এবারের অনুষ্ঠান আমরা সাজিয়েছি স্বাস্থ্যখাতের একটি সুখবর, হেল্থ বুলেটিন, খাদ্যের গুণাগুণ নিয়ে আয়োজন ‘কী খাবো কী খাবো না’, প্রাকৃতিকভাবে রোগপ্রতিরোধ ও রোগমুক্তি নিয়ে কথন ‘ভাল থাকার আছে উপায়’, সাক্ষাৎকারভিত্তিক আয়োজন ‘আপনার ডাক্তার’ এবং ‘মৌসুমী হেলথ টিপস’ দিয়ে।
## সুখবর:কোভিড চিকিত্সায় চীনের ভেষজ ওষুধ
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন করোনাভাইরাসের চিকিত্সায় নানারকম পদ্ধতির কথা বলছে, সেসময় হাজারো রোগীর উপর গবেষণা চালিয়ে ভেষজ ওষুধ বানিয়েছে চীন, যা কোভিড-নাইন্টিন চিকিত্সায়ও ভালো কাজ করে। গবেষণা বলছে, প্রাকৃতিক এসব ওষুধ দিয়ে সেরে উঠছেন জটিল রোগীরাও। এ বিষয়ে হাবিবুর রহমান অভির একটি প্রতিবেদন।
চীনের উত্তর পুবের বরফ ঢাকা প্রদেশ হেইলংচিয়াংয়ের ভেষজ কারাখানাগুলোতে এখন বেশ ব্যস্ততা। ওষুধি উদ্ভিদসহ অন্যান্য উপাদান জড়ো করা, সিদ্ধ কিংবা পাচন করার কার্যক্রমে গতি পেয়েছে আগের তুলনায় অনেক বেশি। কারণ সম্প্রতি দেখা গিয়েছে বিশ্ব মহামারি কোভিড নাইন করোনা চিকিত্সায় ভালো কাজ দেয় এসব ট্রেডিশনাল চাইনাল মেডিসিন বা ঐতিহ্যবাহী চীনা হারবাল ওষুধগুলো।
ট্রেডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন সংক্ষেপে টিসিএম চিকিত্সা পদ্ধতি শুধু সাধারণ করোনা রোগীদের সেরে উঠতে সাহায্য করছে না, এটি জটিল আক্রান্ত রোগীদের চিকিত্সায়ও সফলভাবে কাজ করছে বলে উঠে এসেছে সমীক্ষায়। গেল বছরের মার্চের দিকের কথা, যখন চীনে করোনা সংকট বেশ ঘনিভূত, তখন ন্যাশনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব ট্রেডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন একটি ডাটা প্রকাশ করেছিলো। তাতে দেখা যায়, প্রায় ৭৪ হাজার করোনা রোগীর ওপর চীনা ভেষজ প্রয়োগ করা হয়েছিলো, যার মধ্যে ৫০ হাজার রোগীই সেরে উঠেছিলো।
এমন অবস্থায় চীনের হেইলংচিয়াং প্রদেশ কর্তৃপক্ষও করোনা চিকিত্সার গাইড লাইনে ঐতিহ্যবাহী ভেষজ চিকিত্সা টিসিএম-কে অন্তর্ভুক্ত করেছে। গাইডলাইন নিয়ে প্রকাশিত সরকারি শ্বেতপত্রেও টিসিএম নিয়ে বিস্তর আলোচনা রয়েছে। "ফাইটিং কোভিড-১৯, চায়না ইন অ্যাকশন" শিরোনামের ঐ নিবন্ধেও স্বীকার করা হয়েছে, ভেষজ চিকিত্সা পদ্ধতি করোনা মোকাবিলায় যেমন দারুনভাবে কার্যকর তেমনি টিসিএমে রোগী সুস্থ হওয়ার হারও বেশি। টিসিএম ব্যবহারকারীদের মৃতের হারও কম বলেও উল্লেখ আছে ঐ শ্বেতপত্রে।
সবমিলিয়ে বলা যায়, করোনা মহামারি কালেও চীনের ঐতিহ্যবাহী চিকিত্সা যেন আরেকবার জানিয়ে দিলো নিজস্ব স্বকীয়তা ও কার্যকারিতার।
এদিকে, চীনের মতো, বাংলাদেশেও এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভেষজ চিকিত্সা। করোনার মহামারী মোকাবিলায় দেশে এরইমধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে কিছু হারবাল ওষুধ। করোনা থেকে সেরে উঠতে প্রকৃতির এসব দাওয়াই বেশ কার্যকর বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা । এ নিয়ে হামদর্দ’র জ্যেষ্ঠ পরামর্শক আব্দুল আলিম ভূঁইয়ার সাথে কথা বলেছে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের হাবিবুর রহমান অভি।
## হেলথ বুলেটিন
এ সপ্তাহের হেল্থ বুলেটিন তৈরি করেছেন তানজিদ বসুনিয়া।
১. বাংলাদেশে শুরু হয়েছে করোনার টিকাদান কর্মসূচি। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালসহ সরকার-নির্ধারিত কেন্দ্রগুলোতে টিকা নিচ্ছে সাধারণ মানুষ। বুধবার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাসপাতালের একজন জ্যেষ্ঠ নার্স প্রথম টিকা গ্রহণ করেন। এরপর সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় করোনা মহামারির টিকা।
২. করোনার টিকা নিয়ে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে সম্প্রতি একটি জরিপ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইন্সস্টিটিউট। জরিপে দেখা গেছে, ৮৪ শতাংশ মানুষ টিকার নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক। তবে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে ৫৪ শতাংশে মানুষের সন্দেহ রয়েছে। আর ৩৪ শতাংশ মানুষ টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে শঙ্কিত। সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি মানুষের উপর জরিপ চালিয়ে গেল ২৬ জানুয়ারি গবেষণাপত্র প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি।
৩. করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার পরও টিকাগ্রহণকারীরা অন্যদের শরীরে ভাইরাস ছড়াতে পারে। সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের দ্য সানডে টেলিগ্রাফ পত্রিকায় একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়, যেখানে বলা হয়, ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে টিকার প্রভাব কেমন সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা এখনো নেই বিজ্ঞানীদের। বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে টিকা গ্রহণের পর শরীরে সম্পূর্ণ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হতে অন্তত তিন সপ্তাহ সময় লেগে যায়। তাই স্বাস্থ্যবিধি না মানলে টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পরও তাদের থেকে ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। তাই টিকা নেওয়ার পরও লকডাউনের বিধি ঠিকমত অনুসরণ করা উচিত বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ইংল্যান্ডের উপ-প্রধান চিকিত্সা কর্মকর্তা অধ্যাপক জনাথন ভান-টাম।
## ভাল থাকার আছে উপায় : ডায়াবেটিস থেকে বাঁচুন ওষুধ ছাড়া
রোগ নিয়ে আলোচনায় সবচেয়ে পরিচিত শব্দগুলোর একটি ডায়াবেটিস। বিশ্বের প্রায় ৪২ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এ রোগ নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো বলছে, ২০৩০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা ৫৫ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। ফলে দেখা যাচ্ছে, আমাদের আশপাশেই কেউ না কেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৯০ লাখ। এখানে প্রতি বছর ডায়াবেটিস আক্রান্তের সারিতে যুক্ত হচ্ছে প্রায় ১ লাখ করে মানুষ।
কিন্তু ডায়াবেটিস আসলে কী? সরলভাবে বলা যায়, ডায়াবেটিস হলো রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার রোগ। রক্তে সুগারের মাত্রা খুব বেশি বেড়ে গেল ক্লান্তি, অবসাদ, ঘন ঘন প্রস্রাব, ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো লক্ষণ প্রকাশ পায়। ইনসুলিন কমে যাওয়ার কারণে প্রকাশিত এসব লক্ষণই চিকিত্সাবিজ্ঞানে ডায়াবেটিস রোগ হিসেবে স্বীকৃত।
মানুষের শরীরে অগ্নাশয় বা প্যানক্রিয়াস থেকে ইনসুলিন উত্পাদিত হয়। তাই ইনসুলিন উত্পাদন বা অগ্নাশয় ভালো থাকার ওপর ডায়াবেটিস রোগ অনেকাংশে নির্ভরশীল বলে মনে করেন চিকিত্সকেরা।
চিকিত্সাবিজ্ঞান মনে করে, একবার হলে ডায়াবেটিস আর কখনও সারে না। তবে এর লক্ষণগুলো দূর করা যায় এবং নিয়ন্ত্রণেও রাখা যায়। আর এমন কিছু প্রমাণিত অভ্যাস আছে, যা আপনি মেনে চললে আর হয়তো ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবেন না, যদি না আপনার পরিবারে ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, ডায়াবেটিস থেকে দূরে থাকার ৭টি দরকারি তথ্য। এটি তৈরি করেছেন আজহার লিমন।
১. ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত থাকার পরামর্শের শুরুতেই চিকিত্সকেরা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলেছেন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৭০ শতাংশ কমে যায় বলে মনে করেন চিকিত্সকেরা।
২. নিয়মিত শরীরচর্চা ডায়াবেটিস থেকে দূরে রাখতে পারে আপনাকে। বিশেষ করে হাঁটাহাটিঁর অভ্যাস ডায়াবেটিস প্রতিরোধে খুবই সহায়ক। প্রতিদিন অন্তত ৪০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করলেই আপনার বিপাকীয় প্রক্রিয়া এমন পর্যায়ে থাকবে, যা দেহে ইনসুলিনের মাত্রাকেও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় রাখতে যথেষ্ট বলে মনে করেন চিকিত্সকেরা।
৩. ডায়াবেটিসের জন্য খাদ্যাভাসকে খুব গুরুত্ব দেন চিকিত্সকেরা। চিকিত্সকেরা মনে করেন, প্রতিদিন এক বাটি সালাদ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারে। ইনসুলিনের মত ভিনেগারও রক্তকে কমমাত্রায় সুগার শোষণে সহায়তা করে। তাই সালাদে হালকা পরিমাণ ভিনেগার যুক্ত করারও পরামর্শ দেন চিকিত্সকেরা। এছাড়া পূর্ণ শস্যজাতীয় খাদ্য ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক। চিকিত্সকেরা মনে করেন, ভুট্টা, বাজরা, ওটমিল, বার্লি বা ব্রাউন রাইসের মত শস্যজাতীয় খাবারে যে আঁশ রয়েছে তা রক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে সহায়ক। এছাড়া দারুচিনি তেল বা পাউডার আকারে নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে আসে ৪৮ শতাংশ। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, দারুচিনির আছে অস্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড এর মাত্রা কমিয়ে আনার প্রাকৃতিক সক্ষমতা।
৪. বেশ কিছু গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, প্রতিদিন অন্তত দুই কাপ কফি পান করলে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে আসে ২৯ শতাংশ। তবে চিনি ছাড়া কফি পান করতে হবে। কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান এই কাজ করে।
৫. ডায়াবেটিস এড়াতে, এড়িয়ে চলতে হবে ফাস্টফুড। চিকিত্সাবিজ্ঞানীর মনে করেন, ফ্রাইস, পিজ্জা ও বার্গারের মতো ফাস্ট এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার স্থুলতা, উচ্চ কোলেস্টেরল, হজমে সমস্যা ও হৃদরোগের মতো ডায়াবেটিসও বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব খাবার দেহে ইনসুলিনের মাত্রায়ও ক্ষতিকরভাবে হেরফের ঘটিয়ে দিতে পারে বলেও ধারণা করা হয়।
৬. মাথা ব্যথা থেকে শুরু করে ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগও হতে পারে অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে। সুতরাং আপনি যদি এমন কেউ হন যিনি প্রায়ই তীব্র মানসিক চাপে থাকেন তাহলে রিল্যাক্স করার নানা কৌশল ও যোগ ব্যায়াম করে স্ট্রেস কমান। এতে আপনার দেহে কর্টিসোল হরমোনের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমবে।
৭. স্ট্রেসের মতোই ধুমপানও নানা ধরনের মারাত্মক রোগের আরেকটি কারণ। ফুসফুস ক্যান্সারের মতো ভয়ঙ্কর রোগের পাশাপাশি ডায়াবেটিসেরও একটি কারণ ধুমপান। সুতরাং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে না চাইলে আজই ধুমপান ছেড়ে দিন।
## আপনার ডাক্তার : ডা. লুত্ফুল হোসেন
এ পর্বে আমরা কথা বলছি রেটিনোপ্যাথি অব প্রিম্যাচুরিটি (আরওপি) বা অপরিণত শিশু অন্ধত্ব নিয়ে। বাংলাদেশের জন্য আরওপি সমস্যাটি যত বড়, ততটা গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় না। জাতিসংঘের উপাত্ত বলছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ৩০ লাখ শিশু জন্মগ্রহণ করে, ৬ লাখ শিশুর জন্ম হয় অপরিণত অবস্থায়। অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেওয়া এসব শিশুদের মধ্যে ২০ থেকে ২২ শতাংশ আরওপি ঝুঁকির মধ্যে থাকে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন দেশের একজন খ্যাতিমান চিকিৎসক ডা. লুত্ফুল হোসেন। ডা. লুত্ফুল হোসেন বর্তমানে দায়িত্ব পালন করেছেন অন্ধত্ব নিবারণের জন্য বিশ্বব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনাকারী সংস্থা - অরবিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ চিকিত্সা বিশেষজ্ঞ হিসাবে।
## মৌসুমী হেল্থ টিপ্স : শীতে কীভাবে রক্ষা করবেন আপনার শিশুকে
কনকনে শীতে ছোট্ট সোনামনির স্বাস্থ্যের ব্যাপারে বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েন বাবা-মায়েরা। সন্তানের কীভাবে যত্ন নেওয়া যায় সে সম্পর্কে আত্মীয়স্বজনের নানারকম পরামর্শ আর উপদেশ পেয়ে আপনি নিশ্চয় রয়েছেন গোলকধাঁধায়।
কিভাবে নেবেন আপনার শিশুর যত্ন এ নিয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শগুলো আপনাদের জানিয়ে দিতে চায় চীন আন্তর্জাতিক বেতার।
চলুন জেনে নেই শীতে শিশুর যত্ন নেওয়ার ৬ টি টিপস।
১. আপনার শিশুকে গরম ও আরামদায়ক পোশাক পরান
শীতের কনকনে ঠাণ্ডা থেকে শিশুকে রক্ষা করতে আপনি হয়তো মোটা সোয়েটার, গ্লাভ্স বা দস্তানা, মোজা ও আরো কত কী দিয়েই না তাকে ঢেকে রাখেন। তবে, এগুলো শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় হলেও খুব বেশি উষ্ণতা তার মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করতে পারে। ঘরের তাপমাত্রা অনুযায়ী আপনার শিশুকে পোশাক পরান। তাকে এমন পোশাক পরিধান করান যা তার দেহটিকে ঢেকে রাখে তবে তার চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে না। শিশুর জন্য হালকা কম্বল ব্যবহার করুন এবং কম্বলে তার নাক-মুখ ঢেকে গিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসে যেন বাধা তৈরি না হয় সেদিকে নজর রাখুন।
২. ঘরের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখুন
যদি এমন কোনও জায়গায় বাস করেন যেখানে বেশিরভাগ রাতেই ঠাণ্ডায় জমে যাওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়, তবে জানালাগুলি বন্ধ রাখুন এবং সম্ভব হলে হিটার চালিয়ে দিন। এটি যেন খুব বেশি গরম না হয়ে যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখা দরকার। এছাড়াও, শিশুর ঘরটিকে বায়ুচলাচলের জন্য উপযুক্ত রাখুন।
৩. মায়ের দুধ পান করান
বাচ্চার ছয় মাস বয়স হওয়া পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধই তার জন্য পুষ্টি এবং অ্যান্টিবডিগুলোর একমাত্র উৎস। নিয়মিত দুধপান শিশুকে নানারকম রোগবালাই থেকে সুরক্ষা দেয়।
৪. শিশুকে ম্যাসাজ করুন
শীতকালে আপনার ছোট্ট শিশুমনিকে সতেজ ও সুস্থ রাখতে দরকার নিয়মিত ম্যাসাজ। কারণ এটি তার ত্বক এবং স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। শিশুকে ম্যাসাজ করতে পারেন লোশন, অলিভ ওয়েল এমনকি সরিষার তেল দিয়েও। নিয়মিত ম্যাসাজ করলে তার দেহে রক্ত প্রবাহ সহজ হবে। পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও বেশ কার্যকর মালিশ। ভালো হয় আপনার বাচ্চা যখন খেলার মেজাজে থাকবে তখন তাকে ম্যাসাজ করুন।
৫. টিকাদানের সময়সূচি মেনে চলুন
শীতকালে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কমে যাওয়ার সাথে সাথে তার ঠাণ্ডা লাগা বা অন্য রোগে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ কারণে নির্ধারিত তারিখগুলোতে তাকে টিকা দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। সঠিক সময়ে বাচ্চাকে টিকা দেওয়া হলে, এটি তাকে সারাজীবন সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে।
৬. শিশুকে বাইরে নিতে হলে তার জন্য ভাল প্রস্তুতি নিন
একান্ত প্রয়োজন না হলে আপনার শিশুকে কনকনে ঠাণ্ডার মধ্যে বাইরে না নিয়ে যাওয়ায় ভালো। বাইরে নিতে হলে তাকে গরম পোশাক পরান এবং তার বুক, কান, হাত ও পা ঢেকে রাখুন। চেষ্টা করুন শিশুকে আপনার বুকের কাছাকাছি রাখতে, এতে করে আপনার শরীরের উষ্ণতা তাকে স্বাচ্ছন্দ্যে রাখবে।
৭. শিশুর গোসলের পর বাড়তি সতর্কতা
শিশুকে গোসল করানোর পরে তার দিকে খেয়াল না রাখলে তার সর্দি–কাশি হতে পারে। গোসলে কুসুম গরম পানির ব্যবহার সবচেয়ে ভালো। গোসলের পর তাকে একটা তোয়ালে দিয়ে জড়িয়ে রাখুন এবং বেশি দেরি না করে চটপট তাকে পোশাক পরিয়ে দিন।
৮. পরিচ্ছন্ন থাকুন
আপনার শিশুর জন্যই আপনাকে সুস্থ থাকবে হবে। নিজে পরিচ্ছন্ন থাকুন এবং পরিবারের সদস্যদের পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন। বাইরে থেকে অতিথি আসলে শিশুর কাছে যাওয়ার আগে বিনয়ের সাথে তাদের হাত ধুতে বলুন।
‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত।