ডিসেম্বর ৩১: গতকাল (বৃহস্পতিবার) চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দেশের উপ-বাণিজ্যমন্ত্রী রেন হোং পিন জানান, ২০২১ সালের প্রথম তিন প্রান্তিকে চীনের আমদানি-রফতানি ছিল বিশ্বের মোট আমদানি-রফতানির ১৪.১ শতাংশ। আর সারা বছরে চীনের আমদানি-রফতানি গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বেড়ে ৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হতে পারে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক সম্মেলনে বলা হয়, আগামী বছর অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখার শর্তে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছর কঠিন পরিস্থিতিতেও চীনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে। উপ-বাণিজ্যমন্ত্রী রেন হোং পিন জানান, প্রথম তিন প্রান্তিকে চীনের পণ্য ও পরিষেবা রফতানির জিডিপিতে অবদান ছিল ১৯.৫ শতাংশ। আর এ খাত জিডিজির বৃদ্ধিতে ২ শতাংশ অবদান রেখেছে। তিনি বলেন,
(রি ১) ‘চলতি বছর চীনের আমদানি-রফতানি ৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে পারে। গত বছরের তুলনায় যা ২০ শতাংশ বেশি। চীন এখন বিশ্বের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক দেশ। গত বছরের তুলনায় চীনের আমদানি-রফতানি ১.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রথম তিন প্রান্তিকে আন্তর্জাতিক বাজারে চীনের রফতানি ও আমদানি পৃথকভাবে ১৫ শতাংশ ও ১২.১ শতাংশ বেড়েছে, যা ইতিহাসের নতুন রেকর্ড।’
তিনি আরও জানান, চলতি বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে চীনের আন্তর্জাতিক ই-কমার্স ১০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। বড় আকারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৫০০ ছাড়িয়েছে। আর বিদেশে চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্যগুদামের সংখ্যা ২০০০ ছাড়িয়েছে। অফ-শোর বাণিজ্যও দ্রুত উন্নত হচ্ছে। তা ছাড়া, চলতি বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে চীনের রফতানি বৃদ্ধি জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে ২৭.৮ শতাংশ অবদান রেখেছে। রেন হোং পিন বলেন,
(রি ২) ‘নতুন নিবন্ধিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান ১ লাখ ৮৪ হাজার ছাড়িয়েছে। কর্মসংস্থান স্থিতিশীল রাখায় ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা উন্নত যন্ত্রপাতি ও সাজ-সরঞ্জাম এবং গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানিসম্পদ সরবরাহ নিশ্চিত করতে, শিল্প সরবরাহ চেইনের স্থিতিশীল রাখতে, এবং জনগণের সুন্দর জীবনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। প্রথম তিন প্রান্তিকে বৈশ্বিক আমদানি খাতের প্রবৃদ্ধিতে চীনের অবদান ছিল ১৪.১ শতাংশ। মহামারী প্রতিরোধক ওষুধ ও টিকা রফতানি করে বিশ্বের মহামারী প্রতিরোধক কাজে নিজের দায়িত্ব পালন করেছে চীন।’
বিশ্লেষণ অনুযায়ী, চীনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য দ্রুত উন্নয়নের পেছনে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন এবং মহামারীর প্রতিরোধে অর্জিত সাফল্য কাজ করেছে। কিন্তু আগামী বছর আরও অনেক জটিল ও অস্থিতিশীল উপাদান দেখা যাবে। তাতে চীনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের স্থিতিশীল উন্নয়ন বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হবে। পরবর্তীতে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অব্যাহতভাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য উন্নয়নে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মান উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাবে। তিনি বলেন,
(রি ৩) ‘নতুন আন্তর্জাতিক ই-কমার্স পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার কাজ নিশ্চিত করা হবে। আন্তর্জাতিক স্মার্ট লজিস্টিক্স মঞ্চ আরও উন্নত করা হবে। অফশোর বাণিজ্যকেন্দ্র ও শহর নির্মাণ করতে হবে। বাণিজ্যের ডিজিটালাইজ এগিয়ে নিতে হবে। আন্তর্জাতিক হিসাব আরও সুবিধাজনক করে তোলা হবে। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজার বজায় রাখার পাশাপাশি আসিয়ানসহ নতুন বাজার উন্নয়ন করতে হবে। আমদানি মেলা, কুয়াংচৌ মেলা এবং পোশাক বাণিজ্য মেলা, ইত্যাদি আন্তর্জাতিক মেলা আরও সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে হবে। আরসিইপি’র মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উচ্চমানের উন্নয়ন বাস্তবায়ন করতে হবে।’ (স্বর্ণা/আলিম/ছাই)