সংবাদ পর্যালোচনা ‘দাভোস সংলাপে’ চীনা প্রেসিডেন্টের ভাষণ বর্তমান যুগের জন্য বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ
2021-01-26 16:11:49

সংবাদ পর্যালোচনা ‘দাভোস সংলাপে’ চীনা প্রেসিডেন্টের ভাষণ বর্তমান যুগের জন্য বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ_fororder_0126shishi

জানুয়ারি ২৬: গতকাল (সোমবার) অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামের ভিডিও-সম্মেলন ‘দাভোস কর্মসূচি’ সংলাপে অংশগ্রহণ করেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। তিনি ‘বহুপক্ষবাদের মশাল দিয়ে মানবজাতির সামনের পথ আলোকিত করুন’ শীর্ষক একটি ভাষণ দেন। অনেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, চীনা প্রেসিডেন্টের এ ভাষণে বর্তমান যুগের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং মহামারী-উত্তর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও বৈশ্বিক পরিচালনাব্যবস্থা সম্পূর্ণকরণ প্রচেষ্টার জন্য এ ভাষণ তাত্পর্যপূর্ণ। ভাষণে বিশ্ব-প্রেক্ষাপটে চীনের দায়িত্বশীল মনোভাবও  প্রতিফলিত হয়।

চীনের আন্তর্জাতিক স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের আমেরিকান স্টাডিজ বিভাগের উপ-পরিচালক সু শিয়াও হুই বলেন, প্রেসিডেন্ট সি’র ভাষণে বর্তমান বিশ্বের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট সি তার ভাষণে মতাদর্শের মধ্যে বিরোধকে বর্তমান বিশ্বের একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন। মতাদর্শগত বিরোধ শুধু নিরাপত্তা-সমস্যা নয়, বরং বড় বড় দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ার পথেও বাধা। এ ধরনের বিরোধ বিশ্বের ভবিষ্যত নিয়ে সহযোগিতা ও মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠনের পথেও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আরেকটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হলো উন্নয়নের ব্যবধান। বতর্মানে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সময়টা কঠিনতর। কারণ, মহামারীর পাশাপাশি বিশ্বে একপক্ষবাদ ও বাণিজ্যে সংরক্ষণবাদ এসব দেশের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্বের উন্নয়নও এখন আগের যে-কোনো সময়ের তুলনায় কঠিনতর। এতে বিশ্বের সব অর্থনৈতিক সত্তা প্রভাবিত হয়েছে ও হবে। এটা হলো চীনের উদ্বেগের বিষয়।

চীনের বিদেশবিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চেয়ারম্যান কাও ফেই মনে করেন, চীনা প্রেসিডেন্টের উত্থাপিত চারটি বিষয়ই বতর্মান বিশ্বের জন্য জরুরি। এর মধ্যে উন্নয়নের সমস্যা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন, মহামারীর প্রেক্ষাপটে বিশ্বের বিদ্যমান সমস্যাগুলো, বিশেষ করে উন্নয়ন-ব্যবধানের সমস্যা আগের চেয়ে আরো সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ ব্যবধানের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। তার মূল কারণ হলো উন্নয়নের ভারসাম্যহীনতা।

চীনা প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যা জটিল হলেও, তা সমাধানের উপায় আছে। বহুপক্ষবাদ রক্ষা করা ও মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠন করা হচ্ছে সেই উপায়।

সু শিয়াও হুই মনে করেন, প্রেসিডেন্ট সি চীনের দৃষ্টিকোণ থেকে বহুপক্ষবাদের বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, এসব সমস্যা সমাধানের উপায় হলো বহুপক্ষবাদ এবং মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠন করা। চীনের দৃষ্টিকোণ থেকে বহুপক্ষবাদ কোনো মতলবের আবরণ নয়, বরং বিশ্বের ভবিষ্যত উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় নিয়ম।

ভবিষ্যতেও চীন মহামারী প্রতিরোধ-কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে এবং উন্মুক্তকরণ ও কল্যাণের নীতি অনুসরণ করে যাবে। চীন অব্যাহতভাবে টেকসই উন্নয়ন, বৈজ্ঞানিক নব্যতাপ্রবর্তন এবং নতুন ধরনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গঠনে নিজের অবদান রাখবে।

কাও ফেই মনে করেন, এতে চীনের দায়িত্বশীল মনোভাব প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে দাভোস ফোরামে চীনা প্রেসিডেন্টের ভাষণ পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, চীন যেভাবে ঘোষণা দিয়েছে সেভাবে কাজ করেছে। আমরা ঘোষিত কথার মতো সামনের পথে চলতে থাকবো। (ইয়াং/আলিম/ছাই)