বিদায়ী ২০২০ সালে চীনের দশ’টি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য
2021-01-07 16:09:42

 

১. চীনের মাথাপিছু জিডিপি ১০হাজার মার্কিন ডলার ছাড়াল

 

জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো গত ১৭ জানুয়ারিতে জানায় যে, ২০১৯ সালে চীনের মোট দেশজ উত্পাদন বা জিডিপি প্রায় ১শ’ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছিল। বার্ষিক বিনিময় হারে মাথাপিছু জিডিপি ছিল ১০হাজার ২৭৬ মার্কিন ডলার। মোট ১.৪বিলিয়ন জনসংখ্যার একটি দেশ হিসেবে মাথাপিছু জিডিপি ১০হাজারেরও বেশি হওয়াটা মানবজাতির উন্নয়ন ইতিহাসে একটি বিস্ময় বলা যায়।

 

বিদায়ী ২০২০ সালে চীনের দশ’টি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য_fororder_u=1910995666,1610979216&fm=26&gp=0

 

২. নতুন ঋণ-পত্র আইন আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর করা হলো চীনে

 

গত ১ মার্চ সংশোধিত ঋণ-পত্র আইন কার্যকর শুরু হয়েছে। চীনের পুঁজি বাজার নতুন ঋণ-পত্র আইন যুগে প্রবেশ করেছে। উন্নততর ঋণ-পত্র আইন চীনের পুঁজি বাজার বিপণন ও বৈধকরণের পথে একটি যুগান্তকারি পদক্ষেপ। ওই আইনের প্রবিধান অনুসারে গত ২৪ অগস্ট প্রথম দফায় ১৮টি প্রতিষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে জিইএম নিবন্ধন সম্পন্ন করে।

 

বিদায়ী ২০২০ সালে চীনের দশ’টি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য_fororder_src=http___5b0988e595225.cdn.sohucs.com_images_20200107_d4c63990c2604824ac456776cafbb87a.jpeg&refer=http___5b0988e595225.cdn.sohucs

 

৩. হাইনান অবাধ বাণিজ্য বন্দরের নির্মাণের গুরুত্বপূর্ন অগ্রগতি

 

গত ১ জুন ‘হাইনান অবাধ বাণিজ্য বন্দর নির্মাণ সংক্রান্ত সমষ্টিগত পরিকল্পনা’ প্রকাশিত হয়। পুরো হাইনান দ্বীপ ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উদারকরণ ও সুবিধাদি প্রদান করবে।

 

বিদায়ী ২০২০ সালে চীনের দশ’টি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য_fororder_0952293150408

 

৪. “দ্বৈত আবর্তন” ত্বরান্বিত করার জন্য নতুন উন্নয়ন কাঠামো নির্মাণের প্রস্তাব উত্থাপন করেছে সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটি

 

গত ১৪ মে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং প্রস্তাবিত দ্বৈত আবর্তন ব্যবস্থা বাস্তবায়নের উপর গ্রুত্বারুপ করা হয়। এর ফলে দেশটি তার উৎপাদিত পণ্য তার অভ্যন্তরীণ বাজারে বিক্রয় করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আরও জোরদার করবে। ফলে একই সঙ্গে চীন উৎপাদক এবং ভোক্তা দেশে পরিণত হবে।বহিঃবিশ্বের উপর তার পণ্যের নির্ভরশীলতা কমে আসবে। অতি অল্প সময়ে আত্মনির্ভরশীল দেশে পরিণত হেব চীন। কোন রকম বাণিজ্য-যুদ্ধ চীনের অর্থনৈতিক তেমন ক্ষতি করতে পারবে না।

 

৫. কেন্দ্রীয় সরকার একগুচ্ছ নীতির মাধ্যমে মহামারীকে পরাজিত করে

 

২০২০ সালে মহামারীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকর একগুচ্ছ নীতি বাস্তবায়ন করে। এপ্রিল মাসে চীনের গণব্যাংক মাঝারি ও ছোট ব্যাংকসমূহের জন্য প্রয়োজনীয় রিজার্ভ কর্তনের সিন্ধান্ত নেয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আর্থিক সংস্থাসমূহের অতিরিক্ত আমানত জমার হার হ্রাস করেছে। ফলে অর্থনৈতিক খাত দ্রুত মহামারির আগের অবস্থায় ফিরে আসে।

 

৬. রাষ্ট্রায়ত্ত্ব শিল্পপ্রতিষ্ঠান সংস্কারের তিনবছর মেয়াদি কার্যক্রম গৃহীত

 

গত ৩০ জুন সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সামগ্রিক সংস্কার গভীরতর কমিশনের ১৪তম অধিবেশনে ‘রাষ্ট্রায়ত্ত্ব শিল্পপ্রতিষ্ঠান সংস্কারের তিনবছর কার্যক্রম (২০২০-২০২২সাল)’ গৃহীত হয়েছে। পরবর্তী ৩ বছরকে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব শিল্পপ্রতিষ্ঠান সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এতে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রতি সিপিসি’র সার্বিক নেতৃত্ব, মৌলিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি অবিচল থাকার উপর গুরুত্বারুপ করা হয়েছে।  সেসঙ্গে তাদেরকে সমাজতান্ত্রিক বাজার অর্থনীতির সংস্কারের প্রতি অবিচল থাকতে হবে। ওই তিন বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব অর্থনীতির প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষমতা, সৃজনশীলতা, নিয়ন্ত্রণ শক্তি, প্রভাবশক্তি এবং সংকট প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ানো হবে।

 

৭. চীন বিশ্বের একমাত্র ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির অর্থনীতি

 

কোভিড-১৯ মহামারী চীনের অর্থনীতির ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলেছে। বছরের প্রথম তিনমাসে জিডিপ আগের বছরের তুলনায় ৬.৮ শতাংশ কম ছিল। তবে দ্বিতীয় তিনমাসে মহামারী প্রতিরোধ করার পাশাপাশি উত্পাদন পুনরুদ্ধার করে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মহামারির আগের অবস্থায়  ফিরে আসে। ফলে চীন সারা বিশ্বে একমাত্র ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির দেশ হওয়ার গৌরব অর্জন করে।

 

৮. সিপিসি’র ১৯তম কেন্দ্রীয় কমিটির পঞ্চম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনা, ও ২০৩৫ সালের দীর্ঘ মেয়াদী লক্ষ্য নির্ধারণ

 

সিপিসির অধিবেশনটি ২৬ থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়। অধিবেশনে সিপিসি’র জাতীয় অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়ন সংক্রান্ত চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনা এবং ২০৩৫ সালের দীর্ঘ মেয়াদী লক্ষ্য প্রণয়নের প্রস্তাব” গৃহীত হয়। প্রস্তাবে আগামী ৫ বছরে চীনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের নীলনকশা প্রনয়ণ করা হয়।

 

৯. অতি দরিদ্র্য জনসংখ্যাকে দারিদ্র্যমুক্ত করা

 

গত এক দশকের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে চীন সময়মতো দারিদ্র্যমুক্তির লক্ষ্য অর্জন করেছে। প্রায় ১০০ মিলিয়ন দরিদ্র্য মানুষেকে চরম দারিদ্র্যতা থেকে মুক্ত করেছে।

 

বিদায়ী ২০২০ সালে চীনের দশ’টি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য_fororder_src=http___x0.ifengimg.com_res_2020_EDDD3EBE7FC2B4AF770BFF7E0E48902017D1A3BC_size123_w1080_h679.jpeg&refer=http___x0.ifengimg

 

১০. যুক্তরাষ্ট্রের চাপানো বাণিজ্য-যুদ্ধ সত্বেও চীনের আমদানি-রপ্তানিতে ইতিহাস সৃষ্টি

 

টিকটক ও উইচ্যাট বন্ধ করা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগ করে হুয়াওয়েই’র চিপসেট সরবরাহ চেইন পর্যন্ত বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যাকে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো বাণিজ্য-যুদ্ধ নামে অভিহিত করে আসছে। কিন্তু সে যুদ্ধে চীন জয় লাভ করেছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চীনের আমদানি-রপ্তানির মোট পরিমাণ ছিল ২৯.০৪ট্রিয়িয়ন ইউয়ান এবং এটি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১.৮শতাংশ বেশি।