবশ্যই নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করানো উচিত।

 

## আপনার ডাক্তার

দেহঘড়ি- ৩_fororder_sheng5

এ পর্বে আজ আমরা কথা বলেছি ব্রণ নিয়ে। মানব ত্বকের একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ ব্রণ বা অ্যাকনি ভালগারিস। ২০১০ সালে বিশ্বব্যাপী ৬৫ কোটি মানুষের অষ্টম সাধারণ রোগ হিসেবে এটি নির্ণীত হয়। ব্রণ হলে মানুষের মধ্যে ভীতি, দুশ্চিন্তা ও বিষণ্ণতার জন্ম হয় এবং আত্মবিশ্বাস কমে যায়। অতিরিক্ত পর্যায়ে মানসিক অবসাদ এবং আত্মহত্যার মতো অবস্থারও উদ্ভব হতে পারে ব্রণের কারণে। ব্রণ কেন হয়, কী এর প্রতিকার – এ বিষয়ে কথা বলতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন দেশের একজন খ্যাতনামা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জাকিয়া মাহফুজা হাসান। তিনি পড়াশুনা করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। উত্তরা স্কিন কেয়ার ও লেসার’র স্বত্বাধিকারী।…

 

## মৌসুমী হেল্‌থ টিপ্‌স

শীতের শেষে ত্বকের যত্ন

দেহঘড়ি- ৩_fororder_sheng6

শীতকালে মানুষের ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। সে সময় ত্বকের স্বাভাবিকতা ধরে রাখতে নানা উপায় অবলম্বন করে মানুষ। শীত যখন চলে যায়,

তখন সে আবহাওয়াকে শরীরের জন্য খুব আরামদায়ক মনে হয়। কিন্তু এমন আবহাওয়া ত্বকের জন্য আসলে সুখকর নয়। কারণ মিশ্র আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ত্বকের যথেষ্ট অসুবিধা হয়। তাই শীতের বিদায়বেলায় ত্বকের সতেজতা রক্ষায় কিছু উপায় অবলম্বন করা দরকার।

জানিয়ে দিচ্ছি ত্বকের যত্নে শীতের বিদায়বেলায় কী কী করবেন?

1.      অয়েল ম্যাসাজ: গোসলের আগে সারা শরীরে অয়েল ম্যাসাজ বা তেল মালিশ করুন। তিলের তেল ত্বকের জন্য খুবই ভাল। তবে পাশাপাশি আমন্ড অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন। যে তেল দিয়েই মালিশ করুন না কেন সেটি ঈষৎ উষ্ণ হলে ভাল হয়।

2.      ক্ষারযুক্ত সাবান নয়: যাদের হাতের ত্বক অত্যধিক রুক্ষ, তাঁরা ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করবেন না। চেষ্টা করুন ময়েশ্চারাইজার–যুক্ত সাবান ব্যবহার করতে।

3.      ঘরে বানানো উপকরণ: সপ্তাহে অন্তত একদিন মধু, গ্লিসারিন ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে লাগাতে পারেন। এই মাস্ক ত্বকে ক্লিনজারের কাজ করে এবং ত্বকের আর্দ্রতাও বজায় রাখে। মুখ–হাত–পাসহ শরীরের যেসব অংশ উন্মুক্ত থাকে সেখানে লাগান এ মাস্ক। আধা ঘন্টার মতো রেখে তারপর ধুয়ে ফেলুন। এই সময় মুলতানি মাটি, কাঁচা হলুদ ও জলপাইয়ের তেল একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। তিলের তেল, গ্লিসারিন ও গোলাপজল সমপরিমাণে মিশিয়ে তুলোয় লাগিয়েও ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বক সুন্দর ও মসৃণ হয়।

4.      পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খান: পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে। এতে ত্বক শুষ্কতা এড়াতে এবং প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারে।

5.      পায়ের যত্ন: এই সময় পায়ের গোড়ালির ত্বক রুক্ষ হয় ও ফেটে যায় এবং মৃত কোষ জমতে শুরু করে। তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সামান্য গরম জলে শ্যাম্পু মিশিয়ে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। এরপর স্ক্রাবারের সাহায্যে গোড়ালি ঘষে মৃত কোষ ঝরিয়ে ফেলুন।

 

‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত।