আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: এআই
2021-01-27 11:09:05

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: এআই_fororder_rengong2

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: এআই_fororder_rengong

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: এআই_fororder_rengong1

দেখতে দেখতে একটা বছর কেটে গেল। নভেল করোনাভাইরাস মহামারী দেখা দেওয়ার পরের একটি কঠিন বছর। পৃথিবীর মানুষের জীবন অনেকক্ষেত্রেই বদলে গেছে এই এক বছরে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সব খাত। চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পেও মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশ্বের বহু প্রেক্ষাগৃহ গত এক বছর ধরে বন্ধ। বিশ্বব্যাপী চলচ্চিত্র তৈরির প্রক্রিয়া বলতে গেলে থমকে দাঁড়িয়ে আছে।

আপাতত নিঃসন্দেহে ২০২০ সাল ছিল চলচ্চিত্রজগতের জন্য অন্ধকার সময়।  

২০২০ সালে খুব কম নতুন চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়েছে। আসুন আমরা আগের ক্ল্যাসিকাল চলচ্চিত্রের ওপর খানিকটা নজর বুলিয়ে নিই।  

আজকের ‘আলোছায়া’ অনুষ্ঠানে আমরা ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: এআই’ নামের একটি পুরাতন চলচ্চিত্রের সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেবো। আপনারা যারা দেখেছেন তারাও আশা করি আলোচনা শুনে নিজেদের স্মৃতি ঝালাই করে নিতে পারবেন।

২০ বছর আগে ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: এআই’ নামের এ চলচ্চিত্র নির্মিত ও প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হয়। ২০ শতাব্দীর ৮০ দশকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার Stanley Kubrick স্ট্যানলি কুবরিক ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: এআই’ নামের উপন্যাসের গল্প রূপালি পর্দায় তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। তবে সেই সময় একদিকে উপন্যাস অনুযায়ী নির্মিত পাণ্ডুলিপি নিয়ে তিনি যথেষ্ট সন্তুষ্ট ছিলেন না, অন্যদিকে তখনকার স্পেশাল ইফেক্ট প্রযুক্তি এতো পরিপক্ব ছিল না। এ কারনে তিনি উদ্বিগ্ন ছিলেন। চলচ্চিত্র নির্মাণের কাজে হাত দিতে পারেননি। এভাবে সময় পার হয়ে যায়। একদিন তিনি Steven Allan Spielberg  স্টিভেন এলান স্পিলবার্গ পরিচালিত ‘Jurassic Park  জুরাসিক পার্ক’ নামের  চলচ্চিত্র দেখেন। সূক্ষ্ম মডেল এবং সর্বশেষ কম্পিউটার প্রযুক্তির সমন্বয়ের ফলে প্রাণবন্ত ডাইনোসোর তৈরি করে চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছে। তাই কুবরিক স্পিলবার্গকে ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: এআই’ নামের ফিল্ম পরিচালনার আমন্ত্রণ জানান। ‘আপনি পরিচালক হিসেবে এবং আমি চিত্রনাট্যকার হিসেবে এ চলচ্চিত্র নির্মাণ করবো।’—তিনি বলেছিলেন। দুঃখের বিষয় হলো কুবরিক ১৯৯৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন এবং অবশেষে এ চলচ্চিত্র দেখার সুযোগ তিনি পাননি। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এই  বিজ্ঞান কল্পকাহিনীমূলক চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। স্পিলবার্গ একে কুবরেকের স্মরণে উৎসর্গ করেন।

‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: এআই’ নামের চলচ্চিত্র তৈরিতে মোট ১০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় হয়। এই অংক ‘Jurassic Park  জুরাসিক পার্ক’ নামের চলচ্চিত্রের খরচ ছাড়িয়ে যায়। এর স্পেশাল ইফেক্ট এই সময়ে এসে দেখতেও ভালো লাগে।

‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: এআই’ নামের চলচ্চিত্রের কাহিনী কয়েক শ বছর পরের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে লিখিত।  মানবজাতির অতিরিক্ত বাবুগিরির ফলে হিমবাহ গলে যায় এবং অনেকের বাসস্থান প্লাবিত হয়। কোনো কোনো দেশ মানবজাতির জন্ম সীমাবন্ধ করার এবং আরো পরিবেশবান্ধব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর গবেষণা করে। বলা যায়, এসব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো রোবটের চূড়ান্ত রূপ। তাদের আচরণ মানুষের মতো। মানুষের ভীরে মিশে গেলে তাদের চেনা মুশকিল। তারা কটু কথায় ব্যথাও বোধ করে! তারপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একসময় ভালোবাসা বুঝতে শেখে। মানুষের চেয়ে তাদের ভালোবাসা আরও নিবেদিত ও স্থায়ী। পুরো মন দিয়ে একজনকে ভালোবাসলে তারা ধ্বংস না-হওয়া পর্যন্ত ভালোবাসতেই থাকে।

ডেভিড হচ্ছে মানুষের ভাবানুভূতির অধিকারী একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

চলচ্চিত্রে দেখা যায়, একটি পরিবারের এক বালক সড়ক দুর্ঘটনায় কোমায় চলে যায়। তাকে কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রাখা হয়। শেষে পরিবারটি ডেভিড নামের একটি বালক রোবটকে দত্তক নেয়। খুব দ্রুত সে পরিবারের একজন সদস্য হয়ে ওঠে। ডেভিড সন্তানের শোকে কাতর মা-কে সমবেদনা জানায়, তাকে ভালোবাসে।

ডেভিডের আচরণ মাঝে মাঝে একটু আশ্চর্যজনক। সে মানুষের মতো খেতে পারে না, পানও করতে পারে না। তবে মা’র প্রতি তার ভালোবাসা সহজ ও উষ্ণ।

সে মাকে জিজ্ঞাস করে, মানুষ কতো বছর বেঁচে থাকতে পারে? মা উত্তর দেন যে, ‘আমি হয়তো আর ৫০ বছর বেঁচে থাকবো।’

৫০ বছর অমর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জন্য অত্যন্ত স্বল্প সময়। তাই ডেভিড গোপনে প্রতিজ্ঞা করে যে, মা’র সঙ্গে প্রতিটি মিনিট ও সেকেন্ডের মূল্য দেবে।  

তবে গল্পের কাহিনীতে একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে। মা’র জৈবিক পুত্র মার্টিন কোমা থেকে জেগে ওঠে। এভাবে ডেভিডের অপরিহার্যতা পরিবারে হ্রাস পায়। কিন্তু সে মার্টিনের খেলার সঙ্গিতে পরিণত হয়। খাবার টেবিলে একদিন মার্টিনের সঙ্গে সবজি খাওয়ার প্রতিযোগিতা করে ডেভিড। ফলে ডেভিডের কৃত্রিম শরীর খারাপ হয়। মেরামত  করার পর সে আবার ভালো হয়।

তারপর ডেভিড বার বার একটার পর একটা ভুল করতে থাকে। ইচ্ছায় নয়, অনিচ্ছায়। সে মা’র চুল কাটতে গিয়ে মা ও বাবাকে ভয় পাইয়ে দেয়। একবার সে মার্টিনকে সাঁতারের পুলে ঠেলে দেয় এবং এতে মার্টিনও প্রাণ প্রায় যায় যায় অবস্থা।  

এসময় মা-বাবা’র চোখে ডেভিড হয়ে ওঠে মূর্তিমান আতঙ্ক। কখন কোন ভুল করে বসে! কিন্তু ডেভিডকে তার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের হাতে দিয়ে দিলে, চুক্তির শর্ত অনুসারে তারা তাকে ধ্বংস করে দেবে। মা এটা হতে দিতে নারাজ। তাই মা ড্যাভিড ও তার প্রিয় টেডি বেয়ারকে বনের মধ্যে রেখে চলে আসেন।

ডেভিড কিন্তু মা-কে এর জন্য দোষ দেয়নি! সে নিজেকেই দোষ দিতে থাকে। সে মনে করে, মা তাকে ভালোবাসে না কারণ সে মানুষ না। তাই সে ভাবে যে, শুধু মানুষে পরিণত হলেই মা তাকে ভালোবাসবেন। এমন ধরনের ঘোর নিয়ে ডেভিড রূপকথার পরীকে খুঁজে বের করতে লম্বা যাত্রা শুরু করে।

এভাবে দু’হাজার বছর পার হয়ে যায়। সমুদ্রের জল জমে গেছে এবং মানবজাতি অনেক আগেও অদৃশ্য হয়ে গেছে। সমুদ্রের নীচে ফ্রিজ হয়ে থাকা ডেভিডকে আবিষ্কার করে ভিনগ্রহের বাসিন্দারা।  তাদের সাহায্যে ডেভিড তার কাছে থাকা মা’র চুল থেকে মায়ের ক্লোন তৈরি করে। আসলে ডেভিড কি মানবে পরিণত হওয়ার কোনো দরকার আছে? না, আমি তা মনে করি না। মা’র প্রতি তার চিরন্তন ভালোবাসার কারণে সে সত্যিকার অর্থেই একজন মানবে পরিণত হয়ে যায়! সে অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারে এবং অন্যদের ভালোবাসা পাওয়ার আশা-আকাঙ্ক্ষা রাখতে পারে।  

চলচ্চিত্রের শেষ দিকে, দু’হাজার বছরের অপেক্ষার পর ডেভিডের সঙ্গে মা’র দেখা হয়। ডেভিড মানব শিশুতে পরিণত না হলেও, ভিনগ্রহের বাসিন্দাদের দৃষ্টিতে সে মানুষের জীবিত জীবাশ্ম, কারণ তার অনন্য স্মৃতি ও ভাবানুভূতি আছে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: এআই নামের চলচ্চিত্রটিতে যেন এ কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে যে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যত দ্রুত উন্নত হোক না কেন, ভালোবাস হলো ইউনিভার্সের চূড়ান্ত কথা। ভালোবাসা থাকলে মানব প্রকৃতি বাঁচিয়ে রাখা যায় এবং সারা বিশ্ব কাজ করতে পারে।

চলচ্চিত্রটি মোট পাঁচটি স্যাটার্ন পুরস্কার অর্জন করেছে যার মধ্যে সেরা বিজ্ঞান কল্পকাহিনীমূলক চলচ্চিত্র পুরস্কারও রয়েছে। এ ছাড়া দুইটি ক্ষেত্রে একাডেমি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিল। ক্ষেত্র দুটি হল সেরা ভিজুয়াল ইফেক্ট এবং সেরা মূল সঙ্গীত স্কোর।

প্রিয় বন্ধুরা, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: এআই নামে চলচ্চিত্রের প্রধান বিষয় শোনার পর এবার আমরা এআই নিয়ে একটু আলোচনা করবো।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কী?

মজার ব্যাপার হলো, এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে অনেকের মাঝেই বিতর্ক হয়। অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দ্বারা আসলে মুক্ত চিন্তার ও সচেতন কম্পিউটার সিস্টেম বোঝায়, যা জীবিত প্রাণির মতোই নিজস্ব মতামত পোষণ করতে পারবে। বাস্তবে আমরা এরকম কম্পিউটার সিস্টেম তৈরি করা থেকে এখনো বহুদূরে রয়েছি।

 

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআইভিত্তিক প্রোগ্রাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডাটা অনুসন্ধান ও পরিমাপের মাধ্যমে ফলাফল নির্ণয় করে, যার ফলে প্রাপ্ত ফলাফল হয় ডাটানির্ভর এবং পরিমাপযোগ্য।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মার্কেট ভ্যালু বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হচ্ছে ব্যবসাক্ষেত্রে এই প্রযুক্তির বৈপ্লবিক প্রয়োগ। বিশ্বের অসংখ্য ব্যবসা ও সার্ভিস এখন ‘এআই” বা মেশিন লার্নিং সেবা’ দিচ্ছে । সবচেয়ে সহজ উদাহরণ হলো এআই চ্যাটবট। মেশিন লার্নিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে শেখা এই চ্যাটবটের সাথে মানুষ কথা বলতে পারবে, এমনকি বিভিন্ন তথ্যও জানতে পারবে এই চ্যাটবটগুলোর কাছ থেকে। এই ক্ষেত্রে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স হলো এমন এক ধরনের কম্পিউটার সিস্টেম যা এমন সকল কাজ করতে সক্ষম যা করার জন্য সাধারণত মানুষের বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়। এমন কিছু কাজের উদাহরণ হলো স্পিচ রিকগনিশন, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা (Decision Making) এবং এক ভাষা থেকে আরেক ভাষায় লেখা বা কথা অনুবাদ করা।

 

মহামারিজনিত লকডাউন, ডিজিটালাইজেশন এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লব (ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভল্যুশন–ফোরআইআর)—এই সবকিছুই বৈশ্বিক শাসন ও পরিচালনব্যবস্থার খোলনলচে বদলে দিচ্ছে। যেহেতু বিশ্বের প্রযুক্তি নেতারা একই সঙ্গে ভূরাজনৈতিক নেতাও হয়ে উঠতে যাচ্ছেন, সেহেতু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, সংক্ষেপে এআই) মতো সর্বাধুনিক বা সর্বসাম্প্রতিক খাতে প্রাধান্য বিস্তারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে।

ধারণা করা হচ্ছে কোভিড–১৯ মহামারির পরে আগামী দিনগুলোতে বিশ্বের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারের দৌড়ে প্রাথমিক ধাপ হবে ফোরআইআর প্রযুক্তির প্রতিযোগিতা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নয়নের দিক থেকে এক নম্বরে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে তাকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে চীন। এর বাইরে রাশিয়াসহ অন্য কিছু দেশও শক্তিশালী অবস্থানে আছে।

চীন এ খাতে (চিপ ও ইলেকট্রিক কার উৎপাদনসহ) ইতিমধ্যে ৩০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। দেশটি ‘মেড ইন চায়না ২০২৫’ শীর্ষক জাতীয় উদ্ভাবন কৌশলনীতি গ্রহণ করেছে এবং এসব তৎপরতার মাধ্যমে তারা বাইডু, আলিবাবা ও টেনসেন্টের মতো বিশাল প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পেরেছে।

তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই উন্নয়নে চীন বিশাল ভূমিকা রাখলেও এ খাতে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাওয়ার আগে তার আরও অনেক কিছু করার আছে। গবেষণা বলছে, তিনটি ক্ষেত্রে চীন এখনো পিছিয়ে আছে। সেগুলো হলো হার্ডওয়্যার, গবেষণা এবং বাণিজ্যিক খাত।

যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের বাইরে ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোও ফোরআইআর উদ্ভাবনের দিকে ঝুঁকেছে। যেমন, যুক্তরাজ্য তাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে পর্যাপ্ত তহবিল সরবরাহ করে এআই প্রস্তুতির দিক থেকে শীর্ষ চারটি দেশের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। একইভাবে এশিয়ার অনেক দেশ এআই এবং রোবট প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় বিভিন্ন কারখানায় রোবটের ব্যবহার অনেক গুণ বাড়ানো হয়েছে। প্রতি ১০ হাজার কর্মী গড়ে যে পরিমাণ পণ্য উৎপাদনে সক্ষম, ৭৭৪টি রোবট একই পরিমাণ পণ্য উৎপাদন করতে পারে। গাড়ি প্রস্তুত করার দিক থেকে আগে থেকেই জাপান শীর্ষস্থানে। তারা এখন এই শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার এমন পর্যায়ে ইতিমধ্যেই নিয়ে এসেছে যে অদূর ভবিষ্যতে সেখানে গাড়ি উৎপাদনের কারখানায় মানুষের সরাসরি উপস্থিতি প্রয়োজন হবে না।

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে প্রচুর ক্ষতি হলেও ডিজিটালাইজেশন সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে এটি বিরাট ভূমিকা রেখেছে। কোভিড–১৯ রোগীর অবস্থান অনুসরণ, রোগী শনাক্তকরণ, শারীরিক পরীক্ষা করা, মহামারি সম্পর্কে পূর্বাভাস দেওয়া, ঘরে বসে অফিসের কাজ করা, ই-কমার্স চালিয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফোরআইআর প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার এক সপ্তাহ আগেই প্রথম একটি এআই প্ল্যাটফর্ম এ ভাইরাসের মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার লক্ষণ শনাক্ত করে। তখন থেকেই এ মহামারির গতিধারা বিশ্লেষণে এআই কাজ করে যাচ্ছে।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে এআই প্রযুক্তির ব্যবহারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

আফ্রিকায় যে শিশুরা ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন সুবিধার বাইরে রয়েছে, তাদের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা পরিচালিত এসএমএস প্ল্যাটফর্ম আছে। এর মাধ্যমে শিক্ষামূলক কনটেন্ট সরবরাহ করা হচ্ছে।

কোভিড-১৯ মহামারি এআই প্রযুক্তি উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সুযোগও করে দিয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে এ প্রযুক্তির পারস্পরিক সহযোগিতা বিনিময় দরকার। (লিলি/আলিম/শুয়ে)