ক্যামেরুন প্রকল্পে চীনা অভিভাবক
2021-01-25 09:45:32

ক্যামেরুন প্রকল্পে চীনা অভিভাবক_fororder___172.100.100.3_temp_9500049_1_9500049_1_1_f2a56822-9ffd-4ec4-9f3e-16ba3330f78a

ক্যামেরুনের কথা বললে প্রথমেই মনে আসে ১৯৯০ সালে দেশটির বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার কথা। সেটি ছিল বিশ্বকাপে আফ্রিকার দেশগুলোর শ্রেষ্ঠ সাফল্য।

বর্তমানে বেইজিং নগর নির্মাণ বিনিয়োগ ও উন্নয়ন কোম্পানি (Beijing Urban Construction Investment & Development Co.,Ltd) ক্যামেরুনে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে। কোম্পানিটি ক্যামেরুনের সংসদভবন নির্মাণের কাজ করছে। এ প্রকল্প দু’দেশের মৈত্রী উন্নয়নে অবদান রাখছে। কিন্তু গেল বছর কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। সেজন্য নির্মাণকাজ বন্ধ ছিল। ২০২০ সালের ৬ মার্চে ক্যামেরুনে প্রথম কোভিড রোগী শনাক্ত হয় এবং এরপর তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। আফ্রিকার অন্যান্য দেশের মতো ক্যামেরুনের চিকিত্সাব্যবস্থা তেমন একটা ভালো নয়। কোভিড শনাক্ত ও চিকিত্সার সামর্থ্যও কম। এ ছাড়া, আফ্রিকায় ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড, ইবোলার হুমকি আছে। সেজন্য চীনা কর্মীদের স্বাস্থ্য ও জীবনের নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে পড়ে। ফলে প্রকল্পের কাজও থমকে যায়।

এসময় চীনা কোম্পানি দ্রুত মহামারি প্রতিরোধে জরুরি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। পরিকল্পনা অনুসারে, মহামারী প্রতিরোধ নেতৃত্ব গ্রুপের প্রধান লাই ইয়ৌ চি সময়মতো স্থানীয় চিকিত্সা গ্রুপের সঙ্গে পারস্পরিক সহায়তা গ্রুপ গড়ে তোলেন এবং ক্যামেরুনে চীনা দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক অফিসের নির্দেশনায় যৌথভাবে জরুরি প্রতিরোধ পরিকল্পনা বাস্তবায়নকাজ শুরু করেন। লাই একদিকে চিকিত্সা গ্রুপের সঙ্গে অনলাইনে রোগনির্ণয় ও চিকিত্সার কাজ করতে থাকেন, এবং অন্যদিকে নিজেও রোগীদের যত্ন নিতে থাকেন। এভাবে তিনি প্রকল্পের সকল চীনা কর্মীর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করেন।

ক্যামেরুন প্রকল্পে চীনা অভিভাবক_fororder___172.100.100.3_temp_9500049_1_9500049_1_1_95599cd8-e03d-47d5-bfb0-b0983f457ee5

লাই’র মতো লোক সেখানে আরও আছে। যেমন, চাং ওয়েই ছিং ও গাও স্যিং ইউ। তাঁদের একজন প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্য ক্রয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত। চাং ১৯৯৬ সালে জন্মগ্রহণকারী একজন তরুণী। তাঁর বয়স সবচেয়ে কম। তিনি চীনা কোম্পানির একজন অনুবাদক। অনুবাদের কাজ ছাড়াও তিনি সকল কর্মীর জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করার দায়িত্বও পালন করেন। মহামারীর সময় তিনি কর্মীদের ফ্রেশ খাবার কেনার জন্য প্রতি সপ্তাহে একবার বাজারে যেতেন।

গাও স্যিং ইউ ১৯৯৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনিও প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার দায়িত্ব পালন করেন। মহামারী ছড়িয়ে পড়ার প্রথম দিকে স্থানীয় নাগরিকরা কোভিড-১৯ মহামারীর ক্ষতি ও সংক্রমণ পরিস্থিতির তীব্রতা সম্পর্কে তেমন একটি ধারণা রাখতেন না। তখন গাও মাস্ক পরে বাজারে গিয়ে স্থানীয়দের মহামারী সম্পর্কে সচেতন করতে শুরু করেন। আস্তে আস্তে স্থানীয় মানুষ মহামারী সম্পর্কে ধারণা পায়। গাও’র পরামর্শ শুনে বাজারে অনেক মানুষ মাস্ক পরা শুরু করেন। তিনি জানান, তাঁরা এখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেন এবং ব্যক্তিগত মহামারী প্রতিরোধক ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছেন।

গাও-এর মতো লোকেরা যেন ক্যামেরুণে দেবদূতের মতো কাজ করেছেন। তাদের কারণে চীনা কর্মীদের সুস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। পাশাপাশি, স্থানীয়রাও উপকৃত হয়েছেন।

বন্ধুরা, শুনছিলেন ক্যামেরুনে চীনা কর্মীদের মহামারী প্রতিরোধে ভূমিকা রাখার গল্প।