জানুয়ারি ১৫: চীনের সাধারণ শুল্ক প্রশাসন গতকাল (বৃহস্পতিবার) সেদেশের ২০২০ সালের বিদেশি বাণিজ্যের উপাত্ত বিষয়ক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এতে দেখা যায় যে, গোটা বছরে চীনের আমদানি ও রাপ্তানির মোট পরিমাণ ইতিহাসে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পরিমাণ অনেক হ্রাস পেয়েছে। তাই এ খেত্রে চীনের এ অর্জন খুব সহজ ছিল না।
চীন নিজের উন্নয়নের পাশাপাশি বৈশ্বিক শিল্প ও সরবরাহ চেইনের পূনরুদ্ধারকে শক্ত হাতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
২০২০ সালে চীন তার মহামারী কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং অর্থনীতি ও উতপাদন পূনরুদ্ধার করেছে। বছরের প্রথম প্রান্তিকে বড় আকারের হ্রাস হওয়া সত্বেও চীন শিগগিরই তা পূনরুদ্ধার করতে পেরেছে। ফলে দেশের আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পেতে থাকে।
তথ্যানুসারে, গোটা বছরে দেশের আমদানি ও রপ্তানির মোট পরিমাণ ছিল ৩২.২৬ ট্রিলিয়ন ইউয়ান। যা ২০১৯ সালের চেয়ে ১.৯শতাংশ বেশি। এভাবেই বিশ্বের একমাত্র বড় অর্থনীতি হিসেবে চীন ২০২০ সালে তার বাণিজ্যের ইতিবাচক বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করার গৌরব অর্জন করেছে।
বৈশ্বিক বাজারে ‘চীনে উতপাদিত’ পণ্যের চাহিদা ক্রমশ বেড়েই চলছে। বিশেষ করে কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রতিরোধ সামগ্রীর রপ্তানি দ্রুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চীনের সরকারি উপাত্ত অনুসারে, ২০২০ সালে চীনের বুনন শিল্প, চিকিতসা সরঞ্জাম, ও ওষুদ রপ্তানির পরিমাণ ৩১শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে গত বছরের মার্চ থেকে শেষ পর্যন্ত, চীন মোট ২২৪.২ বিলিয়ন মাস্ক রপ্তানি করেছে। তার মানে চীন নিজের জনগণ ছাড়াও বিশ্বের প্রত্যেক মানুষকে প্রায় ৪০টি করে মাস্ক প্রদান করেছে।
এছাড়া, ২০২০ সালে চীনের লেপটপ, টেবলেট কম্পিউটারসহ অন্যান্য গৃহসামগ্রীর রপ্তানি ২২.১ শতাংশ বেড়েছে। এতে বৈশ্বিক প্রতিরোধ সামগ্রীর সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। পাশাপাশি মহামারীতে লকডাউনের সময়ে বিশ্ববাসীর বাসায় থেকে চাকরি করা ও আনলাইনে কেনাকাটা করার চাহিদাও সন্তোষজনক হারে মিটিয়েছে চীন। ঠিক এভাবেই বৈশ্বিক মহামারী প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে চীন।
আমদানির খেত্রেও চীন তার বৃহৎ বাজারকে বিশ্বের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। ফলে ২০২০ সালে চীন বিদেশ থেকে অনেক আমদানি করে। বিশেষ করে চীনের গম, ও মাংসসহ কৃষি পণ্যের আমাদানির পরিমাণ পৃথকভাবে ২৮ শতাংশ ও ৬০.৪ শতংশ বৃদ্ধি পায়।
চীন দৃঢ়ভাবে অর্থনৈতিক বিশ্বায়নকে সমথর্ন করে। বিশ্বের বড় বাণিজ্যিক দেশের ভূমিকা পালন করে চীন বিশ্বের অর্থনৈতিক পূনরুদ্ধারের জন্য প্রাণশক্তি যোগানো অব্যাহত রাখবে বলে সিআরআইয়ের এক সম্পাদকীয়তে বলা হয় ।
(আকাশ/এনাম/রুবি)