এআইআইবি’র পঞ্চম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে এর সফলতা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা
2021-01-20 10:36:51

 

 

গত ১৬ জানুয়ারি পালিত হয় এশিয়া অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি)’র পঞ্চম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। ২০১৬ সালের ওই দিনে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছিল ব্যাংকটি। তার আগে ৮০০দিন ধরে ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল বহুজাতিক এ আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ব্যাংকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছিলেন,  এআইআইবি সব সদস্যদের ব্যাংক। এটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাংক।

 

গেল ৫ বছরে ব্যাংকটি কী কী কাজ করেছে?

 

২০২০ সালের শেষ দিকে এআইআইবির অর্থায়নে শ্রীলংকায় একটি নিরাপদ আবাসন প্রকল্পের নির্মাণ শুরু হয়। এটি গত ৫ বছরে এআইআইবির বিনিয়োগকৃত মোট ১০৮টি প্রকল্পের অন্যতম একটি। ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর এআইআইবির বিনিয়োগ করা প্রকল্পের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৮, ১৫, ১২, ২৮, ও ৪৫। পাশাপাশি, বিনিয়োগের পরিমাণও দিন দিন বাড়ছে। ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এআইআইবির বিনিয়োগ পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১৬৯কোটি, ২৫০কোটি, ৩৩১কোটি, ৪৫৪কোটি ও ৯৯৮কোটি মার্কিন ডলার। সব মিলিয়ে বিনিয়োগের মোট পরিমাণ ২,২০২কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।

 

গত ৫ বছরে এআইআইবির সদস্য সংখ্যা শুরুর ৫৭ থেকে উন্নীত হয় ১০৩-এ দাঁড়িয়েছে, যা বিশ্ব ব্যাংকের পর বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। প্রকল্প ও বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ার পাশাপাশি এআইআইবির বিশ্বাসযোগ্যতাও দিন দিন বাড়ছে।  এতে ব্যাংকটির উদ্যোক্তা এবং দায়িত্বশীল বড় দেশ হিসেবে চীনের বিশ্বাসযোগ্যতাও সারা বিশ্বে প্রতি নিয়ত বেড়েই চলছে।

 

এআইআইবি প্রদত্ত ঋণ মূলত দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পশ্চিম এশিয়া ও মধ্য এশিয়ায় ব্যবহার করা হয়। ব্যাংকটির বৃহত্তম শেয়ারহোল্ডার হওয়া সত্বেও ঋণের সংখ্যা ও পরিমাণের দিক থেকে চীন  কখনও নিজেকে প্রথম স্থানে রাখে নি।

 

এআইআইবির ব্যবস্থাপনাও মহামারিতে কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিলে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় এআইআইবি ৫০০কোটি মার্কিন ডলারের পুনরুদ্ধার তহবিল গঠন করে এবং পরে এর পরিমাণ বাড়িয়ে ১হাজার কোটিতে উন্নীত করা হয়। পরে আবার তহবিলের পরিমাণ ১,৩০০কোটিতে উন্নীত করা হয়। এ পর্যন্ত এ কাঠামোতে মোট ৭০৭.৭কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে ব্যাংকটি।

 

মহামারি-পরবর্তী সময়ে এআইআইবির ভূমিকা কেমন হবে?

 

ভবিষ্যতে অবকাঠামো খাতকে কেন্দ্র করে কাজ করবে ব্যাংকটি। পাশাপাশি স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও চিকিত্সাসহ সামাজিক অবকাঠামো ক্ষেত্রেও বিনিয়োগ করবে।  এআাইআইবি প্রকাশিত আগামি দশকের উন্নয়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৫ সালে জলবায়ু খাতে অর্থের অনুপাত ৫০শতাংশ পৌঁছাবে। ২০৩০ সালে আন্তঃসীমান্ত যোগাযোগের অনুপাত ২০ থেকে ৩০ শতাংশ হবে এবং অর্থে বেসরকারি হিস্যার অনুপাত ৫০শতাংশ হবে।

 

নতুন সূচনায় দাঁড়িয়ে আরও উচ্চ মানসম্পন্ন ও গুণগতমানের দিকে এগিয়ে যাবে এআইআইবি। এ ব্যাংক ভবিষ্যতে বিশ্বের অভিন্ন উন্নয়ন এগিয়ে নেবে এমন একটি বহুক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও নতুন উন্নয়নের প্ল্যাটফর্ম হবে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতার দৃষ্টান্ত হবে এআইআইবি।

(শিশির/এনাম/রুবি)