জানুয়ারি ১৮: গত ১৫ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা মন্ত্রী আ্যলেক্স এজার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর এ পদত্যাগ আগামী ২০ জানুয়ারি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথ গ্রহণের দিন কার্যকর হবে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর। এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে বলে সবাই আশঙ্কা করছে।
চলুন, আমরা দেশটির করোনা পরিস্থিতির দিকে তাকাই।
যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পরিসংখ্যান মতে, বেইজিং সময় আজ (সোমবার) সকাল ১০টা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত রোগীর মোট সংখ্যা ২,৪৪,৮২,০৫০জন, আর মারা গেছেন মোট ৪,০৭,২০২জন।
গত ডিসেম্বর থেকে দেশটিতে প্রায় প্রতিদিনই নতুন করে সনাক্ত রোগীর সংখ্যা আগের দিনের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ওয়াশিংটন পোস্ট গত ১৬ জানুয়ারি জানিয়েছে যে, গত এক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন নতুন করে ২লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি রোগী সনাক্ত হয়। আর প্রতিদিন নতুন করে মারা যান প্রায় ৩,৩০০জন।
ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লসএঞ্জেলস এলাকায় প্রতি ৮মিনিটে একজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া, বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের চিকিত্সা ব্যবস্থা ব্যাপক চাপের মুখে পড়েছে। এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১০টি অঙ্গরাজ্যে ৭৬জন নতুন প্রজাতির করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
শুধু কোভিড-১৯ মহামারির সংকট নয়। যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বে সংকটও তীব্রতর হয়ে ওঠেছে। কোভিড-১৯ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রহণ করা লকডাউন ব্যবস্থায় অর্থনৈতিক মন্দা বেড়েই চলছে।
মার্কিন শ্রম মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, গত সপ্তাহে দেশটিতে ৯.৬৫লাখ মানুষ প্রথম বারের মতো প্রণোদনার জন্য আবেদন করেছেন, যা গত বছরের আগস্ট মাসের পর সর্বোচ্চ। গত ডিসেম্বর মাসে মালিকরা ১.৪লাখ কর্মসংস্থান বন্ধ করে দিয়েছে। এতে প্রতিফলিত হয়ে যে, ২০২০ সালের গ্রীষ্মকালে যে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রবণতা দেখা দিয়েছিল, তা বন্ধ হয়ে গেছে এবং আরও আশঙ্কাজনক মন্দের দিকে যাচ্ছে।
কোভিড-১৯ মহামারি ও বেকারত্বের দ্বৈত সংকট মোকাবিলা করতে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত ১৪ জানুয়ারি ১.৯ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রণোদনা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন। তবে, এ বিশাল পরিমাণের প্রণোদনা পরিকল্পনার সঙ্গে একমত হতে পারে নি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন দল।
ওয়াশিংটন পোস্টের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সংসদে ড্যামোক্রেটরা সুসংহত হলেও বাইডেনের এ প্রস্তাব পাশ করা সহজ হবে না। কারণ বেশ কয়েকজন সিনেটর সম্প্রতি প্রকাশ্যে সরকারের আর্থিক ঘাটতি এবং ঋণ বাড়ানোর বিরোধিতা করেছেন। তাই প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রণোদনা প্রস্তাব বাস্তবায়নে সফল হতে পারবেন কি না, তা বলার সময় এখনও আসে নি। (রুবি/এনাম)