ব্যবসাপাতি --- তৃতীয় পর্ব
2021-01-07 20:26:11

বিশ্বব্যবস্থা সচল রাখতে অর্থনীতি, ক্ষুধা-দারিদ্র্য দূর করে সমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মাণে অর্থনীতি। অর্থনীতি হয়ে উঠছে রাজনীতির হাতিয়ার, কূটনীতির মূলমন্ত্র আর স্বকিয়তার রক্ষাকবচ। এই অর্থনীতির নানা সমাচার নিয়ে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সাপ্তাহিক আয়োজন ব্যবসাপাতি।

 ‘ব্যবসাপাতি’র আজকের আয়োজনে আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি সাজিদ রাজু। দেশ-বিদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতির নানা বিষয় নিয়ে আপনাদের জন্য থাকছে বিশেষ প্রতিবেদন। প্রতি পর্বেই থাকছে অর্থ-বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত অতিথির সাক্ষাতকার।
আজ আমারা কথা বলবো করোনায় গেল এক বছরের অর্থনৈতিক সমাচার নিয়ে। কি কি চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় কি করণীয়? এ নিয়ে থাকবে বিশেষ প্রতিবেদন। জানাবো বিশ্বের নানা প্রান্তের বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর, তুলে ধরবো অর্থনীতির নানা সমীকরণ।
এই অনুষ্ঠান আপনারা শুনতে পাবেন ঢাকায় এফএম ১০২ এবং চট্টগ্রামে এফএম ৯০ মেগাহার্টজ-এ। শুরুতেই জানাচ্ছি বাণিজ্য-অর্থনীতির কিছু গুরুত্বপূর্ণ খবর। 
## এ বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ১.৬ শতাংশ, 
     ভারতের মাইনাস ৫.৪ 
করোনা মহামারীতে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের অর্থনীতি সংকুচিত হলেও বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে প্রবৃদ্ধির ইতিবাচক ধারা বজায় থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। 
ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্ট নামের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ শতাংশ। তবে সংস্থাটি বলছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ১ দশমিক ৬ শতাংশ। 
এদিকে, দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের জিডিপি পূর্বাভাসে বলা হয়, এ বছর ভারত, পাকিস্তান ও ভূটানের প্রবৃদ্ধি চলে যাবে ঋণাত্মক ধারায়। ভারতের প্রবৃদ্ধি হবে মাইনাস ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি মাইনাস দশমিক ৫ শতাংশ এবং ভূটানের মাইনাস দশমিক ৭ শতাংশে নেমে যাবে।
অন্যদিকে, ইতিবাচক ধারায় থাকবে মালদ্বীপ, আফগানিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার প্রবৃদ্ধি। মালদ্বীপে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৫ শতাংশ, আফগানিস্তানে ২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শ্রীলংকার জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ।

## চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭.৯ শতাংশ
এবছর চীনের প্রবৃদ্ধি ৭.৯ শতাংশে পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। মঙ্গলবার প্রকাশিত ‘২০২১ সালের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা শীর্ষক’ এক বিবৃতিতে বৈশ্বিক অর্থলগ্নিকারী এ সংস্থা বলেছে, অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি এবং করোনামহামারি কাটিয়ে দ্রুত উৎপাদন ও রপ্তানিতে ফিরে আসার ফলে এ প্রবৃদ্ধি হবে। 
এর আগে গেল অক্টোবরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল –আইএমএফ পূর্বাভাস দেয় যে, বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র চীনই ২০২০ সালে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরেছে। এরই প্রেক্ষাপটে চলতি বছর দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। 

## ৬ মাসের মধ্যে আসছে বাংলাদেশি করোনা টিকা ‘বঙ্গভ্যাক্স’
ঢাকা, জানুয়ারি ৭, সিএমজি বাংলা: আগামী ৬ মাসের মধ্যেই বাজারে আসার সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশেী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক উদ্ভাবিত করোনা টিকা ‘বঙ্গভ্যাক্স’। বৃহস্পতিবার চীন আন্তর্জাতিক বেতার –িসিআরআই বাংলাকে এ কথা জানিয়েছেন গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান ডা. আসিফ মাহমুদ। 
এক টেলিফোন স্বাক্ষাতকারে ডা. আসিফ মাহমুদ বলেন, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য টিকার যে ডোজ দরকার তা উৎপাদনের অনুমতি মিলেছে। এর পরবর্তী ধাপই মানুষের শরীরে টিকার পরীক্ষামূলক পয়োগ। তিন ধাপের এই পরীক্ষায় ফল ভালো আসলেই পরবর্তী সাধারণ মানুষের জন্য উৎপাদন শুরু হবে। মানুষের শরীরে তিন ধাপের এই পরীক্ষা শেষ করে সবশেষ কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত মোট ৬ মাস সময় লাগবেও বলে জানান তিনি। 
টিকা তৈরির যত প্রযুক্তি আছে তার মধ্যে সবচেয়ে সেরা এমআরএনএ বা ম্যাসেঞ্জার রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড টেকনোলজি ব্যবহার করে এই টিকা তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে বিশ্বের যে কোন টিকার গুণগতমানের সমতুল্য হবে এ টিকা। 
দামের ব্যাপারে তিনি জানান, সরকারের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে এক যোগে যেহেতু টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হবে তাই দামের ব্যাপার কোন সমস্যা হবে না। কিভাবে এ টিকা পাওয়া যাবে তাও সরকার ঠিক করবে বলেও জানান তিনি। 

## প্রান্তিক মানুষের করোনা যুদ্ধ: প্রথম পর্ব
প্রায় এক বছর ধরে করোনা মহামারি অতিক্রম করছে বাংলাদেশ। কোভিড-১৯ এর ভয়াল থাবার আচড় লেগেছে সব শ্রেণীপেশার মানুষের গায়ে। প্রান্তিক মানুষ থেকে উদ্যোক্তা, ডাক্তার-সাংবাদিক-পুলিশ-ব্যাংকারসহ ফ্রন্টলাইনে থাকা পেশাজীবিরা। গেল এক বছর কেমন গেল নানা পেশাজীবী মানুষের, তার খবর থাকছে এবার। চার পর্বের ধারাবাহিকের আজ প্রথম পর্বে থাকছে প্রান্তিক মানুষের সংগ্রামের কথা। সাজিদ রাজু’র প্রতিবেদন। 

ইয়াসমিন। আগারগাঁও এর বিএনপি বস্তির পাশের চা দোকানি। গেল কয়েক বছর ধরেই ছোট এই দোকান থেকে আয়ের টাকায় চালান ৫ সদস্যের সংসার। 

চা খেতে খেতে কথা হয় তার সঙ্গে। করোনার প্রথম ধাক্কায় লকডাউনে ছিলো বিএনপি বস্তি। পুরো পরিবার নিয়ে তিনি ছিলেন গৃহবন্দি। তিন মাসে মাত্র দুইবার সহযোগিতা পেয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন বছরে তার স্বপ্ন সন্তানদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলা। 

করোনা কষ্টের সীমা রাখেনি আরো বহু প্রান্তিক মানুষের। কেউ হারিয়েছেন একমাত্র আয়ের উৎস চাকরি।  পেশা বদল করেছেন অনেকে। 

ঢাকায় তিন যুগ ধরে রিক্সা চালিয়ে আয় উপার্জন করা এই প্রবীণের কণ্ঠেও হারানোর কষ্ট। তবুও নতুন বছরে প্রত্যাশার স্বপ্ন বোনেন তারা।  

এরই মধ্যে করোনার টিকার সন্ধ্যান মিলেছে, কোন কোন দেশে শুরু হয়েছে প্রয়োগও। নতুন বছরে করোনা সংকট কাটিয়ে নতুন দিনের প্রত্যাশায় থাকা প্রান্তিক মানুষের এতোটুকু স্বপ্ন পূরণ হবে তো? 

##বিশেষ প্রতিবেদন: 
দেশের মাটিতে করোনা সংকটের দশম মাসেও দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশের তালিকায় বাংলাদেশ। সরকারি একটি অস্থায়ী হিসেব, গেল অর্থবছরেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের বেশি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নানা সূচকে সুখবর থাকলেও করোনাকালের অর্থনীতিতে প্রান্তিক ও সাধারণের দুঃখগাথা অনেক। সামনের ধাক্কা সামাল দেওয়ার পুরো ব্যাপারটিই নির্ভর করছে ভ্যাকসিন কার্যক্রমের ওপর মত তাদের। আজহার লিমনের রিপোর্ট।
গেল বছরের মার্চের শুরুর দিকে দেশের মাটিতে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার খবরে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশ জুড়ে। ঘনবসতির এ জনপদ কী করে উচ্চ সংক্রমাক এ রোগ সামাল দেবে তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তিত ছিলো সরকারি বেসরকারি সব বিভাগই। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঐ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদক সানজিদা সুমি। বলছিলেন, করোনা সংকট কেটে না গেলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে ঐসময় যতটা উদ্বেগ ছিলো, ততটা এখন নেই।
সানজিদা সুমি বলছিলেন, বলা যায় উদ্বেগটা শুধু রোগ নিয়ে ছিলো না, উদ্বেগ ছিলো জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ দরিদ্র, প্রান্তিক, তাদের জীবনযাত্রা কী হবে, এটাও একটা উদ্বেবেগের ব্যাপার ছিলো। কারণ তখনই কিন্তু আমরা বিভিন্ন দেশের লকডাউন, শাটডাউনের খবরগুলো পাচ্ছিলাম।

করোনা মহামারিতে বলা যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রান্তিক ও খেটে খাওয়া মানুষ। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের হিসেবে শুধুমাত্র এপ্রিল থেকে জুলাই মাসের মধ্যে দারিদ্র্যের হার বেড়ে ১৯ থেকে বেড়ে ২৯ শতাংশে পৌছেঁছে। নতুন করে গরিব হয়েছেন কমবেশি দেড় কোটি মানুষ। গৃহবন্দি সময়টাতে বন্ধ হয়ে যায় কলকারখানা, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম।

এমন পরিস্থিতিতেও কীভাবে করোনাকালীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে মূল্যায়ণ করছেন অর্থনীতিবিদরা? পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট এর নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মানসুর বলছেন, অর্থব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক নানা খবর থাকলেও দুর্বলতাও অনেক। আর গেল অর্থবছরের জন্য সরকারের হিসেব করা ৫ দশমিক দুই চার শতাংশের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখাটাকেও দুরুহ বলছেন তিনি। 

ব্যবসাপাতি --- তৃতীয় পর্ব_fororder_1

 
আহসান এইচ মানসুর, নির্বাহী পরিচালক
পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট -পিআরআই

নাগরিকেরা কতটা ভালো আছে এর ওপর এশীয় উন্নয়নের ব্যাংকের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১০০ তে ৪৩ পয়েন্ট পেয়েছে বাংলাদেশ। যদিও অন্যান্য বিভিন্ন সূচকেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কথা বলছে বিশ্ব অর্থনৈতিক সংস্থাগুলো। তবে এই দুই বিশ্লেষক মনে করে, বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়টি নির্ভর করছে টিকা কার্যক্রমের দ্রুততার ওপর।

চলতি অর্থবছরে ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলো সরকার। আর গেল অর্থবছরগুলোতেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি অর্জনের হার ছিলো ৭ থেকে ৮ শতাংশ।

## সাক্ষাত্কার:
করোনার অভিঘাতের মধ্য দিয়েই শুরু হয়ে গেল ২০২১ সাল। এরই মধ্যে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। থমকে যাওয়া প্রবৃদ্ধি, নিম্নমূখী রফতানির চিত্র, নতুন করে কোটি মানুষের দরিদ্র হওয়াসহ শঙ্কা জাগিয়েছে অর্থনীতির নানা সূচকের নিচে নেমে যাওয়া। আবার রেমিট্যান্স প্রবাহের গতি বৃদ্ধি ও রিজার্ভের নতুন নতুন রেকর্ড আশা জাগিয়েছে। এসব নানা বিষয় নিয়ে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে কথা বলেছেন অর্থনীতিবিদ ও বেসরকারি সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। 


 

ব্যবসাপাতি --- তৃতীয় পর্ব_fororder_2


## চীনের দারিদ্র্য বিমোচনের গল্প##
সিনচিয়াং এর মরুভূমিতে দারিদ্র্য দূর হয়েছে যেভাবে
চীনের গোবি মরুভূমি। মরুর কঠিন বুকে সংগ্রামী জীবনে স্বচ্ছলতার সুবাতাস বইয়ে দিয়েছে চীন সরকারের নানা কর্মসূচি। স্থানীয় চাহিদা মাথায় রেখে গড়ে তোলা হয়েছে শিল্পকারখানা। সিনচিয়াং এর মুসলিম অধ্যুসিত এ অঞ্চলে সরকারের এসব কার্যক্রম হয়েছে দারিদ্র্য বিমোচনের উদাহরণ। সাজিদ রাজু’র প্রতিবেদন।
শীতে ধবধবে সাদা বরফে ছেয়ে যায় বিস্তীর্ণ বালুকা প্রান্তর। বিশাল প্রান্তর ভেদ করে লাল সূর্য ওঠে জনপদ আলো করে। বলছি উইগুর স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল সিনচিয়াং এর মরু এলাকা ফুহাই কাউন্টির কথা। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের বেশিরভাগ জীবিকার জন্য লালন-পালন করে উট। কাজাখ জাতিগোষ্ঠীর প্রায় প্রতি বাড়িতেই আছে উট। এখানকার উটের দুধও খুব বিখ্যাত। 

উটের লালন-পালন ও খাবারের জন্য বাসিন্দাদের নির্ভর করতে হয় গোবি মরুভূমির উপর। উন্মুক্ত মরুর বুকে জন্মানো কাটা জাতীয় গাছের পাতা ও বাকল খেতে চষে বেড়ায় উটের পাল। প্রতি পাল উট দেখাশোনা করতে ঘোড়ার পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়ায় রাখালেরা।  জীবিকার জন্যও এদের নির্ভরতা গোবি আর উটের খামারের উপরই। 
খামারি মুরজাবেক টাপি বলছিলেন, অন্য পশু লালন পালন করলে যেখানে বছরে একবার বিক্রি করে নগদ অর্থ পাওয়া যায়, সেখানে খামার থেকে আদের আয় হয় প্রতিদিনই। তিনি বলছিলেন, ২০০৮ সালে চেইচিয়াং এর এক উদ্যোক্তা এখান থেকে উটের দুধ কেনা শুরু করে। তখন প্রতি কেজি দুধ বিক্রি করে কমপক্ষে ১০ ইউয়ান করে পাওয়া যেতো। এই দামে একটা উটের দুধ বিক্রি করে দৈনিক ৩০ ইউয়ান উপার্জন হতো তার। 

মুরজাবেক টাপি বলেন, তখন থেকেই কিছু মানুষ উটের খামার করা শুরু করে। তার নিজের এখন ১০টি উট আছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিন ৩০০ ইউয়ান করে মাসে অন্তত ১০ হাজার ইউয়ান আয় হয় তার। 

খামারিদের সহায়তার জন্য এখানে গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কিছু ক্রয় দুগ্ধকেন্দ্র ও কারখানা। মরুভূমির বহুদূরের বালুপথ অতিক্রম করে দুধ কেনার গাড়ি পৌঁছে যায় বাড়ি বাড়ি, খামারে খামারে। দুধ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ব্যাপারে খামারিদের নানা পরামর্শ দেন কারখানার কর্মীরা। এর ফলে খুব সহজেই দুধ বিক্রি করে মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করতে পারছেন খামারিরা। 

“ উটের খামার থেকে অনেক আয় করা যায়, তাই অন্য কাজ বাদ দিয়ে শুধু খামারেই মনোযোগ দিয়েছি।  এখানে এখন একটি কারখানাও স্থাপন করা হয়েছে, তারা দুধ কেনে। প্রতিদিন ওই কারখানায় দুধ বিক্রি করি। এখন আমার মেয়ে সাংহাই এর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পড়ছে। আর আমার ছোট ছেলেটি কারিগরি স্কুলে পড়ে। তাদের প্রত্যেককে মাসে অন্তত ১ হাজার ইউয়ান করে দিতে হয়।“ বলছিলেন আরেক খামারি। 
বেসরকারি কোম্পানিগুলো স্থানীয় জনপদের উন্নয়নে কাজ করছে। বাড়ছে কর্মসংস্থান। মানুষের আয় বেড়েছে, পরিবর্তন এসেছে জীবন যাত্রার মানের। 

এই এলাকায় কারখানা স্থাপন করা ওয়াং ইউয়ান বায়োলজিক্যাল টেকনোলজি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লিউ হানফু বলছিলেন, এখানকার অর্থনীতির চিত্র বদলে যাওয়ার অভিজ্ঞতা। 

তিনি বলেন, “কাজাখরা উট লালনপালন করলেও ভালো দামে বেচতে পারতো না। ব্যাপারটা এমন যে সোনার পাত্র নিয়ে ভিক্ষা করার মতো। দীর্ঘ মেয়াদে দারিদ্র্য বিমোচন নির্ভর করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আর শিল্প উন্নয়নের উপর। দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব কেবল তাদের নিজেদের প্রচেষ্টায়।“ 
এসব শিল্প কারখানা এরই মধ্যে খামারিদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। স্থানীয় উৎপাদনের সাথে সঙ্গতি রেখে গড়ে তোলা শিল্পকারকানার মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের এই উদাহরণ নজির হতে পারে যে কোন দেশের জন্য। 

আপনার যে কোন পরামর্শ পাঠাতে পারেন আমাদের কাছে। চীন আন্তর্জাতিক বেতার –সিআরআই বাংলা’র ফেসবুক পাতা ও ইউটিউব লিঙ্কে গিয়ে আপনার মন্তব্য করতে পারেন। আজ এ পর্যন্তই। আগামী পর্বে আবারো কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সে পর্যন্ত সুস্থ্য থাকুন, শুভকামনা সবাইকে।