‘কাঁচামাল শিল্প উন্নয়ন পরিকল্পনায়’ সবুজ ও নিম্ন-কার্বন লক্ষ্যমাত্রা
2021-12-30 15:42:57

ডিসেম্বর ৩০: পেট্রোকেমিক্যাল রাসায়নিক, ইস্পাত, ননফেরাস মেটালস, বিল্ডিং উপকরণ ইত্যাদি কাঁচামাল হলো একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি এবং গ্রিন-হাউস গ্যাস নিসরণের জন্য দায়ী অন্যতম মূল শিল্প। এসব শিল্পের সবুজ ও নিম্ন-কার্বন রূপান্তর খুব জরুরি। সম্প্রতি চীন সরকার ‘চতুদর্শ পাঁচসালা পরিকল্পনা’য় ‘কাঁচামাল শিল্প উন্নয়ন পরিকল্পনা’ প্রকাশ করে। এতে কাঁচামাল শিল্পের সবুজ উন্নয়নের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে।

‘ত্রয়োদশ পাঁচসালা পরিকল্পনা’ বাস্তবায়নকালে চীনের কাঁচামাল শিল্পের রূপান্তরের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। বড় ও মাঝারি আকারের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতিটন ইস্পাত উত্পাদনে শক্তি ব্যয় ২০১৫ সালের তুলনায় ৪.৭ শতাংশ কমেছে। এখন চীনে প্রতিটন অ্যালুমিনিয়াম উত্পাদনে বিদ্যুত খরচ হয় ১৩৫১০ কিলোওয়াট ঘন্টা, যা বিশ্বের গড় ব্যয়ের  চেয়ে ৬.৯ শতাংশ কম। আর প্রতিটন ইস্পাত উত্পাদনে সালফার-ডাই-অক্সাইড এবং নির্মাণ উপকরণের প্রতি ১০ হাজার ইউয়ান মূল্যের উত্পাদনে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণও ২০১৫ সালের তুলনায় যথাক্রমে ৪৬ ও ১৭ শতাংশ কমেছে।

চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৫ সাল পর্যন্ত চীনের কাঁচামাল শিল্প প্রাথমিকভাবে উচ্চ মান, বেশি মুনাফা, উত্তম বিন্যাস, বেশি সবুজ ও আরও নিরাপদ হবার লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে। সবুজায়নের দিকে ব্যাপকভাবে দৃষ্টিও নিবন্ধ রাখা হবে। শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কাঁচামাল শিল্প বিভাগের প্রধান ছেন খ্য লুং বলেন,

‘প্রতিটন ইস্পাত উত্পাদনে শক্তির ব্যয় ২ শতাংশ কমবে, সিমেন্ট পণ্যের প্রতিইউনিট ক্লিঙ্কার উত্পাদনে শক্তির ব্যয় ৩.৭ শতাংশ কমবে, এবং ইলেক্ট্রোলাইটিক অ্যালুমিনিয়ামের উত্পাদনে কার্বন নিঃসরণ ৫ শতাংশ কমবে। প্রধান শিল্পের প্রতি ইউনিট উত্পাদনে দূষিত পদার্থ নিঃসরণের পরিমাণ ও তীব্রতাও কমবে। শিল্পবর্জ্যের ব্যবহারও আরও উন্নত হবে।’

পরিকল্পনা অনুযায়ী, নিম্ন-কার্বন উত্পাদন পরীক্ষামুলক প্রকল্প চালু হবে। কাঠামোগত পরিবর্তন, প্রযুক্তিগত নব্যতাপ্রবর্তন, ব্যবস্থাপনা জোরদার করা, ইত্যাদির মাধ্যমে কাঁচামাল শিল্পে সবুজ ও নিম্ন-কার্বন নিঃসরণ বাস্তবায়ন করা হবে। বিস্তারিত পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে: শিল্পের কাঠামো সুবিন্যাস করা, শক্তিসাশ্রয় ও নিম্ন-কার্বন অভিযান চালানো, নিম্ন নিঃসরণ ও সবুজ উত্পাদন উন্নয়ন করা, এবং জ্বালানিসম্পদের ব্যবহার বাড়ানো। শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কাঁচামাল শিল্প বিভাগের উপ-প্রধান ছাং কুও উ বলেন,

‘নিম্ন-কার্বন নতুন কাঁচামাল শিল্প উন্নয়ন করা হবে এবং শিল্পের মূল্য ও পণ্যের সংযোজিত মূল্য বাড়ানো হবে। সবুজ ও নিম্ন-কার্বন প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির গবেষণা জোরদার করা হবে। উন্নত ও উপযুক্ত সবুজ ও নিম্ন-কার্বন প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির ব্যবহার ব্যাপকভাবে বাড়ানো হবে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো অব্যবহৃত তাপ ও শক্তি দিয়ে বিদ্যুৎ উত্পাদন করতে পারে। তা ছাড়া, সবুজ নকশা, সবুজ দক্ষতা, সবুজ উত্পাদন, ও সবুজ সরবরাহ চেইনের ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩৫ সালে চীন পরিণত হবে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামালের গবেষণা, উত্পাদন ও ব্যবহারের প্রথম সারির দেশ। কাঁচামাল ক্ষেত্রে চীনের সবুজ ও নিম্ন-কার্বন উন্নয়নের মান বিশ্বের প্রথম সারিতে থাকবে। (স্বর্ণা/আলিম/হাইমান)