আকাশ ছুঁতে চাই – পাঠ ৪
2021-01-14 18:16:52

আকাশ ছুঁতে চাইপাঠ

 

আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে আমরা কথা বলি সেইসব নারীর সঙ্গে যারা তাদের জীবনে সাফল্য অর্জন করেছেন, অথবা সাফল্য পেতে চান। আমাদের জীবনেও আমরা স্পর্শ করতে চাই সাফল্যের সোনালি ভুবন।

 

** জীবন সংগ্রামে নারী: পিঠা বিক্রেতা নারীদের জীবন**

 

বাংলাদেশের শহরে বন্দরে এখন চলছে পিঠা মৌসুম। ঢাকা শহরের বিভিন্ন ফুটপাথে বসেছে পিঠার পসরা। সাধারণত এসব পিঠার দোকানি বেশির ভাগই প্রান্তিক নারী। জীবন ও জীবিকার দায়ে তারা বেছে নিয়েছেন পিঠা বিক্রির পেশা। আজকের জীবন সংগ্রামে নারী প্রতিবেদনে সিআরআই প্রতিবেদক তানজিদ বসুনিয়া জানাচ্ছেন পিঠা বিক্রেতা নারীদের জীবন সংগ্রামের কথা।

 

 

**বিশেষ সাক্ষাত্কার: রোকেয়া ইসলাম **

আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে আমাদের আজকের অতিথি রোকেয়া ইসলাম। তিনি বিশিষ্ট লেখক এবং সমাজকর্মী। তিনি উন্নয়ন সংগঠন প্রশিকার চেয়ার পারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আকাশ ছুঁতে চাই – পাঠ ৪_fororder_nv1

সিএমজি বাংলার ঢাকা স্টুডিওতে অতিথি রোকেয়া ইসলাম

 

 

 

**অসামান্য নারী: বিশ্বের প্রথম লাইসেন্সপ্রাপ্ত নারী বিমানচালক রেমন্ড ডি লারোশে**

 

আকাশ ছুঁতে চাই – পাঠ ৪_fororder_nv2

রেমন্ড ডি লারোশে

 

রেমন্ড ডি লারোশের জন্ম ১৮৮২ সালের ২২ অগাস্ট ফ্রান্সের প্যারিস শহরে একটি নিম্নবিত্ত পরিবারে। ছোটবেলা থেকেই তিনি খেলাধুলার প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। তিনি পেশাদারী মঞ্চের অভিনেত্রী ছিলেন। তার প্রকৃত নাম ছিল এলিসে রেমন্ড ডেরোশে। মঞ্চের জন্য তিনি রেমন্ড ডি লারোশে নাম গ্রহণ করেন। ১৯০৮ সালে ফ্রান্সে উইলবার রাইটের বিমান চালনা দেখে তিনি এর প্রতি আকৃষ্ট হন। তিনি তার কয়েকজন পাইলট বন্ধুর কাছ থেকে বিমান চালনা শেখেন। ১৯১০ সালের ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে তিনি ফ্রান্সের অ্যারো ক্লাব থেকে পাইলট লাইসেন্স গ্রহণ করে বিশ্বের প্রথম লাইসেন্স প্রাপ্ত বিমান চালকের সম্মান লাভ করেন। তিনি ইউরোপের বিভিন্ন শহরে এয়ার শো দেখাতেন।

রাশিয়ার সেন্ট পির্টাসবুর্গে এয়ার শো দেখিয়ে তিনি জার নিকোলাসের প্রশংসা পান। ১৯১০ সালে জুলাই মাসে একটি প্রদর্শনীর সময় তার বিমান দুর্ঘটনায় পড়লে তিনি গুরুতর আহত হন। দুই বছর পর তিনি সুস্থ হয়ে আবার বিমান চালনা শুরু করেন। চারঘন্টা একটানা বিমান চালিয়ে ১৯১৩ সালে ফ্রান্সের ফেমিনা কাপ জয় করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি সামরিক বাহিনীর গাড়ি চালক ছিলেন। ১৯১৯ সালের ১৮ জুলাই প্রথম নারী প্রশিক্ষক পাইলট হিসেবে বিমান চালনার সময় দুঘটনায় মাত্র ৩৬ বছর বয়সে এই সাহসী নারীর মৃত্যু হয়। রেমন্ড ডি লারোশেকে বিশ্বে নারী পাইলটদের পথিকৃৎ বিবেচনা করা হয়।

 

 

 

 

 

**বিশিষ্ট চীনা নারীর কথা : চীনের প্রথম নোবেলপ্রাপ্ত নারী থু ইয়ো ইয়ো **

আকাশ ছুঁতে চাই – পাঠ ৪_fororder_nv3

চীনের প্রথম নোবেলপ্রাপ্ত নারী থু ইয়ো ইয়ো

 

থু ইয়োইয়ো হলেন গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রথম নারী যিনি নোবেল পুরস্কার জয় করেছেন। তিনি শরীরতত্ব বা মেডিসিনে প্রথম নোবেলজয়ী চীনা নাগরিকও। ২০১৫ সালে তিনি শরীরতত্ব বা চিকিৎসাবিদ্যায় উইলিয়াম ক্যাম্পবেল ও সাতোশি ওমুরার সঙ্গে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

থু ইয়োইয়ো ১৯৩০ সালের ৩০ ডিসেম্বর চীনের চেচিয়াং প্রদেশের নিংবো শহরে জন্মগ্রহণ করেন। কিশোর বয়সে যক্ষ্মারোগে আক্রান্ত হওয়ায় তার লেখাপড়া বাধাগ্রস্ত হলেও তিনি সুস্থ হয়ে শিক্ষাজীবন চালিয়ে যান। ১৯৫১ থেকে ৫৫ সাল পর্যন্ত তিনি পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল স্কুল বা বেইজিং মেডিকেল কলেজে শিক্ষাগ্রহণ করেন। ১৯৫৫ সালে বেইজিং মেডিকেল ইউনিভারসিটি স্কুল অব ফার্মেসি থেকে গ্র্যাজুয়েশন করার পর চীনের ভেষজ চিকিৎসা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। চায়না একাডেমি অব ট্র্যাডিশনাল চায়নিজ মেডিকেল সায়েন্সের গবেষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।

থু ইয়োইয়ো মূলত ম্যালেরিয়া রোগের চিকিৎসাপদ্ধতি ও ওষুধ আবিষ্কারের গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি ম্যালেরিয়া চিকিৎসায় যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন।তার আবিষ্কারের ফলে দক্ষিণ চীন, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকায় লাখ লাখ মানুষের জীবন রক্ষা পেয়েছে।

তিনি ২০১১ সালে চিকিৎসাবিদ্যায় সম্মানজনক লাসকার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। ২০১৯ সালে তিনি চীনের অর্ডার অব রিপাবলিক সম্মাননা লাভ করেন। চীনের অনেক শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ও সম্মান তিনি পেয়েছেন। থু ইয়োইয়ো হলেন বিজ্ঞান গবেষণায় নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিত্ব যিনি বিশ্বজুড়ে নারীদের বিজ্ঞান গবেষণার অনুপ্রেরণাস্বরূপ।

 

প্রিয় শ্রোতা আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে পৌছে গেছি আমরা। অনুষ্ঠানটি কেমন লাগলো তা জানাতে ভুলবেন না কিন্তু। আমাদের অনুষ্ঠান আপনারা সবসময় শুনতে পাবেন, ঢাকায় এফ এম ১০২ এবং চট্টগ্রামে এফ এম ৯০ মেগাহার্টজে এবং অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজে। জেনে নিন আমাদের ইমেইল অ্যাডরেস, cmg.bangla@gmail.com

আজ এ পর্যন্তই। সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন। আবার কথা হবে। চাই চিয়েন।

 

অনুষ্ঠান লেখা, উপস্থাপনা ও গ্রন্থনা : শান্তা মারিয়া

ছবি: হোসনে মোবারক সৌরভ