হান হোং ১৯৭১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ছাংদু শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চীনের মূল-ভূভাগের পপ সঙ্গীত শিল্পী, সুরকার, জনকল্যাণমূলক স্বেচ্ছাসেবক, পরিচালক, উপস্থাপিকা, গণ-রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের সদস্য এবং জাতীয় পর্যায়ে প্রথম সারির অভিনেত্রী। তিনি এক শিল্প-মনা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ বছর বয়সে তিনি উল্লাস দলে গান গেতে শুরু করেন। ১৯৮০ সালে যখন তাঁর বয়স ৯ বছর, তখন তিনি শিশুদের গানের দলে যোগ দিয়ে আনুষ্ঠানিক গানের প্রশিক্ষণ গ্রহণ শুরু করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি চীনা গণমুক্তি ফৌজের দ্বিতীয় আর্টিলারি কমান্ডের ট্রুপে প্রবেশ করেন। ১৯৯৩ সাল থেকে তিনি লিরিক্স ও সঙ্গীত সৃষ্টি শুরু করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি চীনা গণমুক্তি ফৌজের একাডেমি অব আর্টসে প্রবেশ করেন। হান হোং’র মা তিব্বত জাতির একজন গায়িকা। তাঁর লেখা ও গাওয়া গান ‘বেইজিংয়ের স্বর্ণ পাহাড়ে’ খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাহলে আজকের প্রথম গান হিসেবে আমি আপনাদের এ গানটি শোনাবো, কেমন? তিব্বত জাতির মানুষ হান হোং তিব্বত ও চীনা উভয় ভাষাতেই গানটি গেয়েছেন। শুনি তাহলে।
হান হোং’র বাবা ছিলেন একজন বিতার্কিক কৌতুক অভিনেতা। কিন্তু যখন হান হোং’র বয়স ৬ বছর, তখন তিনি মারা যান। বাবা মারা যাওয়ার পর হান হোং’র মা তাঁকে বেইজিংয়ে তাঁর দাদির কাছে পাঠিয়ে দেন। তখন থেকে হান হোং দাদি ও চাচা’র সঙ্গে বসবাস করতে শুরু করেন। চাচা’র উত্সাহে হান হোং গান গাওয়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এবং নিজের প্রচেষ্টার মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে একজন কণ্ঠশিল্পীতে পরিণত হন। কিন্তু তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ভালো সময়ে হান হোং’র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু তাঁর দাদি মারা যান। এখন তাহলে আমি আপনাদের হান হোং’র ‘বিদায়’ শিরোনামের গানটি শোনাই।
২০০১ সালে বেইজিংয়ের সুরকার ইন ছিং ছিংহাই-তিব্বত রেলপথের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। রেলপথের নির্মাণ শ্রমিক ও তিব্বত জাতির জনগণ ছিংহাই-তিব্বত রেলপথকে ‘আকাশ পথ’ নামে ডেকে থাকেন। তাই তিনি ‘আকাশ পশ’ শিরোনামে একটি গান সৃষ্টি করেন। ২০০৫ সালের বসন্ত উত্সবের আগে হান হোং ১লাখ ইউয়ান দিয়ে গানটির স্বত্ব কিনে নেন।
তারপর তিনি গানটি নিয়ে সাফল্যের সঙ্গে আড়ম্বরপূর্ণ বসন্ত উত্সবের অনুষ্ঠানে প্রবেশ করেন। বন্ধুরা, তাহলে এখন আমরা ওই গানটি শুনি।
‘অন্তহীন ভালবাসা’ হলো ২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া পৌরাণিক কাহিনী ভিত্তিক নির্মিত ‘পৌরাণিক কাহিনী’ চলচ্চিত্রের মূল সংগীত। জ্যাকি চ্যান ও দক্ষিণ কোরিয়ার অভিনেত্রী কিম হি সিওন ওই চলচ্চিত্রে গানটির চীনা ও কোরীয় ভাষার সংস্করণে ঠোট মিলিয়েছেন। চীনা ভাষার সংস্করণ গেয়েছেন হান হোং ও সুন নান। বন্ধুরা, এখনই আমি গানটি আপনাদের শোনাচ্ছি।
‘আমার মাতৃভূমি’ হলো চীনের বিখ্যাত কল্ঠশিল্পী কুও লানইং’র গাওয়া একটি গান। পাশাপাশি, গানটি চলচ্চিত্রের মধ্যরঙ্গ বা বিরতি সঙ্গীতগুলোর অন্যতম। পরে হান হোং গানটি পুনরায় গেয়েছেন। তাহলে হান হোং’র গাওয়া ‘আমার মাতৃভূমি’ শুনুন।
শোবিজ ছাড়া হান হোং জনকল্যাণমূলক কাজ পছন্দ করেন। ২০০৭ সালে তিনি ‘দানশীলতার তিব্বত যাত্রা’সহ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমের উদ্যোগ নেন। ২০০৮ সালের ১৪ মে তিনি ‘হান হোং দানশীলতা ত্রাণদল’ গঠন করে চীনের সিছুয়ান প্রদেশের ওয়েনছুয়ান দুর্গত এলাকায় উদ্ধার কাজে সমর্থন দেন। ২০১৬ সালে চীনের সেলিব্রিটি দাতব্য তালিকায় তিনি প্রথম স্থান লাভ করেন।
প্রিয় বন্ধুরা, এতক্ষণ আপনারা শুনেছেন হান হোং’র গাওয়া গান ‘লাং লা শান ছিং’। হান হোং নিজেই গানটির সুরকার। কেমন লেগেছে গানটি?
প্রিয় বন্ধুরা, গান শুনতে শুনতে বিদায়ের সময় চলে এসেছে। তাহলে হান হোং’র আরেকটি গান দিয়ে আজকের ‘তোমার জন্য গান’ অনুষ্ঠানটি শেষ করছি। গানের নাম ‘মখমলের ফুল’। আশা করি, আজকের গানগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে।
(প্রেমা/এনাম)