আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে আমরা কথা বলি সেইসব নারীর সঙ্গে যারা তাদের জীবনে সাফল্য অর্জন করেছেন, অথবা সাফল্য পেতে চান। আমাদের জীবনেও আমরা স্পর্শ করতে চাই সাফল্যের সোনালি ভুবন।
**প্রতিবেদন:চিকিৎসক নারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবাদান
আজকের প্রতিবেদন করোনা মহামারিতে সম্মুখ যোদ্ধা নারীদের নিয়ে। মহামারির এই ক্রান্তিকালে চিকিৎসক নারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবাদান করেছেন। তাদের বিষয়ে প্রতিবেদন নিয়ে আসছেন তানজিদ বসুনিয়া।
**সাক্ষাৎকার:আবৃত্তি শিল্পী সীমা ইসলাম
আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে আমাদের আজকের অতিথি বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পী সীমা ইসলাম। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করে বিশেষ খ্যাতি পেয়েছেন।
সিআরআই বাংলার ঢাকা স্টুডিওতে সীমা ইসলাম
চীনের বিখ্যাত নারী: প্রথম নভোচারী লিউ ইয়াং
আজ বলবো চীনের বিখ্যাত নারী লিউ ইয়াংয়ের কথা। লিউ ইয়াং হলেন চীনের প্রথম নভোচারী নারী। তিনি ২০১২ সালের ১৬ জুন শেনচৌ ৯ মহাকাশ অভিযান দলের অভিযাত্রী ছিলেন। ১৯৭৮ সালের ৬ অক্টোবর চীনের হেনান প্রদেশের চাংচৌ শহরে এক শ্রমিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। এই পরিবারের আদি বাসস্থান ছিল আনইয়াং প্রদেশের লিনচৌতে।
লিউ ইয়াং ছাংচুন শহরের পিএলএ এয়ার ফোর্স এভিয়েশন ইউনিভারসিটি থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে পিএল এ এয়ার ফোর্সে যোগ দেন এবং পাইলট হন। তিনি বিখ্যাত পাইলট ছিলেন। তার ১৬৮০ ঘন্টা উড়ানের অভিজ্ঞতা হয়। নভোচারী হিসেবে দু’বছর প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর ওয়াং ইয়াপিং নামের আরেকজন নারী বৈমানিকের সঙ্গে নভোচারী দলের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি খুব সাফল্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করেন।
চায়নিজ স্পেস স্টেশন থিয়ানকুং ১ এ পাঠানো প্রথম মানব অভিযাত্রী অভিযান শেনচৌ ৯ এর সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন লিউ। ২০১২ সালের ১৬ জুন এই অভিযান শুরু হয়। মহাকাশে লিউ স্পেস মেডিসিনের উপর গবেষণা করেন। তারা ১৩ দিন মহাকাশে ছিলেন।
লিউ ইয়াং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। তিনি একজন ভালো বক্তাও বটে। তিনি বই পড়তে ও রান্না করতে ভালোবাসেন।
চীনের প্রথম নভোচারী নারী লিউ ইয়াং
সুপ্রিয় শ্রোতা এখন শুনবেন বিখ্যাত শিল্পী থান ওয়েইওয়েইর কন্ঠে একটি চীনা গান।
ইতিহাসের পাতায় অসামান্য বাঙালি নারীর কথা
নওয়াব ফয়জুন্নেসা
এ পর্যায়ে আজ রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম নারী-নওয়াব, সাহিত্যিক, নারীশিক্ষার অন্যতম প্রবর্তক নওয়াব ফয়জুন্নেসার কথা।
ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম নারী নওয়াব। তিনি একজন সুলেখক, নারী শিক্ষার অগ্রদূত, সমাজ সংস্কারক এবং স্বাধীনচেতা নারী ছিলেন। বেগম রোকেয়ারও অনেক আগে তিনি নারীদের বিদ্যা শিক্ষার জন্য স্কুল খুলেছিলেন।
১৮৩৪ সালে কুমিল্লার হোমনাবাদ পরগনা বা বর্তমানের লাকসামের পশ্চিগাঁয়ে তার জন্ম। তার বাবা আহমেদ আলী চৌধুরী ছিলেন জমিদার। ফয়জুননেসা ছিলেন বাবা মায়ের প্রথম সন্তান। গৃহশিক্ষকের কাছে তিনি লেখাপড়া শুরু করেন। বাংলা, আরবি, ফার্সি ও সংস্কৃতি ভাষায় গভীর জ্ঞান অর্জন করেন তিনি।
১৮৭৩ সালে বাবার মৃত্যুর পর তিনি জমিদারি লাভ করে তা দৃঢ়ভাবে ও বিচক্ষণতার সঙ্গে নিজেই পরিচালনা করেন। মায়ের দিক থেকেও তিনি জমিদারি পেয়েছিলেন। তার বিয়ে হয়েছিল একজন জমিদারের সঙ্গে কিন্তু বিয়ের ১৭বছর পর তিনি যখন জানতে পারেন তার স্বামীর আরেক স্ত্রী রয়েছে তখন স্বামীকে ত্যাগ করে পৃথকভাবে বসবাস করেন। ১৮৭৩ সালে তিনি নারীশিক্ষার জন্য কুমিল্লায় বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এটি বাংলাদেশে নারীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন স্কুলগুলোর অন্যতম। তিনি নারীদের জন্য হোস্টেলের ব্যবস্থা করেন।তিনি ১৪টি অবৈতনিক স্কুল, মাদ্রাসা, এতিমখানা, হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৮৯৩ সালে তিনি কুমিল্লায় নারীদের জন্য পৃথক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি একজন সুসাহিত্যিকও ছিলেন। রূপজালাল, সংগীত লহরীসহ কয়েকটি বই তিনি লিখেছিলেন। ১৮৮৯ সালে তিনি ব্রিটিশ মহারানী ভিক্টোরিয়ার কাছ থেকে নওয়াব উপাধি পান।
১৯০৩ সালে এই মহিয়সী নারী মৃত্যুবরণ করেন।
নওয়াব ফয়জুন্নেসা
নওয়াব ফয়জুন্নেসা ও তার বাসভবন
প্রিয় শ্রোতা আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে পৌছে গেছি আমরা। অনুষ্ঠানটি কেমন লাগলো তা জানাতে ভুলবেন না কিন্তু। আমাদের অনুষ্ঠান আপনারা সবসময় শুনতে পাবেন, ঢাকায় এফ এম ১০২ এবং চট্টগ্রামে এফ এম ৯০ মেগাহার্টজে এবং অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজে। জেনে নিন আমাদের ইমেইল অ্যাডরেস, cmg.bangla@gmail.com আমাদের ফেসবুক পেজ হলো www.facebook.com/CRIbangla এবং www.facebook.com/CMGbangla এবংআমাদের সাক্ষাৎকারগুলো ইউটিউবে দেখতে পাবেন। www.youtube.com/CMGbangla.
আজ এ পর্যন্তই। সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন। আবার কথা হবে। চাই চিয়েন।
লেখা, গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা শান্তা মারিয়া
ছবি: হোসনে মোবারক সৌরভ