দেহঘড়ি -- প্রথম পর্ব
2021-01-29 10:36:57

এ সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় স্বাস্থ্যখাত। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বাস্থ্য নিয়ে আমাদের নতুন আয়োজন দেহঘড়ি। প্রতি সপ্তাহে প্রচারিত হবে অনুষ্ঠানটি; শুনতে পাবেন ঢাকায় এফএম ১০২ এবং চট্টগ্রামে ৯০ মেগাহার্জে।

এ অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্বে থাকবে স্বাস্থ্যখাতের একটি করে সুখবর, স্বাস্থ্য বুলেটিন, খাদ্যের গুণাগুণ নিয়ে আয়োজন ‘কী খাবো কী খাবো না, প্রাকৃতিকভাবে রোগপ্রতিরোধ ও রোগমুক্তি নিয়ে কথন ভাল থাকার আছে উপায়’, সাক্ষাৎকারভিত্তিক আয়োজন আপনার ডাক্তার এবং মৌসুমী হেলথ টিপস’।

## সুখবর:  চট্রগ্রাম অঞ্চলে নির্মিত হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার ইউনিট

চট্টগ্রাম অঞ্চলে দিন দিন বেড়েই চলেছে মরণব্যাধী ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের তথ্যমতে, হাসপাতালটিতে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার ক্যান্সার রোগী শনাক্ত হয়েছেন। বিদ্যমান যন্ত্রপাতি ও জনবল দিয়ে এত রোগীর চিকিৎসা দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাই চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো সেখানে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার ইউনিট চালু করা। এরই প্রেক্ষাপটে সরকার চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতাল প্রাঙ্গণে একটি পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার ইউনিট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। একনেক সভায় প্রকল্পের অনুমোদনও হয়েছে।

এ নিয়ে চীন আান্তর্জাতিক বেতারের সাথে কথা বলেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার এস এম হুমায়ুন কবীর। তিনি জানান, এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ।

ক্যান্সার চিকিৎসায় চট্টগ্রামবাসীর জন্য মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডাক্তার ফরিদ হোসেন চীন আন্তর্জাতিক বেতারকে জানান, এটি চালু হলে বৃহত্তর চট্টগ্রামের হাজারো মানুষের ক্যান্সারের চিকিৎসা পাওয়া অনেক সহজ হবে। একই সাথে রাজধানীতে অবস্থিত জাতীয় ক্যান্সার হাসপাতালেও রোগীদের চাপ কমে আসবে।

শুধু চট্টগ্রাম নয়, দেশের অন্যান্য বিভাগীয় হাসপাতালগুলোতেও পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার ইউনিট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

## সপ্তাহের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে আয়োজন, হেলথ বুলেটিন।

১. বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২০ লাখ ৭০ হাজার মানুষের। করোনাভাইরাসের তথ্য নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার বলছে, এ পর্যন্ত সারা বিশ্বে করোনা মহামারীতে আক্রান্তের সংখ্যা ৯ কোটি ৬৭ লাখ । তবে ভালো খবর হলো ভাইরাসের আক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন প্রায় ৭ কোটি মানুষ। বিশ্বে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ দেশ যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু দু’টিই সবচেয়ে বেশি। আর মৃতের তালিকায় ভারতের অবস্থান এখনো তৃতীয়।

২. বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে টিকাদান কর্মসূচি। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, মেক্সিকো, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, ইসরায়েল ও কাতারসহ বেশ কয়েকটি দেশে করোনার টিকা নিচ্ছেন সাধারণ মানুষসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।

দেহঘড়ি -- প্রথম পর্ব_fororder_生物钟

৩. চীনের তৈরি করোনার ভ্যাকসিন দিয়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করেছে তুরস্ক, মিশর, ইন্দোনেশিয়া ও ব্রাজিলসহ বিশ্বের কমপক্ষে ১০টি দেশ। টিকা পেতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে চিলি, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, নাইজেরিয়ারসহ অনেক দেশ। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন বিশ্ব নেতাও চীনের সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাক বায়োটেকের টিকা গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে আছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো ইউদোদো, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস-প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মেদ বিন রাশিদ আল মাকদুম।

৪. বিশ্বের অন্যান্য দেশ যখন টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বয়স্ক ব্যাক্তিদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে, ঠিক সেই সময় উল্টো পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। দেশটিতে অপেক্ষাকৃত কম বয়সী কর্মজীবী ব্যক্তিরা আগে টিকা পাবেন, যাদের বয়স ১৮ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে। বয়স্কদের টিকা দেওয়ার পর এর পাশ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে চিন্তিত দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ, এ কারনেই উল্টো পথে যাত্রা ইন্দোনেশিয়ার।

৫. বাংলাদেশে করোনা টিকা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। জানুয়ারির শেষ দিকে দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে অক্সফোর্ডের টিকা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, চুক্তি অনুযায়ী প্রথম পর্বে ৫০ লাখ ডোজ টিকা দেবে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। অগ্রাধিকার-ভিত্তিতে টিকা পাবেন ডাক্তার-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ সম্মুখসারির করোনাযোদ্ধারা। টিকা পেতে ২৬ জানুয়ারি থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে অ্যাপ ও সফটওয়ারের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।  আর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য প্রয়োজনীয় টিকা উৎপাদন করার অনুমোদন পেয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক। তাদের উৎপাদিত টিকা বঙ্গভ্যাক্স মানবদেহে প্রয়োগের জন্য সরকার শিগগিরই অনুমতি দিবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন  গ্লোবের গবেষকরা।

## খাদ্যের গুণাগুণ নিয়ে আয়োজন ‘কী খাবো কী খাবো না’

কালোজিরা খাবেন কেন?

দেহঘড়ি -- প্রথম পর্ব_fororder_生物钟1

কলোজিরাকে অন্য সাধারণ মসলার সঙ্গে তুলনা করে থাকলে সেটা হবে একটা বড় ভুল। কালোজিরা কেবল রান্নায় ভিন্ন স্বাদ আনেনা, সর্বরোগের মহৌষধ বলা হয় একে। বিশ্বজুড়ে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই কালোজিরা। 

কালোজিরায় ভিটামিন, স্ফটিকল নাইজেলোন, অ্যামিনো অ্যাসিড, স্যাপোনিন, ক্রুড ফাইবার, প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড, ওলিক অ্যাসিড, আয়রন, সোডিয়াম, পটাসিয়াম ও ক্যালসিয়াম রয়েছে।

নিয়মিত কালোজিরা খেলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, একজিমা, এলার্জি ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়াও কালোজিরার আরও কিছু উপকারিতা রয়েছে:

১. মাথাব্যথা প্রতিকারে কালোজিরা তেল ব্যবহৃত হয়ে আসছে বহু কাল ধরে। গুরুতর মাথাব্যাথা হলে দিনে দুবার কালোজিরার তেল ব্যবহার করতে পারেন। তবে টানা ৩ সপ্তাহের বেশি এটা ব্যবহার করবেন না।

২. কালোজিরার তেল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। প্রতিদিন সকালে এক কাপ চায়ের সঙ্গে আধা চা চামচ তেল মিশিয়ে পান করুন। এক চামচ কালোজিরা চিবিয়েও খেতে পারেন প্রতিদিন।

৩. লেবুর রস ও কালোজিরার তেল মিশিয়ে দিনে দুবার মুখে লাগান। ত্বকে ব্রণ ও দাগ অদৃশ্য হয়ে যাবে।

৪. কালোজিরায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায়, প্রদাহ, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করার ক্ষমতাসহ লিভারকে সুরক্ষিত করতে সহায়তা করে। কালোজিরা রাসায়নিকের বিষাক্ততা কমাতে এবং লিভার ও কিডনিকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।

৫. সরিষার তেলের সঙ্গে কালোজিরা তেল গরম করে হাঁটু বা অন্য জয়েন্ট বা সন্ধিস্থলগুলোতে মালিশ করতে পারেন। এটি সন্ধিস্থলের ব্যথা থেকেও মুক্তি পেতে সহায়তা করবে।

৬. সর্দি-কাশিতে আরাম পেতে, এক চা চামচ কালোজিরার তেলের সঙ্গে ১ চা চামচ মধু বা এক কাপ লাল চায়ের সঙ্গে আধ চা চামচ কালোজিরের তেল মিশিয়ে দিনে তিনবার খান। বুকে কফ বসে গেলে কালোজিরা বেটে, মোটা করে প্রলেপ দিন একই সাথে।

৭. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে কালোজিরা। নিয়মিত এটি খেলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে।

৮. নিয়মিত কালোজিরা খেলে দেহে রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হয়। এতে করে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনের বৃদ্ধি ঘটে; যা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

৯. যারা হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য কালোজিরা একটি মহৌষধ। প্রতিদিন কালোজিরার ভর্তা রাখুন খাদ্যতালিকায়।

১০.   নিয়মিত কালোজিরা খাওয়ালে দ্রুত শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি ঘটে। কালোজিরা শিশুর মস্তিষ্কের সুস্থতা এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও অনেক কাজ করে।

১১.   যেসব মায়েদের বুকে পর্যাপ্ত দুধ নেই, তাদের মহৌষধ কালোজিরা। প্রসূতি মায়েরা প্রতি রাতে শোয়ার আগে ৫-১০ গ্রাম কালোজিরা মিহি করে দুধের সাথে খেলে মাত্র ১০-১৫ দিনে দুধের প্রবাহ বেড়ে যাবে।

১২.   এছাড়া নিয়মিত কালোজিরা সেবনে চুলের গোড়া পুষ্টি পায় ঠিকমতো, ফলে চুলের বৃদ্ধি ভালো হয় এবং চুল পড়া বন্ধ হয়। অনেকেরই চুল পড়া, দুর্বল চুল, শুষ্ক চুল ইত্যাদি নানা রকম সমস্যা থাকে। এক্ষেত্রে সপ্তাহে কয়েকবার কালোজিরার তেলের ব্যবহার চুলের সমস্যাকে দূর করতে পারে।

## প্রাকৃতিকভাবে রোগপ্রতিরোধ ও রোগমুক্তি নিয়ে কথন ‘ভাল থাকার আছে উপায়’

ওষুধ ছাড়াই যে আট উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করবেন রক্তচাপ

দেহঘড়ি -- প্রথম পর্ব_fororder_生物钟2

উচ্চ রক্তচাপকে বিশ্বব্যাপী নিরব ঘাতক হিসেবে অভিহিত করা হয়। প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৭ জন মানুষ উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকিতে থাকেন। পুরো ইউরোপ জুড়ে মোট ৪০ শতাংশ মৃত্যর পেছনে রয়েছে এই উচ্চ রক্তচাপ। উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে মৃত্যুর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থানও অনেক ওপরে। সারাদিন এক জায়গায় বসে কাজ করা, ব্যায়ামের অভাব, অতিরিক্ত লবণ খাওয়া, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা ইত্যাদি কারণেও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়। নিয়মিত কিছু সচেতনতা ও অভ্যাসের মাধ্যমেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। চলুন, ওষুধ ছাড়াই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার কিছু উপায় জেনে নেওয়া যাক:

১. যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভাসির্টি অব মিনোসোটার গবেষকদের মতে প্রতিদিন মাত্র এক কাপ করে টক দই খেলে উচ্চ রক্ত চাপ প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমে যায় এবং স্বাভাবিক হয়ে আসে। ওই গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রায় ১৫ বছর ধরে প্রতিদিন ১২০ গ্রাম টক দই খায় তাদের উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি প্রায় ৩১ শতাংশ কমে যায় অন্যদের তুলনায়।

২. সপ্তাহে অন্তত একদিন মাত্র একঘণ্টা করে জগিং করলে ৬ বছর আয়ু বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। কোপেনহেগেন সিটির হাটর্ কাডোর্ভাসক্যুলার স্টাডিতে ২৩ থেকে ৯৩ বছর বয়সী ২০,০০০ পুরুষ ও মহিলার ওপর গবেষণা করে এই তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষকদের মতে জগিং হৃদপিণ্ডের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয় এবং হৃৎপিণ্ডকে শক্তিশালী করে। রক্তচাপ কমিয়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি শরীরকে সতেজ ও সুস্থ রাখে।

৩. লবণ খেলে রক্তনালির রক্তের ঘনত্ব ও চাপ বেড়ে যায়। ফলে রক্ত চাপ বেড়ে যায়। তবে শুধুমাত্র লবণ নয় প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলেও রক্তচাপ বাড়ে। তাই প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে লবণ খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিন। আর ভাতের সঙ্গে অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করুন।

৪. মাত্র কয়েক কেজি ওজন কমালেও তার ইতিবাচক প্রভাব রক্তচাপের ওপর পড়ে বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ওজন বাড়লে হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক কাযর্ক্রম ব্যাহত হয় এবং রক্তচাপ বেড়ে যায়। তাই সব সময় চেষ্টা করুন ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে।

৫. ধূমপান করলে শরীরে নিকোটিনের প্রভাবে অ্যাড্রেনালিন উৎপন্ন হয়। ফলে হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন বেড়ে যায় এবং রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। তাই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ধূমপান পরিহার করুন।

৬. ব্রিটিশ মেডিকেল জানার্লের সা¤প্রতিক এক গবেষণায় দেখে গেছে, পটাসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার যেমন কলা খেলে লবণ খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। কলা খেলে শরীরে প্রয়োজনীয় পটাসিয়ামের অভাব পূরণ হয় এবং শরীরের ফ্লুইডের সমতা রক্ষা হয়। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

৭. ইউনিভাসির্টি অব ক্যালিফোনির্য়ার এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টার বেশি অফিসের কাজ করলে উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনা ১৪ শতাংশ বেড়ে যায়। ওভারটাইম কাজ করলে এই ঝুঁকি আরেও বেড়ে যায়।

৮. আমেরিকার উত্তর ক্যারোলিনার ডিউক ইউনিভাসির্টি অব মেডিকেল সেন্টারের মতে, যারা দিনে ৫০০ মিলিগ্রাম অর্থাৎ প্রায় ৩ কাপ চা/কফি খায় তাদের রক্তচাপ ৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এর প্রভাব রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত থাকে। তাই চা/কফি এড়িয়ে চলুন।

## সাক্ষাকার-ভিত্তিক আয়োজন ‘আপনার স্বাস্থ্য’

দেহঘড়ি -- প্রথম পর্ব_fororder_生物钟3

এ পর্বে আমরা কথা বলেছি গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ে। ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের ৮ থেকে ১৩ শতাংশ নারী গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস প্রসূতি মা ও গর্ভের সন্তানের জন্য বিভিন্ন ধরনের জটিলতার সৃষ্টি করে। এ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে মা যেমন ঝুঁকিতে পড়েন, তেমনি জন্মগত ত্রুটি নিয়ে সন্তান জন্ম নেওয়ার ঝুঁকি ৮ শতাংশ বেড়ে যায়। এ কারণে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস একটি বড় চিন্তার কারণ। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন দেশের একজন খ্যাতিমান প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রওশন আরা বেগম। ডা. রওশন আরা দায়িত্ব পালন করেছেন হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান হিসাবে। তিনি প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন অব্সটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনিকোলোজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ - ওজিএসবি’র প্রেসিডেন্ট হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন।

## শীতে কীভাবে স্বাস্থ্য রক্ষা করবেন

বাংলাদেশে এখন চলছে শীত মৌসুম। শীত এলেই অনেকে আক্রান্ত হয় জ্বর, সর্দি ও কাশিসহ নানা ধরনের রোগে। এই সময়ে শীতবাহিত রোগগুলো এড়িয়ে চলতে এবং সুস্থ থাকতে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। শীতে সুস্থ ও সুন্দর থাকতে ৫টি বিষয় মেনে চলুন:

১. শীতকালে প্রচুর সবজি খান। এ সময়ে বাজারে বাহারি শাকসবজি পাওয়া যায়। সবজি শরীরে পুষ্টি যোগায়, রোগব্যাধি কমায় এবং সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।

২. শীতকালে প্রতিদিন সূর্যের আলোতে কিছু সময় অবস্থান করুন। কারণ শীতে সূর্যের আলোতে একেবারে না গেলে সাধারণত ভিটামিন ডি’র স্বল্পতা দেখা দেয়। তবে তীব্র শীত ও শৈত্যপ্রবাহকালে যথাসম্ভব বেশি সময় ঘরে থাকুন।

৩. শীতে সময় অনেকেই পানি খেতে চান না। কিন্তু এ সময় শরীর আর্দ্র রাখতে প্রচুর পানি পান করা দরকার। শীতের সময় শরীর শুষ্ক হয়ে যায়। এ কারণে শরীরে চুলকানি এবং খসখসে ত্বকের মতো সমস্যা হয়। শীতের এই শুষ্কতা দূর করতে শুধু বাইরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলেই হবে না, ভেতর থেকে শরীরকে আর্দ্র করতে হবে। প্রচুর পানি পান করার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার, প্রচুর ফল ও শাকসবজি খেলে শরীর আর্দ্র থাকে।

৪. শীতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। এক্ষেত্রে একটি রুটিন করতে পারেন। শরীর ও মন সুস্থ রাখতে প্রতিদিন সেই রুটিন ফলো করে পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে নিন।

৫. দীর্ঘসময় বাইরে থাকলে হাইপোথার্মিয়ার মতো শীতজনিত কোনও কোনও রোগ হতে পারে। এসব রোগ থেকে বাঁচতে নিজেকে সবসময় উষ্ণ রাখার চেষ্টা করুন। শীতজনিত রোগ থেকে বাঁচতে বাইরে যাওয়ার আগে পর্যাপ্ত উষ্ণ কাপড় পরে নিন।

এ পর্বের ‘দেহঘড়ি’ এ পর্যন্ত। এ অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে প্রতি শুক্রবার; শুনতে পাবেন ঢাকায় এফএম ১০২ এবং চট্টগ্রামে ৯০ মেগাহার্জে। এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla, ওয়েবসাইট bengali.cri.cn অথবা ইউটিউব অ্যাকাউন্ট CMGBangla-এর মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত। আগামী সপ্তাহে আবার দেখা হবে। সে পর্যন্ত ভাল থাকুন, নিরাপদ থাকুন।

প্রতিবেদনগুলো তৈরীতে সহযোগিতা করেছেন শান্তা মারিয়া, আজহার লিমন, হাবিবুর রহমান অভি, তানজিদ বসুনিয়া এবং হোসনে মোবারক সৌরভ।