সংবাদ পর্যালোচনা নববর্ষের ছুটিতে সরগরম চীনা বাজার
2021-01-05 12:49:47

সংবাদ পর্যালোচনা নববর্ষের ছুটিতে সরগরম চীনা বাজার_fororder_0105shishi

জানুয়ারি ৫: ২০২১ সালের প্রথম তিন দিনের ছুটিতে চীনা বাজার ছিল সরগরম। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ধারাবাহিক ব্যবস্থা কার্যকর হওয়ার কারণে চীনা বাজার সমৃদ্ধ হয়েছে। অনুমান অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনাদের ভোগের পরিমাণ  ব্যাপকভাবে বাড়বে।

চীনে নববর্ষের ছুটি ছিল টানা তিন দিন। এসময় সিনেমার  টিকিট বিক্রি হয়েছে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি। এ ছাড়া, অন্যান্য পণ্যের ভোগও অনেক বেড়েছে।

মহামারী নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক সাফল্যের ইতিবাচক ফল হিসেবেই চীনা বাজার হয়ে ওঠে চাঙ্গা। হাইনান প্রদেশে নতুন প্রতিষ্ঠিত তিনটি শুল্কমুক্ত শপিং মলে পণ্য বিক্রয়ের পরিমাণ বেশি ছিল। এর মধ্যে কসমেটিক্স ও বিলাসদ্রব্য এবং বৈদ্যুতিন পণ্য বিক্রয়ের পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি।

নববর্ষের ছুটিতে সিনেমা হলগুলোতে লোকসমাগম হয়েছে গত বছরের তুলনায় বেশি। বছরের প্রথম তিন দিনে চীনের সিনেমা-শিল্পের বক্স অফিসের আয় ছিল প্রায় ১.৩ বিলিয়ন ইউয়ান আরএমবি, যা একটি রেকর্ড। এর মধ্যে শুধু পয়লা জানুয়ারি বক্স অফিসের আয় হয় ৬০ কোটি ইউয়ান। এটিও একটি রেকর্ড।

এদিকে, চীনের ব্যাংকিং ফেডারেশনের হিসেব অনুযায়ী, পয়লা জানুয়ারি চায়না ইউনিয়নপে কার্ডের মাধ্যমে আন্তঃব্যাংক লেনদেনের মোট পরিমাণ ছিল ৩৫৯.২ বিলিয়ন ইউয়ান, যা গতবছরের একই সময়ের প্রায় সমান। চেচিয়াং, শেনসি, কানসু ও কুইচৌয়েও ভোগ বেড়েছে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি।

এ সম্পর্কে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গবেষণা একাডেমি’র সংবহন ও ভোগ ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক গুয়ান লি স্যিন বলেন, “নববর্ষের ছুটিতে ভোক্তাদের আস্থা বৃদ্ধির প্রমাণ পাওয়া গেছে। উচ্চমানের ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভোগ বৃদ্ধির প্রয়োজন আছে। চীনে সেটা বাড়ছে। চীনের ভোগ-বাজার মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে উঠেছে।”

চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এর আগে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে বলা হয়, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চীনের জিডিপি-তে ভোগের অবদান ছিল গড়ে ৫৫ শতাংশেরও বেশি। ভোগ ছিল টানা ৬ বছর ধরে চীনা অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি।  

ত্রয়োদশ পাঁচসালা পরিকল্পনা বাস্তবায়নকালে চীনা অর্থনীতির দ্রুত রূপান্তর ঘটেছে। অনলাইন ও অফলাইন অর্থনীতির মধ্যে গভীর সমন্বয় সাধিত হয়েছে ও হচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি ও নতুন শিল্প অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে। অনলাইনে খুচরা বিক্রির দিক দিয়ে চীনের অবস্থান বর্তমানে বিশ্বে প্রথম।

চলতি বছরের নববর্ষের ছুটিতে বেইজিংয়ের অনেক প্রাচীন ব্রান্ড নিজেদের সুবিধা কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন পদ্ধতিতে ভোগের নতুন চাহিদা পূরণ করেছে। তারা অনলাইন ও অফলাইনে ব্যবসা করেছে। নববর্ষের ছুটিতে দাওস্যিয়াংছুন ও উইউথাই চা দোকানের বিক্রয়ের পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে যথাক্রমে ২১.৯ ও ১৩.৮ শতাংশ বেশি ছিল। গুয়ান লি স্যিন মনে করেন, বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক ব্যবস্থা গ্রহণের কারণে ভোগ-বাজার পুনরুদ্ধার হয়েছে। তিনি বলেন,

“বিভিন্ন স্থান ইতিবাচক ব্যবস্থা নিয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন প্রমোশনাল ক্রিয়াকলাপে অংশ নেয়। এর মাধ্যমে ভোক্তাদেরকে আকর্ষণ করা হয়। আমরা ভোগের সামর্থ্য বাড়ানো, ভোগের পরিবেশ উন্নয়ন, এবং সরবরাহের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য অব্যাহতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এটি কার্যকরভাবে ভোগ-জার পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করেছে।”

উল্লেখ্য, গত বছরের শেষ দিকে আয়োজিত চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মসম্মেলনে অব্যাহতভাবে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানোর কাজকে ২০২১ সালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। (ছাই/আলিম)