করোনার টিকা বিতরণে বৈষম্য থাকা উচিত নয়: হু
2021-01-19 15:31:46

জানুয়ারি ১৯: স্থানীয় সময় গতকাল (সোমবার) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)’র ১৪৮তম কার্যনির্বাহী কমিটির সম্মেলনে সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস অ্যাধনম ঘেব্রেইয়েসাস সব দেশকে নভেল করোনাভাইরাস বিতরণের ক্ষেত্রে কোন ধরনের বৈষম্য না করার আহ্বান জানিয়েছেন। বিস্তারিত শুনবেন আজকের সংবাদ পর্যালোচনায়।

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৪৮তম কার্যনির্বাহী কমিটির সম্মেলন গতকাল (সোমবার) অনলাইনে শুরু হয়েছে। এটি আগামি ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। সম্মেলনে চলতি বছরের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়নের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে। সংস্থার মহাপরিচালক তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, নভেল করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পরে এক বছরের মধ্যে নিরাপদ এবং কার্যকর টিকা তৈরি হয়েছে। এটি একটি অসাধারণ বৈজ্ঞানিক কৃতিত্ব এবং আশার উত্স।

 

রূপান্তরিত নতুন প্রজাতির নভেল করোনাভাইরাস সাম্প্রতিক সময়ে নানা দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণে টিকার গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, আসল বিপদ হল টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা।

 

তিনি বলেন, নভেল করোনাভাইরাসের টিকাগুলোর বিতরণে সমতা নিশ্চিত করা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কমপক্ষে ৪৯টি উচ্চ-আয়ের দেশে এখন পর্যন্ত ৩৯মিলিয়নেরও বেশি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।  তবে, একটি নিম্ন আয়ের দেশ কেবল ২৫টি ডোজ দেওয়া হয়েছে। ফলে পৃথিবী এক বিপর্যয়কর নৈতিক ব্যর্থতার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে এবং এ ব্যর্থতার মূল্য বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোকে চুকাতে হবে।

 

মহাপরিচালক বলেন, এটা ভুল যে ধনী দেশগুলোর তরুণ, স্বাস্থ্যবান, ও প্রাপ্তবয়স্কদের দরিদ্র দেশগুলোর স্বাস্থ্যকর্মী এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের আগে টিকা দেওয়া হয়। ভবিষ্যতে প্রত্যেকের জন্য পর্যাপ্ত নভেল করোনাভাইরাস টিকা থাকবে, তবে এখন আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকা দেশসমূহকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এটি করা না হলে বিশ্বের দরিদ্রতম মহামারি আক্রান্ত দেশগুলো অনেক পিছিয়ে পড়বে। যা মানবতা ও অর্থনীতির জন্য আরও দুর্ভোগের কারণ হবে। তাই সব দেশকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তোলতে হবে।

 

তিনি বলেন, “হু’র সব সদস্য রাষ্ট্রের জন্য বর্তমান চ্যালেঞ্জ হল আগামি ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের আগেই প্রতিটি দেশে টিকা দান শুরু করা। আমি আশা করি এটি সম্ভব হবে।”

 

তিনি আরও বলেন, সম্মেলনটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে। সংস্থার মহামারি মোকাবিলার প্রস্তুতি এবং প্রতিক্রিয়া সম্পর্কিত স্বাধীন প্যানেলের জমা দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনসহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাজেট, অ-সংক্রামক রোগ, মৌখিক স্বাস্থ্য, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধ, জরায়ুর ক্যান্সার নির্মূল, রোগীর সুরক্ষা ইত্যাদি বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে এ সম্মেলনে।

 

মহাপরিচালক সংস্থার অর্থায়ন সংস্কারের কথাও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। বর্তমানে এর  বাজেটের কেবলমাত্র ১৭শতাংশ আসে সম্পূর্ণ অনুমানযোগ্য উত্স থেকে, যা সংস্থার কাজকে অনেক সমস্যায় ফেলে। তাই নভেল করোনাভাইরাস মহামারি

 

থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি শক্তিশালী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গড়ে তোলা এখস সময়ের দাবি।

 

 

তিনি বলেন, হুর সদস্য দেশগুলো বিশ্বাস করে যে একে সেরা সংস্থা হিসেবে গড়ে তোলার অন্যতম বড় বাধা হলো টেকসই এবং অনুমানযোগ্য অর্থায়নের অভাব। তাই সদস্য দেশগুলো একে শক্তিশালী করার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। (জিনিয়া/এনাম/শুয়েই)