জানুয়ারি ২৮: আজ (বৃহস্পতিবার) ২০২১ সালের বসন্ত উত্সব উপলক্ষে চীনের সর্বস্তরের মানুষের যাতায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। বিদেশে কোরোনা মহামারী ছড়িয়ে যাওয়া এবং চীনের অভ্যন্তরে নতুন করে সংক্রমণ দেখা দেওয়ার কারণে বিভিন্ন স্থানে মানুষের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এ পরিস্থিতিতে চীনের রেলপথ, সড়ক, বিমান যোগাযোগ ইত্যাদি বিভাগ মহামারী নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের পাশাপাশি যাত্রীদের নিরাপত্তা জোরদার ও সুবিধা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে কেউ কেউ বলেন, ‘টিকেট কিনেছি, কিন্তু অবশেষে গন্তব্যে যাইনি’। কেউ আবার তাঁদের পরিবারকে খুব মনে পড়ছে বলে জানান। কিন্তু ফিরে গিয়ে অনেক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে হতে পারে, তাই শেষ সময়ে এসে যাত্রা বাতিল করেন।
বসন্ত উত্সবের ছুটিতে চীনের জনগণ প্রতি বছরই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করেন। যাতায়াতের বাড়তি চাঁপ সামলাতে ব্যবস্থা করা হয় বিশেষ পরিবহনের। পরিবহন খাত ওই সময়টাতে খুব ব্যস্ত সময় পার করে। এ বছরের যাতায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুও হয়েছে। তবে মহামারীর কারণে চলতি বছরের বসন্ত উত্সবের যাতায়াত একটু ব্যক্তিক্রম মনে হচ্ছে।
রেলপথ বিভাগ থেকে জানা গেছে, এ বছরের টিকেট বিক্রি আগের তুলনায় ৬০ শতাংশ কমে গেছে। জাতীয় রেলপথ গ্রুপের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সারা দেশে এবারের বসন্ত উত্সবের সময় যাত্রীর সংখ্যা ১৯.৬কোটি কমে যেতে পারে।
সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় পরিষদ এবারের মহামারী প্রেক্ষাপটে বসন্ত উত্সবের পরিবহন নিয়ে বিশেষ একটি কর্মসূচি প্রকাশ করেছে। এতে পরিবহনের ব্যস্ত সময় এড়ানো, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যস্ত সময় এড়ানো এবং পর্যটন স্থলে প্রতিদিন টিকেটের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়।
পরিবহন বিভাগের উচিত চাহিদা ও সামর্থ্যের সমন্বয় করা এবং বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে এবং গ্রামাঞ্চলে পরিবহন সামর্থ্য বাড়ানো।
পরিবহন বিভাগের পরিবহন পরিষেবা বিভাগের উপ-পরিচালক ওয়াং সিউ ছুন জানান, “পরিবহন বিভাগের লক্ষ্য হলো পরিবহন ব্যবস্থা জোরদার করে, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরিবহন বিতরণ করা এবং মানুষের একসাথে যাতায়াত করা এড়ানো। তাছাড়া, মানুষের সমাবেশ কমাতে হবে এবং মহামারী প্রতিরোধের মানদণ্ড উন্নীত করতে হবে। তার প্রধান পদ্ধতি হলো রেলপথ স্টেশন এবং যানবাহনের জীবাণুমুক্ত এবং বায়ু বিনিময় জোরদার করা, নিজের নামে টিকেট কেনা, নিজের টিকিটের নম্বর অনুসারে আসনে বসা, তাপমাত্রা মাপা, মাস্ক পরা, ‘এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখা’, যাত্রীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা এবং আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন ব্যবস্থার নিয়ম মেনে চলা ইত্যাদি। ”
রেলপথ বিভাগ খুব কঠোরভাবে যাত্রীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, যাত্রীদের তাপমাত্রা মাপা, দুটি আসনের মাঝে খালি রাখা, যাত্রীদের মাস্ক পরা এবং রেলগাড়িকে জীবাণুমুক্তকরণ ও বায়ু বিনিময়ের ব্যবস্থা জোরদার করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তাছাড়া, ই-টিকেট, অনলাইন বুকিং ইত্যাদি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
হু হ্য হাও থ্য রেলপথ ব্যুরোর পাওথৌ অংশের পরিচালক সু লি শা জানান, “আমরা রেল গাড়িতে জ্বর হওয়া যাত্রীদের জন্য বিশেষ আসন সংরক্ষণ করেছি। যদি কোন জ্বরে ভোগা যাত্রী থাকে, আমরা সংশ্লিষ্ট সতর্ক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তাছাড়া, গাড়িতে ‘ভাইরাস প্রতিরোধ জরুরী প্যাকেজ’ আছে। সেখানে মাস্ক, চশমা, দস্তানা ইত্যাদি জিনিস থাকে। জরুরী অবস্থায় যাত্রীদের ব্যবহার করার জন্য।”
এছাড়া, যাত্রীদের সুবিধার জন্য টিকেট ফেরত দেওয়া বা পরিবর্তন করার ব্যবস্থাও সহজ করা হয়েছে।
(ইয়াং/এনাম/ছাই)