বিদেশি সংস্থাগুলি চীনে ব্যবসায়ের আরও সুযোগ অন্বেষণ করছে: সম্পাদকীয়
2021-01-06 14:55:41

জানুয়ারি ৬: চীনে মহামারী চলাকালেও বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বড় অর্থনীতিগুলোর মধ্যে এমনটা বিরল। ২০২০ সালে চীনে বিদেশি অর্থের আসল ব্যবহার ১৪,০০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে, যা একটি নতুন রেকর্ড। চীনে বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার বলছেন, চীন নতুন উন্নয়ন-কাঠামো গড়ে তুলছে ও বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ বাড়াচ্ছে। এ অবস্থায় দেশটিতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসার সুযোগ আরও বাড়ছে।

‘২০২০ সালে আমরা চীনে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়েছি এবং গবেষণাকেন্দ্র নির্মাণ করেছি’—বললেন জার্মানির নর-ব্রেমসি (KNORR-BREMSE) রেলপথ গ্রুপের চীনা অংশের নির্বাহী পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপক হান চু জুন। তিনি বলেন, চীনে মহামারী মোকাবিলায় মহাসাফল্য অর্জিত হয়েছে। দেশটির অর্থনীতি দ্রুত পুনরুদ্ধার হয়েছে। এটি বৈশ্বিক অর্থনীতির উন্নয়নে প্রয়োজনীয় চালিকাশক্তি যুগিয়েছে এবং চীনে বিনিয়োগ বাড়াতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও উত্সাহিত করছে।

চীনের তৃতীয় আন্তর্জাতিক আমদানি মেলায় নর-ব্রেমসি গ্রুপের রেলগাড়ি ডিজিটাইজিং পণ্য, নতুন প্রজন্মের ইঞ্জিন এবং ধুলো অপসারণ, জীবাণুমুক্তকরণ, অ্যান্টি-ভাইরাস এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম প্রদর্শিত হয়। হান বলেন, চীনের পরিবহন অবকাঠামো ব্যবস্থার অনেক উন্নতি ঘটেছে। দ্রুতগতির রেলপথ ও শহুরে রেলপরিবহনের দিক দিয়ে চীন বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে। নর-ব্রেমসি গ্রুপ এতে বিরাট উন্নয়নের সুযোগ পেয়েছে। চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনায় চীন অবকাঠামো নির্মাণের নতুন প্রকল্প রাখবে। চীন পরিবহন খাতে শক্তিশালী দেশ হিসেবে গড়ে উঠছে। নর-ব্রেমসি গ্রুপ নিজের প্রযুক্তিগত সুবিধা নিয়ে চীনের রেলপরিবহন খাতে অংশ নেবে।

নিউজিল্যান্ডের দি ল্যান্ড দুগ্ধজাত কোম্পানির এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সিইও শেং ওয়েন হাও বলেন, চীনের উচ্চমানের বৈদেশিক উন্মুক্তকরণের জন্য, চীনে দি ল্যান্ডের রফতানিকৃত দুধের পরিমাণ সপ্তাহে ৩ হাজার থেকে বেড়ে ৮০ হাজার কনটেইনারে দাঁড়িয়েছে। ২০২০ সালের জুলাই মাসে কোম্পানিটি অনলাইনে প্রতি তিন মিনিটে ২৮ কনটেইনার দুধ বিক্রয় করেছে।

বাণিজ্যিক রিয়েল এস্টেট পরিষেবা ও বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান সিবিআরই’র (CBRE) চীনের গবেষণা বিভাগের পরিচালক স্যিয়ে ছেন বলেন, ২০২০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত চীনে বিদেশি অর্থের প্রকৃত ব্যবহার গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬.৩ শতাংশ বেশি ছিল। এর মধ্যে পরিষেবা শিল্পে বিদেশি অর্থের প্রকৃত ব্যবহার বৃদ্ধি পায় ১৬.১ শতাংশ। আর উচ্চপ্রযুক্তি পরিষেবা খাতে এ বৃদ্ধির হার ৩১.৬। এতে চীনা বাজারের বিরাট সুপ্তশক্তি প্রতিফলিত হয়। স্যিয়ে বলেন, তাঁর কোম্পানি ২০২০ সালে চীনে নতুন কার্যালয় ও কৌশলগত উপদেষ্টা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছে। কোম্পানিটি চীন সরকার ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে শহর উন্নয়নের কৌশল, ট্রাফিক ওরিয়েন্টেড উন্নয়ন ও শিল্পসম্পদ আমদানি খাতে পরিষেবা দিয়েছে।

ক্যানন (Canon) কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সিইও ওজাওয়া হিদেকি (Ozawa Hideki) মনে করেন, চীন সার্বিকভাবে বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগ আইন ও সংশ্লিষ্ট নিয়ম কার্যকর করার মাধ্যমে নতুন উন্নয়নের কাঠামো গড়ে তুলেছে। চীনে বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ বৃদ্ধির কারণে বিদেশি প্রতিষ্ঠাগুলো আরও ফেয়ার, স্বচ্ছ ও সুবিধাজনক পরিবেশে এদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে পারছে। তিনি বলেন, চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন-ধারণায় পরিবর্তন, ক্যাননের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। (ছাই/আলিম/ওয়াং হাইমান)