উহানে পৌঁছেছে হু’র বিশেষজ্ঞ দল, ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা করতে চায় চীন
2021-01-14 15:34:26

 

আজ (বৃহস্পতিবার) করোনাভাইরাসের উৎস খুঁজে পেতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) কর্তৃক গঠিত আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দল তাঁদের চীন সফর শুরু করেছেন।  চীনের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে করোনাভাইরাসের উত্সের সন্ধান নিয়ে যৌথ সহযোগিতা ও গবেষণা করবে দলটি।

 

চীনের নানা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ সম্প্রতি বলেন, চীন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদেরকে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা করতে এবং করোনাভাইরাসের উৎস খুঁজে পেতে অবদান রাখতে চায়। বিস্তারিত শুনবেন সংবাদ পর্যালোচনায়।

 

চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের মুখপাত্র ও প্রচারণা বিভাগের উপ প্রধান মি ফেং গতকাল (বুধবার) রাষ্ট্রীয় পরিষদের যৌথ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক এক সাংবাদিক সম্মেলনে দেশ বিদেশের তথ্যমাধ্যমকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশষেজ্ঞদের চীন সফরের বিস্তারিত কর্মসূচী তোলে ধরেন।

 

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দল বৃহস্পতিবার উহানে পৌঁছাবে এবং চীনের সংশ্লিষ্ট মহামারি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ম অনুযায়ী তাঁরা প্রথমে কোয়ারিন্টিনে থাকবেন। তাঁদের কোয়ারিন্টিইন চলাকালে চীনের বিজ্ঞানী ও চিকিত্সা বিশেষজ্ঞগণ ভিডিওর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে যোগাযোগ ও মত বিনিময় করবেন।

 

কিছু দিন আগে, চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের উপ পরিচালক ও টিকা গবেষণা বিষয়ক দায়িত্বশীলব্যক্তি চেং ই সিন বলেন, চীন সব সময় ভাইরাসের উৎসের সন্ধানের উপর গুরুত্ব দেয় এবং দায়িত্বশীলতার সঙ্গে এ বিষয়ে কাজ করেছে এবং করবে। উহানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞদের বৈজ্ঞানিক কার্যক্রমকে সহযোগিতা ও সমর্থন করে বেইজিং।

 

তিনি বলেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ দলের উহানে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান কাজকে সহযোগিতা ও সমর্থন করি আমরা। এর আগে দুপক্ষের মধ্যে ৪বারের মতো ভিডিও সম্মেলন হয়েছে এবং প্রতি  সম্মেলনে আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে গবেষণার প্রক্রিয়া, ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাঁদের কর্মসূচি নিয়ে দুপক্ষ আন্তরিকভাবে আলোচনা করেছি এবং মতৈক্যে পৌঁছেছি। আমরাও চীনা বিশেষজ্ঞ দল গঠন করেছি। এতে রয়েছেন ভাইরাস গবেষণা, মহামারিবিদ্যা, জনস্বাস্থ্যসহ নানা ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞগণ। তাঁরা হুর বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা করবেন।”

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দলটির এবারের সফর ও তাঁদের সহযোগিতার প্রতি চীনের মনোভাব তিনটি শব্দ দিয়ে বর্ণনা করেন চেং ই সিন, তা হল ইতিবাচক, উন্মুক্ত ও সমর্থন । তিনি বলেন, “আমরা ইতিবাচক, উন্মুক্ত ও সমর্থনের মন দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করব। আশা করি, তাঁদের সঙ্গে সহোগিতার মাধ্যমে আমরা আরও বেশি সহায়তা অর্জন করতে পারব। আমরা বিশ্বাস করি, বৈজ্ঞানিক নীতি অনুসারে কাজ করলে এ ভাইরাস সম্পর্কিত আমাদের জানাশোনা বৃদ্ধি পাবে।  এটাও একটি অবিচ্ছিন্ন উন্নতির প্রক্রিয়া। আরও বেশি বিশেষজ্ঞ আমাদের সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে গবেষণা করবেন আশা করি। ভাইরাসের প্রতি আমাদের জানাশোনা বেশি হলে, তা ভবিষ্যতে নতুন সংক্রামক রোগের নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের জন্য কাজে আসবে।”

 

এর আগে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র চাও লি চিয়ান বলেন, মহামারি শুরুর পর চীন উন্মুক্ত, স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল মনোভাব নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে বিশ্বব্যাপী ভাইরাসের উৎস অনুসন্ধান বিষয়ে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ও সহযোগিতা বজায় রেখেছে। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি ও জুলাই মাসে নিজ দেশের মহামারি মোকাবিলায় ব্যস্ত হলেও, চীন দুবারের মতো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞদেরকে চীনে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছে।পাশপাশি তাঁদের সঙ্গে ভিডিও ও সেনিমারসহ নানা পদ্ধতির মাধ্যমে যোগাযোগ করে আসছে। দুপক্ষ একসাথে করোনা ভাইরাসের উৎস সন্ধানে বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা ও পরিকল্পনার চীনা অংশ প্রণয়ন করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরাও চীনের মহামারি প্রতিরোধ ও ভাইরাসের উৎস সন্ধানের কাজকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

 

চাও লি চিয়ান বলেন, করোনাভাইরাসের উৎস খুঁজে বের করা একটি বৈজ্ঞানিক বিষয় এবং তার গবেষণায় বিশ্বের বিজ্ঞানীদের একসঙ্গে কাজ করা উচিৎ। মহামারির পরিস্থিতি পরিবর্তনের সাথে ভাইরাসের উৎস অনুসন্ধানের সঙ্গে জড়িত হবে নানা দেশ ও জায়গা। প্রয়োজন হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অন্য আরও দেশ ও অঞ্চল পরিদর্শন করবে। চীন এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সহযোগিত করে যাবে এবং বিশ্বে করোনাভাইরাসের উৎসের অনুসন্ধান কাজে নিজের অবদান রাখবে। (শিশির/এনাম/রুবি)