চীনের নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ির বাজার উন্নয়নের নতুন সুযোগ প্রসঙ্গে
2021-01-07 16:00:09

চীনের নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ির বাজার উন্নয়নের নতুন সুযোগ প্রসঙ্গে_fororder_v2_7062adcf673641daa1826527f4ae59d8_img_000

জানুয়ারি ৭: চীনা বাজারে টেসলার নতুন মডেলের গাড়ির দাম ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এর মধ্যে দুটি নতুন মডেলের নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ির দাম মার্কিন বাজারের চেয়েও কম। এতে চীনে টেসলার গাড়ি বিক্রি বাড়ছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, চীনা বাজারে টেসলার বিনিয়োগ-পরিকল্পনা থেকে প্রমাণিত হচ্ছে যে, চীনের নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ির বাজার খুব আকর্ষণীয়।

২০২১ সালের প্রথম দিন টেসলা চীনের বাজারে দুটি নতুন মডেলের নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ি নিয়ে আসে। দুটি মডেলই উত্পাদিত হচ্ছে চীনে। একটি মডেলের দাম ৩.৩৯৯ লাখ ইউয়ান এবং অন্যটির দাম ৩.৬৯৯ লাখ ইউয়ান। আগে এই দুটি মডেলের গাড়ি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করতে যথাক্রমে ১.৪৮১ ও ১.৬৫১ লাখ ইউয়ান বেশি খরচ পড়তো।

আসলে টেসলার গাড়ির দাম কমানোর বিষয়টি এবারই প্রথম ঘটেছে, তা নয়। এর আগে টেসলার মূল মডেলের গাড়ির দামও চীনে কমানো হয়েছে একাধিকবার। এ সম্পর্কে নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ির প্রতিষ্ঠান চংহাই বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানির সিইও সং স্যিং হাই বলেন, চীনের নিজস্ব নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ি-শিল্পের দ্রুত উন্নয়নের কারণে, টেসলা গাড়ির দাম কয়েক ধাপে হ্রাস করতে বাধ্য হয়েছে। তিনি বলেন,

“চীনে উত্পাদিত নতুন জ্বালানিচালিত চীনা গাড়ি বিক্রির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। চীনে উত্পাদিত গাড়ির মান টেসলার চেয়ে কম না। সেজন্য টেসলাকে বিক্রি বাড়াতে দাম কমাতে হয়েছে।”

সং স্যিং হাই মনে করেন, টেসলা চীনের বাজারকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এর মানে চীনের নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ির বাজার আকর্ষণীয়। টেসলার সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে কোম্পানির গাড়ি বিক্রির সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশই বিক্রি হবে চীনের বাজারে। পাশাপাশি, কোনো কোনো বহুজাতিক গাড়ি কোম্পানি চীনের নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ির বাজারে বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করছে। এ সম্পর্কে সং স্যিং হাই বলেন,

“বিএমডাব্লিউ, মার্সিডিজ বেঞ্জ ও অডিসহ বিভিন্ন উচ্চমানের গাড়ি কোম্পানি বৈদ্যুতিক গাড়ি উত্পাদন করে থাকে। এসব বহুজাতিক কোম্পানি ২০২২ সালে দশ ধরণের বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারে আনবে। মার্সিডিজ বেঞ্জ চীনে একক মালিকানায় কারখানাও নির্মাণ করতে যাচ্ছে।”

বর্তমানে চীনের নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ির বাজার দ্রুত উন্নত হচ্ছে। একজন ভোক্তা বলেন,

“বৈদ্যুতিক গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা ভাল। আমার মনে হয়, গ্যাসচালিত গাড়ির সঙ্গে এর কোনো পার্থক্য নেই। এখন যেকোনো জায়গায় চার্জিংয়ের ব্যবস্থা আছে। খুবই সুবিধাজনক। বিশেষ করে, নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ির খরচ কম। প্রতি ১০০ কিলোমিটার যেতে মাত্র ৫ ইউয়ানের বিদ্যুত লাগে। বৈদ্যুতিক গাড়ি পরিবেশবান্ধবও বটে। সেজন্য আমি বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনেছি।”

চীনের নতুন প্রকাশিত ‘নতুন জ্বালানিচালিত গাড়িশিল্প উন্নয়ন পরিকল্পনা (২০২১-২০৩৫)’ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে চীনে নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ির বিক্রি বেড়ে দাঁড়াবে মোট বিক্রিত গাড়ির ২৫ শতাংশে। ২০৩৫ সালে চীনে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত সকল এলাকা বৈদ্যুতিক গাড়ির আওতায় আসবে। তখন সেসব জায়গায় সনাতন জ্বালানিচালিত কোনো গাড়ি চলবে না। সং বলেন, চীনের নিজের নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ি-প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত প্রাপ্ত সুযোগ কাজে লাগিয়ে নব্যতাপ্রবর্তন জোরদার করা এবং উত্পাদন-খরচ কমিয়ে নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ি-বাজারে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করা। তিনি বলেন,

“চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ভাল সেবা দিতে হবে ও গাড়ির দাম কমাতে হবে। ভোক্তাদের চাহিদা বৃদ্ধি পেলে বাজারের আকারও বাড়বে। এ ছাড়া, তখন বিভিন্ন ধরণের গাড়ি উত্পাদন করতে হবে। গাড়ি-প্রযুক্তি খাতে সংস্কারও জোরদার করতে হবে, যাতে একটি ইতিবাচক উন্নয়ন-পরিবেশ গড়ে তোলা যায়।” (ছাই/আলিম/ওয়াং হাইমান)